বৃহস্পতিবার, ০২ মে ২০২৪, ১৯ বৈশাখ ১৪৩১

সব দিনের মধ্যে শ্রেষ্ঠ হল রমজানের জুমা

যাযাদি ডেস্ক
  ১৫ মার্চ ২০২৪, ১০:০৮
-ফাইল ছবি

এবারের রমজানের প্রথম জুমা আজ । বরকতময় জুমা। সওয়াবের বসন্তপ্রবাহ। জুমার দিনে সুরা কাহাফের তেলাওয়াত করা, দান-সদকা করা ও দরুদ শরিফের আমল করার কথা আছে। এ ছাড়াও দিনটির বিশেষ গুরুত্ব কোরআন হাদিসে এসেছে। পবিত্র কোরআনে আল্লাহতায়ালা বলেন, হে মুমিনরা! জুমার দিন যখন নামাজের আজান দেওয়া হয়, তখন তোমরা আল্লাহর স্মরণের দিকে এসো এবং বেচাকেনা বন্ধ করো, এটা তোমাদের জন্য উত্তম, যদি তোমরা বোঝ।

এরপর নামাজ শেষ হলে জমিনে ছড়িয়ে পড়ো, আল্লাহর অনুগ্রহ (জীবিকা) তালাশ করো এবং আল্লাহকে অধিক স্মরণ করো যাতে তোমরা সফলকাম হও। সূরা জুমা : ৯-১০ জুমার দিনের ফজিলত বিষয়ে আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণিত যে, রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, সকল দিনের মধ্যে শ্রেষ্ঠ দিন হলো জুমার দিন। এই দিনেই আদম (আলাইহিস সালাম)কে সৃষ্টি করা হয়েছে। এদিনেই তাকে জান্নাতে প্রবেশ করানো হয়েছে।

এই দিনেই তাকে জান্নাত থেকে বের করা হয়েছে। আর এই জুমার দিনেই কিয়ামত সংঘটিত হবে। বুখারি-১৫০২ আজ রোজার চতুর্থদিন। চারদিকে রহমতের উৎসব। রমজানের অবারিত রহমতে ভরে যাক আমাদের জীবন।

যে কোরআনের প্রেমময়তায় আজ রমজান রহমতে ভরপুর, কোরআনের মুগ্ধতায় লাইলাতুল কদর হাজার মাসের শ্রেষ্ঠ রাত! কোরআন এসেছিল বলে মক্কা-মদিনা পৃথিবীর মর্যাদাবান শহর! কোরআনের নবী হজরত মুহাম্মদ নবীদের সরদার! কোরআনের সেই প্রেম, মুগ্ধতা ও মর্যাদা আমাদের কতটা আলোকিত করেছে? মাস, রাত আর মক্কা-মদিনার মর্যাদা বাড়াতে কোরআন আসেনি পৃথিবীতে।

কোরআনে এসেছে মানুষের জীবন রাঙাতে। শুধু রাত শ্রেষ্ঠ হবে না; কোরআনের মানুষেরাও হবে আশরাফুল মাখলুকাত। পৃথিবীর শ্রেষ্ঠতম মানুষ। কোরআন সে তো আল্লাহ প্রেমের চিঠি। পাঠে পাঠে সজীব হয় দেহমন। জোগায় আত্মিক শক্তিও। প্রেমের চিঠি প্রসঙ্গে আল্লাহতায়ালাও বলেন, যারা ঈমানদার, তারা যখন আল্লাহর নাম নেয়, নরম হয় তাদের অন্তর। আর যখন তাদের সামনে কোরআন পাঠ করা হয়, তাদের ঈমান সজীব হয়ে ওঠে।

রোজার জুমায় মানুষের ঢল। কিয়ামুল লাইল বা শেষ রাতের তাহাজ্জুতেও মসজিদ প্রাণবন্ত থাকে। মসজিদমুখী মানুষেরা কোরআনের আলোয় জীবন রাঙাতে চায়। হেদায়াতের নেশায় ব্যাকুল মানুষেরা শুনতে চায় কুরআনের মর্মকথা। কোরআনের ইতিহাস ও গল্পে ফিরে যেতে চায় আগের নবী-রাসুলদের জীবনে।

আগে মসজিদে যাওয়ার সওয়াব রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, ‘যখন জুমার দিন আসে ফেরেশতারা মসজিদের দরজায় দাঁড়িয়ে প্রথম থেকে পর্যায়ক্রমে আগন্তুকদের নাম লিখতে থাকে। যে সবার আগে আসে সে ওই ব্যক্তির মতো যে একটি উট সদকা করে। তারপর যে আসে সে ওই ব্যক্তির মতো যে একটি গাভী সদকা করে। তারপর আগমনকারী মুরগি সদকাকারীর মতো। তারপর আগমনকারী একটি ডিম সদকাকারীর মতো। এরপর যখন ইমাম খুতবা দিতে বের হন, তখন ফেরেশতারা তাদের দফতর বন্ধ করে দেন এবং মনোযোগ দিয়ে খুতবা শুনতে থাকেন।’ (বুখারি, হাদিস, ৮৮২)

এক বছর নফল রোজা ও নামাজের সওয়াব আরেক হাদিসে হজরত আউস ইবনে আউস রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে বলতে শুনেছি, ‘যে ব্যক্তি জুমার দিন গোসল করবে (জুমার নামাজের পূর্বে স্ত্রী-সহবাস করে তাকেও গোসল করাবে) এবং নিজেও গোসল করবে অথবা উত্তমরূপে গোসল করবে। এরপর ওয়াক্ত হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে মসজিদে আসবে, আসার সময় হেঁটে আসবে, কোনো বাহনে চড়বে না, ইমামের কাছাকাছি বসবে, এরপর দুটি খুতবা মনোযোগ দিয়ে শুনবে এবং (খুতবার সময়) কোনো অনর্থক কাজকর্ম করবে না, সে মসজিদে আসার প্রতিটি পদক্ষেপে এক বছর নফল রোজা ও এক বছর নফল নামাজের সওয়াব পাবে।’ (আবু দাউদ, হাদিস,৩৪৫)

দোয়া কবুল জাবের ইবনে আবদুল্লাহ রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত হাদিসে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, জুমার দিনে এমন একটা সময়ে রয়েছে, যাতে আল্লাহর বান্দা আল্লাহর কাছে যা চায় আল্লাহ তাই দেন। অতএব তোমরা আছরের শেষ সময়ে তা তালাস করো। (আবু দাউদ, হাদিস : ১০৪৮, নাসাঈ, হাদিস : ১৩৮৯)

যাযাদি/ এস

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে