শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

বৈদু্যতিক পাখা যেভাবে বাতাস দেয়

ম শেখ একেএম জাকারিয়া
  ১১ সেপ্টেম্বর ২০২১, ০০:০০

আমরা যখন বাহির থেকে এসেই ঘরের ভেতরে প্রবেশ করি, প্রচন্ড গরম থেকে নিজেকে রক্ষার জন্য বৈদু্যতিক পাখা ছেড়ে দিই; ঠিক তখন-ই খুব আরামদায়ক, ঠান্ডা বাতাস অনুভব করি। দেহে-প্রাণে সে সময় নির্মল আনন্দ খুঁজে পাই। কিছুক্ষণের জন্য ঘরটাকে বেহেশত মনে হয়। তিনপাখার চত্রম্নগতিতে পুরো শরীর একেবারে জুড়িয়ে যায়। স্বস্তির নিশ্বাস ফেলি সবাই। কিন্তু পাঠকরা, আপনারা কি জানেন, যে সময়ে ক্রকার অ্যান্ড কারাটস ইলেকট্রিক কোম্পানির চিফ ইঞ্জিনিয়ার, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের জগৎবিখ্যাত বিজ্ঞানী ডক্টর স্কিউলার হুইলার ১৮৮২ সালে বৈদু্যতিক পাখা আবিষ্কার করেন এর পরের বছরই অর্থাৎ ১৮৮৩ সালে বৈদু্যতিক পাখার উৎপাদন শুরু হয়? হয়তো সে কথা অনেকেই জানি না। সে সময়ে পাখাগুলো ছিল দুই বেস্নডওয়ালা টেবিলফ্যান। দুই বেস্নডওয়ালা টেবিলফ্যান ওই সময়ে খুবই লোকপ্রিয় ছিল। আবিষ্কারের পর দীর্ঘদিন অতিবাহিত হয় দুই পাখাওয়ালা টেবিলফ্যানে। এরপর ধীরে ধীরে প্রযুক্তি বিজ্ঞানের উন্নতি হতে থাকে। একসময় আবিষ্কার হয় ঝুলন্ত বা সিলিং ফ্যানের। বইপত্রাদি ঘেঁটে জানা যায়, প্রথম বিশ্বযুদ্ধের পরে চার পাখাওয়ালা ফ্যানের ব্যাপক প্রয়োগ শুরু হয়। গরমের দিনে সহজে আরাম অনুভব করা যায় বলে সবাই বৈদু্যতিক ফ্যানের ফ্যান হয়ে যায়। বৈদু্যতিক ফ্যান ছাড়া যেন মানুষ-জাতির চলেই না। অথচ এই বৈদু্যতিক পাখা ছোট্ট একটি মোটরের সাহায্যে ঘোরে। মোটর যখন ঘোরে তখন এর সঙ্গে যুক্ত স্টিলের বেস্নড বা পাখাগুলোও ঘুরতে থাকে। বৈদু্যতিক পাখা ঘোরার সঙ্গে সঙ্গে আমাদের দেহে ঠান্ডা ও আরামদায়ক বাতাসের স্পর্শ অনুভব করি। কিন্তু মজার ব্যাপার হচ্ছে, এই পাখাগুলো মোটেও বাতাস তৈরি করে না। এবার মনের ভেতরে প্রশ্ন জাগতে পারে, তবে এই বাতাস আমরা কীভাবে পাই? জানার কৌতূহল নিশ্চয়ই আরও বেড়ে গেছে? উত্তরটা বলেই দিই। আমরা সবাই বিদিত যে, এই জগৎ হাওয়ায় পরিপূর্ণ। বৈদু্যতিক পাখা শুধু হাওয়াকে একটু নেড়েচেড়ে দেয়। অর্থাৎ স্থির বায়ু যখন নড়াচড়া করতে শুরু করে, তখন-ই সে বায়ু আমাদের গায়ে এসে লাগে। ভালোভাবে একটু খেয়াল করলেই দেখবেন, পাখাগুলো নিচের দিকে একটু বাঁকানো থাকে আর ফ্যান সেদিকেই ঘোরে। যে কারণে পাখাগুলো ঘোরার সঙ্গে সঙ্গে নিম্নমুখিচাপ সৃষ্টি হয়। ফলে বাতাস উপরে না গিয়ে নিচের দিকে নেমে আসে। যদি পাখাগুলো উল্টোদিকে ঘোরে দেখা যাবে বাতাস নিচের দিক থেকে উপরের দিকে যাচ্ছে। আসল কাজটি করে থাকে ওই বাঁকানো পাখা বা বেস্নডগুলোই। আর এভাবেই বৈদু্যতিক পাখা গরমের দিনে বাতাস দিয়ে আমাদের মন ও শরীরকে সতেজ ও ফুরফুরে রাখে।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে