রোববার, ২৮ এপ্রিল ২০২৪, ১৫ বৈশাখ ১৪৩১

সজলের পালে নতুন হাওয়া

তারার মেলা রিপোর্ট
  ০৪ জানুয়ারি ২০২৪, ০০:০০

দর্শকপ্রিয় অভিনেতা ও মডেল আব্দুন নূর সজল। যাকে বলা হয়ে থাকে ছোটপর্দার সুপারস্টার। তবে এই তারকা বড়পর্দাতেও যে নিজেকে অনন্য উচ্চতায় নিয়ে যেতে পারেন তা ২০২৩ সালের কাজ দিয়েই প্রমাণ করেছেন। এ বছরে ওটিটি এবং চলচ্চিত্র, দুই মাধ্যমেই বাজিমাত করেছেন জনপ্রিয় এই অভিনেতা। ছোট পর্দার এই 'লাভার বয়' ২০২৪ সালেও বেশকিছু ভালো কাজ নিয়ে দর্শকের সামনে আসছেন বলে জানালেন আব্দুন নূর সজল।

২০২৩ সালে আলোচিত দুই সিনেমার নায়ক ছিলেন সজল। নাদের চৌধুরীর 'জ্বীন' ও হৃদি হকের পরিচালনায় '১৯৭১ : সেই সব দিন'-এ নিজেকে তিনি নতুন ভাবে মেলে ধরতে সক্ষম হন। এ ছাড়া ওটিটির কাজেও বেশ প্রশংসিত হয়েছেন। ভিকি জাহেদের 'দ্য সাইলেন্স' ও বঙ্গবিডি প্রযোজিত সহিদ উন নবীর 'পাফ ড্যাডি' দারুণ সাড়া ফেলে।

সজল বলেন, 'দু'টি সিনেমাই দর্শকের কাছে প্রশংসিত হয়েছে। অভিনেতা হিসেবে এটা আমাকে বেশ আনন্দ দেয়। একই সঙ্গে ভালো কাজের জন্য উৎসাহিত হই। আমি স্রোতে গা ভাসিয়ে কিছু করতে চাই না। ক্যারিয়ারের শুরু থেকেই ভালোর সঙ্গে থেকেছি। নির্মাতারাও আমাকে নিয়ে সেভাবে ভালো কাজের সঙ্গে থাকার সুযোগ দিয়েছেন। আসছে নতুন বছরেও ভালো কিছু পাবে দর্শক।'

বিজ্ঞাপনের মডেল হওয়া থেকে শুরু করে নাটক, ওটিটি, সিনেমা সব মাধ্যমেই সমান বিচরণ রয়েছে আব্দুন নূর সজলের। শুধু তাই নয়, অনেকেরই অজানা আছে যে, তিনি ভালো ছবিও আঁকতে পারেন। সজল এমন এক অভিনেতা যার মুখে সব সময়েই এক চিলতে হলেও হাসি লেগেই থাকে। এমন মানুষ কী করে সব ধরনের চরিত্রে অভিনয় করতে পারেন এটা একটা বিস্ময়ই বৈকি। তবে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ব্যবসায় প্রশাসন বিদ্যায় উচ্চশিক্ষা লাভ করা এই সদা হাসি মুখের সজল একাধারে রোমান্টিক, কমেডি কিংবা সিরিয়াস গল্পের নাটকেও অনবদ্য অভিনয় করে দর্শকের মনে নিজের আসন গড়ে নিয়েছেন।

নিজের ক্যারিয়ার গড়ে তোলেন মূলত প্রথমে ছোট পর্দায় নিয়মিত কাজ করেই। প্যাকেজ নাটকে অভিনয়ের মধ্য দিয়ে ২০০৬ সালে ছোট পর্দায় যাত্রা শুরু করেন। সেই থেকে নিয়মিতভাবে টিভি নাটকে কাজ করে আসছেন। অভিনয় করেছেন সারিকা, জাকিয়া বারী মম, তিশা, মিম, সুমাইয়া শিমু, শখ, মেহজাবীন, বিন্দু ও অপি করিম থেকে শুরু করে নতুন অনেক তারকার সঙ্গেই। এখনও এগিয়ে চলেছেন। তার একটাই ইচ্ছে আজীবন অভিনয় করে যাওয়া। ছোটপর্দার এই দর্শকপ্রিয়তাকে কাজে লাগিয়ে এরপর তার সমসাময়িক অভিনেতাদের মতো তিনিও চলচ্চিত্রে পদার্পণ করেন। এখানেও নিজের অভিনয় প্রতিভার জানান দিতে সক্ষম হয়েছেন এই তারকা।

সজল অভিনীত প্রথম সিনেমা তন্ময় তানসেন পরিচালিত 'রান আউট'। এরপর বাণিজ্যিক ধারার আরও একটি নতুন ছবিতে অভিনয় করেছেন সজল। 'হারজিৎ' নামের এই ছবিটি পরিচালনা করেছেন বদিউল আলম খোকন। সর্বশেষ সজল অভিনয় করেছেন হৃদি হক পরিচালি '১৯৭১ সেইসব দিনগুলি' নামের একটি সিনেমায়। এর আগে গত ঈদে মুক্তি পেয়েছিল নাদের চৌধুরী পরিচালিত 'জ্বীন' সিনেমা। দুটি সিনেমাতেই সজলের অভিনয় দর্শকের ভালো লেগেছে। বিশেষ করে নাদের চৌধুরী পরিচালিত 'জ্বীন' সিনেমাটিতে সজলের অভিনয় দারুণ আলোচনায় এসেছে।

মূলত এই 'জ্বীন' ছবিটির মধ্য দিয়েই সজল জানান দিয়ে রাখেন চলচ্চিত্রেও তার অনেক দেওয়ার আছে। এর আগে চলচ্চিত্রে যেন সুবিধা করে উঠতে পারছিলেন না তিনি। এই সাফল্য তার প্রয়োজন ছিল এবং তা বড় দুঃসময়েই আসে। কারণ সম্প্রতি তিনি যেন নিজেকেই হারিয়ে খুঁজছিলেন। হালের ভিউ আর ট্রেন্ডিংয়ের যে বাজার, সেখানে খুব একটা আলোচনায় থাকেন না তিনি। তবে অভিজ্ঞতা যে সব সময়ই দামি, তা আরও একবার প্রমাণ করেন চলতি বছরের শুরুতে ওটিটি পস্ন্যাটফর্মে মুক্তি পাওয়া শিবলী চরিত্রে অভিনয় করা তার 'দ্য সাইলেন্স' মুক্তি পাওয়ার পর।

এই সাফল্যের ধারাবাহিকতায় বর্তমানে নাটকের চেয়ে চলচ্চিত্র ও ওয়েব মাধ্যমের কাজ নিয়েই বেশি ব্যস্ততা যাচ্ছে সজলের। সিনেমার পাশাপাশি ওটিটি পস্ন্যাটফর্মেও কাজ করছেন তিনি। সম্প্রতি আবু সাঈদের 'সংযোগ', জাহিদ হোসেনের 'সুবর্ণভূমি' সিনেমার কাজ শেষ করেছেন। সিনেমাগুলোতে ব্যতিক্রমী চরিত্রে তাকে দেখা যাবে বলে জানালেন আব্দুন নূর সজল। এ ছাড়াও মুশফিকুর রহমান মনজু ও সাহিদ উন নবীর 'পাফ ড্যাডি' ছবিতেও অভিনয় করেছেন তিনি। অবশ্য এটি ওটিটিতে মুক্তি পেলেও পরে আদালতের নির্দেশনার কারণে নামিয়ে ফেলতে হয়।

এ ছাড়া টিভি ধারাবাহিক নাটকের মধ্যে বিটিভিতে প্রচারিত এবং নাদের চৌধুরী নির্দেশিত, ইমদাদুল হক মিলন রচিত 'নায়কের নাম কবি'র মধ্য দিয়ে অর্ধ যুগ পর ধারাবাহিক নাটকে ফিরেন সজল। এতে তিনি একটি ধনাঢ্য পরিবারের ছেলে হিসেবে নাম ভূমিকায় অভিনয় করেছেন। সজলের ভাষ্যে, 'কথাসাহিত্যিক ইমদাদুল হক মিলনের লেখা আমার খুব পছন্দ। তার সংলাপ ভালো লাগে বলেই এই ধারাবাহিকটিতে অভিনয় করি।'

কিন্তু যে ছোটপর্দায় নিজের ক্যারিয়ার তৈরি করেছেন সেই ছোটপর্দায় অভিনয় আস্তে আস্তে কমিয়ে দেওয়ার কারণ কি জানতে চাইলে সজল বলেন, 'আসলে আমার কাছে মাধ্যম কোনো বড় ফ্যাক্ট নয়। বেশি কাজ করলেই দর্শক আমাকে মনে রাখবে, এ কথাও আমি বিশ্বাস করি না। সংখ্যা নয়, দর্শক মনে রাখে ভালো কাজ। যে ধরনের গল্প দর্শকের মনে দাগ কাটবে, তেমন কিছু নাটক, টেলিছবি বা চলচ্চিত্রে অভিনয় করতে চাই আমি। আমি হয়ত খুব মেধাবী নই- তবে আমি কিন্তু নিজের কাজের প্রতি যথেষ্ঠ আন্তরিক এবং পরিশ্রমী। আমি যে কোনো চ্যালেঞ্জিং চরিত্রের জন্যই প্রস্তুত।'

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে