সোমবার, ২৯ এপ্রিল ২০২৪, ১৫ বৈশাখ ১৪৩১

গবেষণা, উদ্ভাবন মেলার আয়োজনে নতুন দিগন্ত

দেশ ও জাতি এগিয়ে যাওয়ার অন্যতম সোপান হলো গবেষণা, উদ্ভাবন ও উচ্চশিক্ষা। এইরূপ নতুন জ্ঞানের সন্ধানের নানা যাত্রায় বেরিয়ে আসে বৈশ্বিক সমস্যাগুলোর উপযুক্ত সমাধান, করণীয় এবং দিক-নির্দেশনা। তাই চট্টগ্রাম বিভাগের গবেষকদের মূল্যায়ন, সম্মাননা এবং বিভিন্ন গবেষণা প্রতিষ্ঠানের গবেষণাকর্ম জনসাধারণের সামনে উপস্থাপনের লক্ষ্যে, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় জামাল নজরুল ইসলাম গণিত ও ভৌতবিজ্ঞান গবেষণা কেন্দ্র এবং চিটাগাং ইউনিভার্সিটি রিসার্চ অ্যান্ড হায়ার স্টাডি সোসাইটি (সিইউআরএইচএস) যৌথ উদ্যোগে প্রথমবারের মতো আয়োজন করে চট্টগ্রাম গবেষণা, উদ্ভাবন ও প্রকাশনা মেলা ২০২৩। গবেষণা সংস্কৃতি জনপ্রিয় করার এই আয়োজনে অংশগ্রহণ করে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ৪০টি বিভাগ, ৩৫টি গবেষণাগার এবং চট্টগ্রাম বিভাগের ২০টি গবেষণা প্রতিষ্ঠান। আয়োজকদের একাংশের অভিজ্ঞতা ও অনুভূতি তুলে ধরছেন, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়, আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের শিক্ষার্থী আতহার নূর।
নতুনধারা
  ০৬ মে ২০২৩, ০০:০০

শক্তি ও সাহস দুটাই বেড়ে গেছে

মাহমুদ শরীফ

চিফ অব অপারেশন

এত বড় ইভেন্টে মনের মতো কাজ করার সুযোগটা আমার শক্তি ও সাহস দুটোকেই বাড়িয়ে দিয়েছে। লিডাররা যখন পস্ন্যানগুলো খুব সহজে বুঝতে শুরু করে, ইভেন্টের থিমের সঙ্গে আগের অভিজ্ঞতা সঙ্গে নিয়ে কাজে নেমে পড়লে কাজগুলো সহজ হয়ে যায়। বিভাগীয় এই গবেষণা মেলা গুছিয়ে আনা আমাদের জন্য সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ ছিল, যেহেতু ইভেন্টটা বিভাগকেন্দ্রিক ছিল। মেম্বাররা তাদের কাজগুলো নিজ দায়িত্বে আন্তরিকতার সঙ্গে শেষ করায়, কোনো চ্যালেঞ্জ আর চ্যালেঞ্জ মনে হয় নাই। আমাদের মূল লক্ষ্য ছিল আমাদের বাজেটের মধ্যে থেকেও যাতে আমরা সেরা একটা ফলাফল দেখাতে পারি, এমনকি আমরা নিজেদের পরিশ্রমের দিকে তাকাইনি একটি সদস্যও। ইভেন্টের আগের দিন রাতেও আমাদের সাধ্যমতো অনেকগুলো তাৎক্ষণিক পস্ন্যান নিয়েও কাজ করেছি, যা আমাদের ইভেন্টের বাড়তি মাত্রা যুক্ত করেছে। আমার মনে হয় এই মানসিকতাই আমাদের গবেষণা মেলাকে সফল করতে সাহায্য করেছে। মানুষে প্রতিক্রিয়াগুলো আমাদের নতুন চিন্তা নিয়ে কাজ করতে অনুপ্রাণিত করেছে এবং ভালোলাগা কাজ করছে।

আনন্দ ও উচ্ছ্বাস নিয়ে কাজ করেছি

তানজিনা আক্তার

চিফ অব হসপিটালিটি

গবেষণা মেলায় একটি গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করতে পেরে আমি খুবই আনন্দিত। আমাদের এই আয়োজনে অংশগ্রহণ করেছিলেন বিভিন্ন ল্যাবের দায়িত্বে থাকা শিক্ষকরা, চট্টগ্রাম বিভাগের বিভিন্ন গবেষণা প্রতিষ্ঠান থেকে গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিরা এবং অনেক তরুণ গবেষক শিক্ষার্থী। অংশগ্রহণকারীদের বিভিন্ন তথ্য প্রদান করেছিলাম সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহার করে, তখন বুঝতেই পারিনি কখন তাদের ভরসার জায়গাটি অর্জন করেছিলাম।

শিক্ষকসহ বিভিন্ন ক্যাটাগরির অংশগ্রহণকারীরা প্রায়ই আমাকে কল করতেন সময়ে অসময়ে যা কখনই বিরক্তির কারণ মনে হয়নি, বরং সব থেকে বেশি ভালো লেগেছিল যখন তারা মেলায় আমার সঙ্গে কথা বলেই চিনতে পারছিল। মূল অনুষ্ঠানের বিশেষ কিছু সেকশনে সব অতিথিরা যথাসময়ে ভেনু্যতে পৌঁছেছে কিনা, তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করা, স্টলে যারা ছিল তাদের সামগ্রিক অবস্থা পর্যবেক্ষণ করা, তাদের সুবিধা-অসুবিধা খোঁজ নেওয়া এবং যে কোনো অসুবিধা দ্রম্নত সমাধানে সংশ্লিষ্ট সদস্যদের সঙ্গে যোগাযোগ করা ইত্যাদি দায়িত্ব পালনে নিয়োজিত ছিলাম। সত্যি বলতে পুরোটা সময়জুড়ে আনন্দ ও উচ্ছ্বাস নিয়ে কাজ করেছি।

দায়িত্ব ও চ্যালেঞ্জ সম্পর্কে সতর্ক ছিলাম

নাজমুল হাসান রাকিব

হেড অব লজিস্টিক টিম

জামাল নজরুল ইসলাম জাতীয় তরুণ গবেষক সম্মেলনে লজিস্টিক টিমের একজন অভিজ্ঞ দায়িত্বশীল হিসেবে কাজ করার সুবাদে এবার প্রিয় ক্লাব সিইউআরএইচএস লজিস্টিক টিমের গুরুদায়িত্ব আমাকে দেয়। শুরু থেকেই আমি দায়িত্ব, পরিকল্পনা ও চ্যালেঞ্জগুলো সম্পর্কে সতর্ক ছিলাম। তাই প্রথমেই ফেস্টিভালের জন্য কি কি সরঞ্জামাদি দরকার হতে পারে তার সম্ভাব্য লিস্ট তৈরি করে ফেলি। আমাদের সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ ছিল বিভিন্ন টিমের প্রয়োজনীয় চাহিদাগুলো যথাসময়ে লজিস্টিক করা। এবং আমরা করতে পেরেছি, টিমের বিভিন্ন চাহিদা যথাসময়ে ক্যাম্পাসে পৌঁছে দেওয়া থেকে শুরু করে, অনুষ্ঠান শেষে বিশাল জিনিসপত্র গুছিয়ে বুঝিয়ে দেওয়ার মতো কঠিন কাজ সফলতার সঙ্গে করেছি। আমি মনে করি, লজিস্টিক টিম একটা প্রোগ্রামের প্রাণ। আর একা হাতে কখনো এত কাজ সম্ভব হয় না। প্রীতম আর তন্ময় পূর্ব থেকে আমার সঙ্গে কাজে যুগপৎ সহযোগিতা করলেও এবারে লজিস্টিক টিমে নতুনভাবে যুক্ত হয় মাহাথির। এই তিন জনের কাজের প্রতি অগাধ প্রত্যয়ের কারণে সময়ের আগেই আমরা লজিস্টিক টিমের কাজ সম্পন্ন করে বাকি টিমগুলোতে অবদান রাখতে পারি। তাদের প্রতি কৃতজ্ঞতা ও ভালোবাসা।

স্বপ্ন বাস্তবায়নে অদম্য অগ্রযাত্রা

মুনতাসির ফাহিম

চিফ অব ফুড ম্যানেজমেন্ট

চিটাগং ইউনিভার্সিটি রিসার্চ অ্যান্ড হায়ার স্টাডি সোসাইটি তরুণ প্রজন্ম তথা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের মধ্যে গবেষণায় উৎসাহ, গবেষণায় অংশগ্রহণ ও গবেষণা সচেতনতা সম্পর্কিত ভিন্নধর্মী আয়োজনের একটি অনন্য উদাহরণ হলো চট্টগ্রাম রিসার্চ ফেস্টিভ্যাল-২০২৩। গত বছর তরুণ গবেষক সম্মেলন আয়োজনের পর খুব ইম্প্যাক্টফুল একটা প্রোগ্রাম আয়োজনের আগ্রহ থেকেই এই মেলার আয়োজনের পরিকল্পনা নেওয়া হয়। ফেস্টিভ্যালের পুরোটা সময় কঠিন চ্যালেঞ্জের মধ্যদিয়ে যাচ্ছিলাম পুরো সিইউআরএইচএস টিম। রিসার্চ ফেস্টিভ্যালে অন্যতম একটি চ্যালেঞ্জিং একটি দায়িত্ব ছিল ফুড ম্যানেজমেন্ট। প্রায় ১০০০ মানুষের (৮০ স্টল, ২৫০ গবেষক, সাংবাদিক, আমন্ত্রিত অতিথি এবং অন্যান্য) জন্য খাবার ম্যানেজমেন্ট করা বেশ কষ্টসাধ্য ছিল।

সিইউআরএইচএসের স্মার্ট এবং দক্ষ ফুড টিমের নিরলস ও নিদ্রাহীন পরিশ্রম, কাজে একাগ্রতা, টাইম ম্যানেজমেন্ট এবং সঠিক গাইডলাইনের ফলে একটি সফল স্মরণীয় ফেস্টিভ্যাল উপহার

দিতে পেরেছি।

মেজবানের নয় গবেষণার চট্টগ্রাম

মো. শফিউজ্জামান শিহাব

চিফ অব প্রেস

যখন সকালে পত্রিকার পাতা খুলে কিংবা অনলাইন বা টিভিতে চট্টগ্রাম রিসার্চ ফেস্টিভ্যালের সফল আয়োজন নিয়ে নিউজ দেখি তখন সত্যি নিজেকে অনেকে সৌভাগ্যবান মনে হয় যে, আমিও এই আয়োজনের অংশ ছিলাম। চট্টগ্রাম শব্দটি শুনলেই সবাই দর্শনীয় স্থান, মেজবান এসব বিষয় কল্পনা করে। অথচ এখন চট্টগ্রাম গবেষণা, উদ্ভাবন ও প্রকাশনা কাজে ঈর্ষণীয়ভাবে এগিয়ে যাচ্ছে। প্রেস টিম একটি বিষয় মাথায় কাজ করেছে তা হলো প্রচারেই প্রসার। চবির এই আয়োজন যেন পুরো বাংলাদেশের কাছে পৌঁছানো যায়। শুরুতেই আমরা সবাইকে জানানোর জন্য এক প্রেস ব্রিফিং আয়োজন করি। সবসময় ভাবতাম কিরকম মিডিয়া কভারেজ আসতেছে আর কি করে বাড়ানো যায়। কিছু সীমাবদ্ধতা সত্ত্বেও প্রিন্ট মিডিয়া, টিভি মিডিয়া এবং অনলাইন মিডিয়ায় ব্যাপক সাড়া পেয়েছি। সর্বদা আন্তরিক সহযোগিতা পেয়েছি সাংবাদিক ভাই-বোনদের। তাদের সহযোগিতা আমাদের কার্যক্রমকে আরও প্রাণবন্ত করেছে। প্রেস টিম, সিইউআরএইচএসের সদস্যদের ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় অনুষ্ঠানটি সফলভাবে আয়োজন সম্ভব হয়েছে যা চিরস্মরণীয় হয়ে থাকবে।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে