বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১
নারায়ণগঞ্জের আলোচিত সাব্বির হত্যা মামলা

শীর্ষ সন্ত্রাসী জাকির খানের আইনজীবীদের তৈমূরকে জেরা

নারায়ণগঞ্জ প্রতিনিধি
  ০৮ মে ২০২৩, ০৯:১৪

নারায়ণগঞ্জের আলোচিত ব্যবসায়ী নেতা সাব্বির আলম খন্দকার হত্যা মামলায় শীর্ষ সন্ত্রাসী ও সাজাপ্রাপ্ত পলাতক আসামি জাকির খানের পক্ষে নিহতের বড় ভাই অ্যাডভোকেট তৈমূর আলম খন্দকারকে জেরা করেছেন আসামী পক্ষের আইনজীবীরা।

রোববার (৭ মে) দুপুরে নারায়ণগঞ্জ জেলা ও দায়রা জজ প্রথম আদালতের বিচারক উম্মে সরাবন তহুরার আদালতে এই জেরা করা হয়। একই সময়ে আদালতে জাকির খানের জামিন চাইলে আদালত জামিন নামঞ্জুর করে কারাগারে প্রেরণ করেন। সেই সাথে আগামী ১৩ জুলাই পরবর্তী সাক্ষ্যগ্রহণের জন্য দিন ধার্য করেছেন আদালত।

এদিকে উক্ত মামলায় দ্বিতীয় দফায় আইনজীবীরা অ্যাডভোকেট তৈমূর আলম খন্দকারকে জেরা করেছেন। এর আগে গত ৬ মার্চ জেরা করা হয়েছিলো। তার আগে অ্যাডভোকেট তৈমূর আলম খন্দকার গত ১৬ ফেব্রুয়ারি শীর্ষ সন্ত্রাসী জাকির খানের বিরুদ্ধে সাক্ষ্য দিয়েছিলেন।

এদিকে আলোচিত সন্ত্রাসী জাকির খানকে কঠোর নিরাপত্তার মাধ্যমে নারায়ণগঞ্জ আদালতে হাজির করা হয়। পরে আদালতের শুনানী শেষে তাকে আবার কারাগারে নিয়ে যাওয়া হয়।

নিহত সাব্বির আলম খন্দকারের বড় ভাই অ্যাডভোকেট তৈমূর আলম খন্দকার বলেন, কারও সাথে আমার ব্যক্তিগত শত্রুতা নেই। এটা কোনো রাজনৈতিক বিরোধ না। আমি আমার ভাই হত্যার বিচার চাই। আশা করি আমরা ন্যায়বিচার পাবো।

আসামী পক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট রবিউল হোসেন বলেন, এটি একটি চাঞ্চল্যকর হত্যা মামলা। যে মামলার বাদী অ্যাডভোকেট তৈমূর আলম খন্দকার। আমরা তৈমূর আলম খন্দকারের জেরা শেষ করেছি। আমরা জাকির খানের পক্ষে জামিন চেয়েছিলাম আদালত জামিন মঞ্জুর করেনি। আমরা উচ্চ আদালতে যাবো। আমরা আশা রাখি এই মামলায় আমাদের আসামী নির্দোষ প্রমাণিত হবেন।

আদালতের অতিরিক্ত পাবলিক প্রসিকিউটর অ্যাডভোকেট আব্দুর রহিম বলেন, ব্যবসায়ী নেতা সাব্বির আলম খন্দকার হত্যা মামলায় আসামী জাকির খানের বিরুদ্ধে তার বড় ভাই অ্যাডভোকেট তৈমূর দ্বিতীয় সাক্ষী প্রদান করেছিলেন। সেই সাক্ষীর ভিত্তিতে আসামী পক্ষের আইনজীবীরা তাকে দুই দফায় জেরা করেছেন। আগামী তারিখে অন্য সাক্ষীরা সাক্ষ্য দিবেন।

এদিকে জাকির খানকে নারায়ণগঞ্জ আদালতে আনাকে কেন্দ্র করে সকাল থেকেই তার অনুসারীরা উপস্থিত হন। এক পর্যায়ে তারা জাকির খানের মুক্তি চেয়ে স্লোগান দেয়ার চেষ্টা করলে পুলিশ তাদের থামিয়ে দেন। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে আগে থেকেই অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়।

কোর্ট পুলিশের পরিদর্শক মো. আসাদুজ্জামান বলেন, সাব্বির হত্যা হামলার আসামী জাকির খানকে আদালতে আনা হয়েছিলো। আজ বাদীকে আসামী পক্ষের আইজীবীগণ জেরা করেছেন। জেরা শেষে তাকে কারাগারে প্রেরণ করা হয়েছে।

প্রসঙ্গত, জাকির খান নারায়ণগঞ্জের ব্যবসায়ী সাব্বির আলম হত্যা মামলার আসামি ও জেলা ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি। তিনি দীর্ঘদিন ধরে পলাতক ছিলেন। পরিচয় গোপন করে গত এক বছর সপরিবার বসুন্ধরা আবাসিক এলাকায় বসবাস করছিলেন। পরে গত বছরের ৩ সেপ্টেম্বর ভোরে রাজধানীর বসুন্ধরা আবাসিক এলাকা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।

এর আগে সাব্বির আলম খন্দকার হত্যা মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ২০০৬ সালের ৮ জানুয়ারি আদালতে জাকির খান, তার দুই ভাই জিকু খান, মামুন খানসহ মোট ৮ জনকে আসামি করে অভিযোগপত্র দাখিল করেন।

মামলার প্রধান আসামি নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনের বিএনপি দলীয় সাবেক এমপি গিয়াস উদ্দিনকে মামলা থেকে বাদ দেওয়ায় মামলার বাদী তৈমুর আলম খন্দকার সিআইডির দেওয়া অভিযোগপত্রের বিরুদ্ধে ওই বছরের ২৪ জানুয়ারি আদালতে নারাজি পিটিশন দাখিল করেন। পরে অক্টোবর মাসে তৈমুর আবার এ নারাজি প্রত্যাহার করে নেন। তবে এই মামলায় অনেকদিন ধরে সাক্ষীরা আদালতে সাক্ষ্য দিতে আসছিলেন না বিচার কার্যক্রমে স্থবিরতা ছিলো বলে আদালত সূত্রে জানা গেছে।

যাযাদি/ এস

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে