ভাইকে যখন কবর দিলাম,
মনে হলো মৃতু্য একটা ভবিষ্যৎ কাল,
এখন নেই, কিন্তু থাকবে।
সন্ধ্যার সামান্য আগে
সাদা কাফনে মোড়া লাশটা নামলো
মাটির সুচারু রূপে কাটা শেষ আয়তক্ষেত্রে।
এই পথে একদিন আমাকেও যেতে হবে,
গোরস্তানের গাছগুলোর ছায়ার নিচে,
লাগোয়া পুকুরের স্নিগ্ধ জলরাশি!
একটা দশ বাই দশ ফুট ঘর আমার হোক,
বই পড়ার জন্য একটা নিচু সোফা,
একটা দেড়টনি এসি,
যেটা কোনোদিন চালাই না।
শীত লাগে বড্ড।
ছোট্ট স্নানঘরটা আমার হোক,
সাথে একটা গোসলের চৌবাচ্চা,
কুসুম কুসুম গরম জল,
সামান্য কিছু কেলী।
একটা স্মার্ট গানের ট্যাবলেট,
জোয়ান বায়েজের ট্রিলিং কণ্ঠ,
পঙ্কজ মলিস্নকের নাকি সুর,
চৌবাচ্চায় ডুব সাঁতারের চমৎকার ফেনিল ঢেউ,
স্ফীত উদর। কোথাও আটকাবে না চোখের পানি,
জলধারা শিখে গেছে শোক কীভাবে কাটিয়ে উঠতে হয়,
চোখের ওপরে একটি ক্ষত, শুকিয়ে উঠছে ক্রম।
পা ছড়িয়ে সোফায় এলিয়ে শরীর,
দেখছি ফখর জামান কিউইদের বল উড়িয়ে দিচ্ছে গ্যাস বেলুন,
বৌ পাশের সোফায় মোবাইল টিপতে নিমগ্ন।
ছোট্ট একটা স্মৃতি ছাড়পোকার মতো রক্ত চুষছে,
অসুখের কিছু ভয় সারা মেঝেতে হামাগুড়ি,
তাকিয়ে আছি পায়ের এক জোড়া স্যান্ডেল।
আমার কোনো জিনিস তেমন হারায় না,
না পায়ের স্যান্ডেল ত্রিশাল থেকে দশ বছর আগে,
না মেরুন টাইটা, পঁয়তালিস্নশ বছর বৌভাতের রাতে।
এইগুলি সব চলে যাবে,
আমাকে নিয়ে তোমাদের
স্মৃতিগুলোসহ, ভুল বললাম,
এইগুলি সব থাকবে,
শুধু আমি থাকব না,
যেভাবে থাকেনি ভাইটা।