শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

(সা.), (রা.), (রহ.) ও (আ.) শব্দগুলো কখন বলতে হয়?

যাযাদি ডেস্ক
  ০৯ জানুয়ারি ২০২৩, ১৪:৩১

নবী-রাসুলগণ আল্লাহ তায়ালার তাওহিদ, তার একত্ববাদ ও একনিষ্ঠ ধর্ম সম্পর্কে মানুষকে জানিয়েছেন। সাহাবায়ে কেরাম এমন সময়ে নবীজির কথা মেনে সত্য ধর্মকে বিশ্বাস করে ঈমান এনেছিলেন যখন আল্লাহর রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের ওপর অবর্তীণ ওহীকে অবিশ্বাস করে করেছিল তাকে দূরে ঠেলে দিয়েছিল কাফের মুশরিকেরা। সাহাবিরা শত প্রতিকূলতার মাঝেও আকড়ে ধরেছিলেন ইসলামকে। ইসলামের বার্তা ছড়িয়ে দিয়েছেন পরবর্তী যুগের মানুষের কাছে।

নবী-রাসুল, সাহাবায়ে কেরামের পর তাবেয়ী, তাবে-তাবেয়ী, দ্বীনদ্বার আলেম, বুজুর্গ ব্যক্তিরা একনিষ্ঠ ধর্ম ও আল্লাহ তায়ালার ওপর ঈমান, বিশ্বাস দৃঢ় রাখার দীক্ষা দিয়েছেন মানুষকে। এজন্য যুগে ত্যাগ-তিতিক্ষার নজির রেখে গেছেন তারা। তাদের কাছে প্রত্যেকেই ঋণী। তাদের জন্য দোয়া করা প্রত্যেক মুসলমানের একান্ত দায়িত্ব-কর্তব্য।

নবী-রাসুল, সাহাবায়ে কেরাম, তাবেয়ী, তাবে-তাবেয়ী, দ্বীনদ্বার আলেম, বুজুর্গ ব্যক্তিদের জন্য বিশেষ কিছু বাক্য ও পরিভাষা ব্যবহারের মাধ্যমে দোয়া করার রীতি চালু রয়েছে মুসলিমদের মাঝে। এই বাক্য ও পরিভাষাগুলোর যথাযথ ব্যবহার তুলে ধরা হল-

সা., স., দ.

এ শব্দগুলো সংক্ষেপের যে কোনো একটি লেখা হয় শেষ নবী হজরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের নামের পর। সা., স. অথবা দ. যেটাই লেখা থাকুক; পড়তে হবে- সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম। এর অর্থ, আল্লাহ তার (নবী মুহাম্মদ) ওপর রহমত ও শান্তি বর্ষণ করুক।

পরিভাষায় এ বাক্যের নাম দরুদ। তাই সংক্ষেপ করতে যেয়ে অনেক সময় ‘দ.’ লেখা হয়। আবার প্রথম বর্ণ ‘স’ হওয়ায় শব্দ সংক্ষেপ করে ‘সা.,’ কিংবা ‘স.’ লেখা হয়। তবে বেশ আগে ‘দ.’ লেখার প্রচলন থাকলেও বর্তমানে তা নেই বললেই চলে। এখন সবাই ‘সা.,’ অথবা ‘স.’ লেখে থাকেন।

তবে অভিজ্ঞ ইসলামি স্কলাররা এ বাক্যকে সংক্ষেপ করে লেখাকে পছন্দ করেন না। তারা সবসময় পূর্ণ বাক্য লেখার পক্ষপাতী।

আ.

এ শব্দসংক্ষেপ লেখা হয়ে থাকে শেষ নবী ব্যতীত অন্য সব নবীদের নামের পর। এর পূর্ণ রূপ হলো- ‘আলাইহিস সালাম। ’ অর্থ, তার ওপর শান্তি বর্ষিত হোক।

রা., রাযি., রাজি. ও রাদি.

এ শব্দগুলোর যে কোনোটি লেখা হয়- সাহাবিদের নামের পরে।

ইসলামের পরিভাষায় সাহাবি বলা হয়, যে ব্যক্তি ইসলাম গ্রহণের পর শেষ নবী মুহাম্মাদুর রাসূলুল্লাহ (সা.)-এর সান্নিধ্য লাভে ধন্য হয়েছেন এবং মুসলিম অবস্থায় মৃত্যুবরণ করেছেন। এ শব্দ সংক্ষেপগুলোর পূর্ণরূপ একবচন পুরুষের ক্ষেত্রে ‘রাযিয়াল্লাহু আনহু’, বহুবচন পুরুষের ক্ষেত্রে ‘রাযিয়াল্লাহু আনহুম’, একবচন মহিলার ক্ষেত্রে ‘রাযিয়াল্লাহু আনহা’, বহুবচন নারীর ক্ষেত্রে ‘রাযিয়াল্লাহু আনহুন্না’ এবং দ্বি-বচন পুরুষ-মহিলা উভয়ের ক্ষেত্রে ‘রাযিয়াল্লাহু আনহুমা। ’ পূর্ণ বাক্যের অর্থ হলো- আল্লাহ তার অথবা তাদের প্রতি সন্তুষ্ট হয়েছেন।

র., রহ.

র., রহ. শব্দ দু’টো সংক্ষেপ লেখা হয় নবী ও সাহাবি ব্যতীত বিশিষ্ট নেককার, পরহেজগার, মুত্তাকি মুসলিমদের মধ্যে যারা মারা গেছেন- তাদের নামের পর। পূর্ণ রূপ হলো-‘রাহমতুল্লাহি আলাইহি। ’ বাক্যটির অর্থ- তার ওপর আল্লাহর রহমত বর্ষিত হোক।

দা. বা., মু. আ., হাফি.

এ শব্দসংক্ষেপগুলো লেখা হয়- বিশিষ্ট নেককার, পরহেজগার মুত্তাক মুসলিমদের মধ্যে যারা জীবিত আছেন- তাদের নামের পর। দা. বা.-এর পূর্ণ উচ্চারণ হলো- ‘দামাত বারাকাতুহুম। ’ অর্থ- তার কল্যাণসমূহ স্থায়ী হোক।

মু. আ.-এর পূর্ণ উচ্চারণ হলো- ‘মুদ্দাযিল্লুহুল আলি। ’ অর্থ- তার মহান ছায়া আমার ওপর দীর্ঘ হোক। হাফি.-এর পূর্ণ উচ্চারণ হলো- ‘হাফিযাহুল্লাহ। ’ অর্থ- আল্লাহ তার হেফাজত করুক।

মাও.

শব্দটি সংক্ষেপ লেখা হয় কওমি মাদরাসা থেকে তাকমিল বা দাওরায়ে হাদিস উত্তীর্ণ হয়েছেন অথবা আলিয়া মাদরাসা থেকে কামিল পাশ করেছেন তাদের নামের পূর্বে। এর পূর্ণ উচ্চারণ হলো- ‘মাওলানা। ’ অর্থ- আমাদের কল্যাণকামী বন্ধু।

যাযাদি/ সোহেল

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে