মঙ্গলবার, ৩০ এপ্রিল ২০২৪, ১৭ বৈশাখ ১৪৩১
ঈদযাত্রার তৃতীয় দিন

স্বস্তির ঈদযাত্রায় ঘরমুখো মানুষ

যাযাদি রিপোর্ট
  ০৬ এপ্রিল ২০২৪, ০৯:১৯

পবিত্র ঈদুল ফিতরের আরও কয়েকদিন বাকি। এখনো শুরু হয়নি ঈদের ছুটি। কিন্তু এবার আগেই রাজধানী ঢাকা ছাড়তে শুরু করেছে ঘরমুখো মানুষ। বুধবার থেকে ট্রেনে আনুষ্ঠানিক ঈদযাত্রা শুরু হয়েছে। ঢাকা ছেড়ে যাচ্ছে ট্রেন, বাস, লঞ্চ, বিমান এবং ব্যক্তিগত গাড়ি। ভোগান্তিহীন ঈদযাত্রার জন্য একটু আগেভাগেই বাড়ি ফিরছেন তারা। ঈদযাত্রার তৃতীয় দিন শুক্রবার সাপ্তাহিক ছুটির দিন হওয়ায় ভোর থেকেই রাজধানীর বিভিন্ন বাস ও লঞ্চ টার্মিনাল এবং ট্রেন স্টেশনে যাত্রীদের ভিড় লক্ষ্য করা গেছে। বেলা গড়ানোর সঙ্গে সঙ্গে ঘরে ফেরা যাত্রীদের ভিড়ও বাড়তে থাকে। তবে শেষ পর্যন্ত ভোগান্তিবিহীন ঈদযাত্রা শুরু করেছেন সবাই।

এদিকে, সড়কে গাড়ির চাপ বৃদ্ধি এবং টোল আদায়ে মন্থর গতির কারণে ঢাকা-মাওয়া রুটে পদ্মা সেতুর টোল প্লাজায় যানবাহনের দীর্ঘ সারি দেখা গেছে। একই সঙ্গে ঢাকা-চট্টগ্রাম রুটে মুন্সীগঞ্জের গজারিয়া অংশের ১৩ কিলোমিটার এলাকায় ধীরগতিতে চলাচল করছে যানবাহন। রাজধানীর মহাখালী, গাবতলী, সায়েদাবাদ বাস টার্মিনাল এবং ঢাকা ছেড়ে যাওয়া পয়েন্টগুলোতেও বেড়েছে যাত্রীদের চাপ। এই সুযোগে ঈদ বোনাসের নামে বাড়তি ভাড়া আদায় করা হচ্ছে বলে যাত্রীরা অভিযোগ করেছেন। শুক্রবার সকাল থেকেই সদরঘাট লঞ্চ টার্মিনালে ছিল নাড়ির টানে ঘরে ফেরা মানুষের উপচেপড়া ভিড়।

বাসে বাড়তি ভাড়া আদায়ের অভিযোগ

শুক্রবার সকালে রাজধানীর গাবতলী বাস টার্মিনাল থেকে স্বজনদের সঙ্গে ঈদ উদযাপন করতে নগরবাসীকে নাড়ির টানে গ্রামে ফিরতে দেখা গেছে। বাসে যাত্রীরা ভোগান্তি ছাড়াই রওয়ানা হচ্ছেন। যাত্রীদের অভিযোগ, যথাসময়ে বাস ছাড়লেও ভাড়া নেওয়া হয়েছে বেশি।

ঢাকা থেকে বগুড়াগামী শাহ ফতেহ আলী পরিবহণের কাউন্টার ম্যানেজার আব্দুল হালিম বলেন, ‘শুক্রবার সকালে যে ভিড় থাকার কথা সে ভিড়টা নেই। যাত্রীদের চাপ গত কয়েক বছরের তুলনায় কম। হয়তো ছুটির পরে ভিড় বাড়বে।’

পাবনা এক্সপ্রেস কাউন্টারের মোসলেম উদ্দিন জানান, ‘সকালে পাবনার উদ্দেশ্যে তাদের ৬টি বাস ছেড়ে গেছে। তবে সবগুলো বাসে পরিপূর্ণ যাত্রী হয়নি। অর্থাৎ কিছু সিট খালি রেখেই বাস ছেড়েছে।’

এদিকে ভিন্ন চিত্র দেখা গেছে, গাবতলীর লোকাল বাসগুলোতে। শুক্রবার সকাল থেকে লোকাল বাসগুলো সিট পূর্ণ করেই বাস ছেড়েছে। মুহূর্তের মধ্যে লোকাল বাসের যাত্রী পরিপূর্ণ হচ্ছে। জানতে চাইলে পাটুরিয়াগামী সেলফি পরিবহণের চালক সাব্বির হোসেন বলেন, ‘আমাদের বাসে ভাড়া বাড়েনি। ২০০ টাকায় গাবতলী থেকে পাটুরিয়া ঘাটে যাচ্ছি খুব দ্রুত সময়ে।’

সেলফি পরিবহণের যাত্রী জাকির হোসেন বলেন, ‘স্ত্রী ও দুই সন্তানকে আজ পাঠিয়ে দিতে গাবতলী এসেছি। তাদের বাসে তুলে দিলাম। সেলফি পরিবহণে তারা যাচ্ছে। ভাড়া কম এবং দ্রুত সিট পাওয়া যায়, তাই সেলফিতে ওঠা।’

কুষ্টিয়াগামী এসবি সুপার ডিলাক্সে চারটি এসি টিকিট কিনেছেন ইকবাল অনিক নামে এক যাত্রী। তিনি বলেন, ‘যে ভাড়া ঈদের আগে ছিল ৯০০ টাকা সেই ভাড়া এখন নেওয়া হচ্ছে ১২০০ টাকা।’ ঈদের সময় ৩০০ টাকা করে প্রতি টিকিটে বৃদ্ধির জন্য ক্ষোভ প্রকাশ করেন তিনি।

এদিকে গাবতলী বাস টার্মিনালে যাত্রীদের নিরাপত্তায় পুলিশ কন্ট্রোল রুম খোলা হয়েছে। যেকোনো সমস্যা যাত্রীরা তাৎক্ষণিক পুলিশের সেবা নিতে পারবে। এছাড়া বাংলাদেশ সড়ক পরিবহণ কর্তৃপক্ষ (বিআরটিএ) ভিজিলেন্স টিম রয়েছে গাবতলীতে। সকাল ১০টায় মহাখালী বাস টার্মিনাল থেকে নাটোর, রাজশাহী, চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলাগুলোর উদ্দেশ্যে ছেড়ে যাচ্ছিল একতা পরিবহণ। আর এই বাসের যাত্রী হয়েছেন শরিফা খাতুন এবং তার ৮ বছরের ছেলে রাফসান আহমেদ।

শরিফা খাতুন বলেন, ‘আমার হাজবেন্ডের এখনো কয়েকদিন অফিস আছে। আর ঈদের সময় যেহেতু রাস্তায় প্রচÐ ভিড় হয়, যাওয়াও ঝামেলা। তাই আমরা কয়েকদিন আগেই ঢাকা ছেড়ে চলে যাচ্ছি। আমার ছেলের বাবা এসে গাড়িতে তুলে দিয়ে গেছেন আর আমরা নাটোরে বাবুর দাদা বাড়িতে যাব।’

একইভাবে মহাখালী বাস টার্মিনাল থেকে ময়মনসিংহ ছেড়ে যাওয়া এনা পরিবহণের একটি বাসে স্ত্রী ও মেয়েকে তুলে দিতে এসেছেন জাহিদুল ইসলাম নামে একজন বেসরকারি চাকরিজীবী। তিনি বলেন, ‘ঈদের সময় স্ত্রী-সন্তান নিয়ে ঢাকা ছেড়ে যাওয়া খুব কঠিন। একদিকে পুরো রাস্তাজুড়ে যানজট অন্যদিকে ঠিকমতো গাড়ির সিট পাওয়া যায় না তাই আগেই পরিবারের সদস্যদের পাঠিয়ে দিচ্ছি নিজ এলাকায়। আমার এখনো কয়েকদিন অফিস আছে, যদিও পরিবার আগে চলে গেলে আমার এই কয়দিন থাকা খাওয়ার সমস্যা তবুও ভোগান্তি এড়াতে পরিবারের সদস্যদের আগেই পাঠিয়ে দিচ্ছি।’

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, মহাখালী থেকে ছেড়ে যাওয়া এনা পরিবহণ, ন্যাশনাল পরিবহণ, একতা পরিবহণ, দেশ ট্রাভেলসহ অন্যান্য ভালোমানের বাসগুলোতে ঈদ উপলক্ষে কোনো অতিরিক্ত ভাড়া নেওয়া হচ্ছে না। তবে টাঙ্গাইল, জামালপুর, ময়মনসিংহ, শেরপুরগামী কিছু লোকাল কোয়ালিটির বাসে যাত্রীদের কাছ থেকে ঈদ বোনাসের নামে অতিরিক্ত ভাড়া নেওয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ জানিয়েছেন যাত্রীরা।

যাত্রীদের অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে বিনিময় বাসের সুপারভাইজার এরশাদ আলী বলেন, ‘ভাড়া বেশি নেওয়া হচ্ছে না, তবে যাত্রীদের কাছ থেকে ঈদ বোনাস চাচ্ছি আমরা। যদি কেউ খুশি মনে ভাড়ার সঙ্গে আমাদের দেয় তাহলে নিচ্ছি, কেউ না দিতে চাইলে জোর করে নিচ্ছি না। আগের ভাড়াতেই যাত্রীদের আনা-নেওয়া করা হচ্ছে। তবে ঈদের দুই-তিন দিন আগ থেকে অতিরিক্ত যানজটের কারণে অল্প কিছু পরিমাণে ভাড়া বাড়তে পারে।’

শুক্রবার সকালে স্ত্রী ও দুই মেয়েকে নিয়ে ফেনীর ছাগলনাইয়া যাওয়ার জন্য ঢাকার রায়েরবাগ এলাকার ব্যবসায়ী জাহাঙ্গীর আলম অপেক্ষা করছিলেন নারায়ণগঞ্জের সাইনবোর্ড এলাকায়। তিনি স্টার লাইন পরিবহণের বাসের টিকিট কিনেছেন। তিনি এক ঘণ্টা ধরে অপেক্ষা করছেন। কিন্তু ঢাকা থেকে বাস আসতে দেরি হচ্ছে।

তিনি জানান, আগে এই রুটে যাত্রীপ্রতি ভাড়া ছিল ৩৮০ টাকা। সেই ভাড়া ঈদ উপলক্ষে বাড়িয়ে নেওয়া হচ্ছে ৪২০ টাকায়। সকাল ৭টার গাড়ি আসছে সকাল ১০টায়। গাড়ির জন্য এভাবে কতক্ষণ অপেক্ষা করতে হবে জানেন না তিনি। কাউন্টার থেকে তাকে শুধু বলা হচ্ছে, ঢাকায় যানজটের কারণে গাড়ি আসতে দেরি হচ্ছে।

শুক্রবার সকালে সাইনবোর্ড এলাকায় ব্যবসায়ী জাহাঙ্গীর আলমের মতো বিভিন্ন গন্তব্যের যাত্রীদের গাড়ির জন্য অপেক্ষা করতে দেখা গেছে। গাড়ি পাওয়া গেলেও ভাড়া নিয়ে পরিবহণের লোকজনের সঙ্গে যাত্রীদের বচসা হয়েছে।

স্টার লাইন পরিবহণের কাউন্টার ব্যবস্থাপক কামাল হোসেন বলেন, যাত্রীর চাপ আছে। রাজধানীর গোলাপবাগ ও মানিকনগরে যানজট। সেখান থেকে গাড়ি বের হতেই এক ঘণ্টার বেশি সময় লেগে যাচ্ছে। ভাড়া বেশি নেওয়ার অভিযোগের বিষয়ে তিনি বলেন, যাত্রীপ্রতি ভাড়া ৫০ টাকা বেড়েছে। যাত্রীর চাপ থাকলেও সিট দিতে পারছেন না।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ঢাকা-চট্টগ্রাম ও ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের দেশের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলের ২১টি জেলার গাড়ি চলাচল করে। ব্যস্ততম দুটি মহাসড়ক দিয়ে প্রতিদিন হাজার হাজার যানবাহন চলাচল করে। সাইনবোর্ড ও শিমরাইলে ৪৫টি পরিবহণের কাউন্টার আছে। ঈদ উপলক্ষে মহাসড়কে যানবাহনের চাপ আছে, তবে যানজট নেই। কাউন্টারগুলোয় যাত্রীদের হালকা চাপ আছে।

পৌনে এক ঘণ্টা ধরে সাইনবোর্ড এলাকায় গাড়ির জন্য অপেক্ষা করছিলেন দুই ভাইবোন আকরাম এফ মনি ও মিম এফ নেসা। তারা কুমিল্লার ইলিয়টগঞ্জ যাবেন। দুজনেই বলেন, গাড়ি পাওয়া গেলেও ৮০ টাকার ভাড়া ১৫০ থেকে ২০০ চাওয়া হচ্ছে। ঈদযাত্রা নির্বিঘœ করতে ঢাকা-চট্টগ্রাম ও ঢাকা-সিলেট মহাসড়কে যানজট নিরসনে দুই শতাধিক হাইওয়ে পুলিশ ও জেলা পুলিশ কাজ করছে। ঈদ উপলক্ষে মহাসড়কের যাত্রী চাপ আছে। তবে যাত্রীরা ভেঙে ভেঙে যাওয়াতে সেটির প্রভাব মহাসড়কে পড়ছে না বলে জানিয়েছেন শিমরাইল হাইওয়ে পুলিশের পরিদর্শক এ কে এম শরফুউদ্দিন।

তিনি বলেন, মহাসড়কে যানজট নেই। পোশাক কারখানাগুলো এখনো ছুটি হয়নি। লম্বা ছুটি হওয়ার কারণে অনেকে ভেঙে যাচ্ছেন। এ কারণে চাপ পড়ছে কম। তিনি বলেন, সোম ও মঙ্গলবার গাড়ির চাপ বাড়তে পারে। যাত্রীদের কাছ থেকে অতিরিক্ত ভাড়া আদায়ের অভিযোগ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘সরকার নির্ধারিত ভাড়ার চেয়ে অতিরিক্ত ভাড়া আদায় করার অভিযোগ পাওয়া গেলে সেই গাড়ির বিরুদ্ধে মামলা ও গাড়িটি আটক করা হবে।’

চাপ নেই রেলস্টেশনে

গত সপ্তাহজুড়ে অনলাইনে যারা ট্রেনের অগ্রিম টিকিট সংগ্রহ করেছেন সেসব যাত্রীরা তৃতীয় দিনের মতো বাড়ি ফিরেছেন শুক্রবার। সকালে বিমানবন্দর রেলস্টেশনে গিয়ে দেখা যায়, স্টেশনের প্রবেশ গেটেই রয়েছে টিকিট চেকার। যারা অনলাইনে আগেই টিকিট কেটেছেন তাদের টিকিট চেক করে ভেতরে প্রবেশ করতে দিচ্ছেন। যাদের টিকিট নেই তাদের টিকিট কাটতে হচ্ছে। এদিকে নির্ধারিত ট্রেনের জন্য যাত্রীরা প্ল্যাটফর্মগুলোতে বসে অপেক্ষা করছেন তবে স্টেশনে উপচেপড়া ভিড় নেই।

বিমানবন্দর রেলস্টেশনের ভেতরে রয়েছে পুলিশের তথ্য কেন্দ্র। সেখানেও যাত্রীদের সেবা দিচ্ছে রেল পুলিশ। স্টেশনের ভেতরে ও বাইরে মোতায়েন রয়েছে পর্যাপ্ত আনসার সদস্য। টিকিট ছাড়া কাউকেই প্ল্যাটফর্মের ভেতরে প্রবেশ করতে দেওয়া হচ্ছে না। বিমানবন্দরে স্টেশনে ট্রেনের অপেক্ষায় ছিলেন মুজাক্কির হোসাইন। তার গ্রামের বাড়ি ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আজমপুরে। তিনি রাজধানীর বেসরকারি আইইউবিএটি ইউনিভার্সিটির একজন শিক্ষার্থী। ঈদুল ফিতর উপলক্ষে ইউনিভার্সিটি বন্ধ হয়ে গেছে। তিনি বলেন, ‘কালনী এক্সপ্রেস ট্রেনে একটি টিকিট কেটেছিলাম অনলাইনে। আজ দুপুরে ট্রেনের টাইম। ইউনিভার্সিটির ক্লাস শেষ তাই যাত্রীদের চাপ বাড়ার আগেভাগেই বাড়ি যাচ্ছি।’

স্টেশনের প্রবেশমুখে দুইজন ট্রাভেলিং টিকিট এক্সামিনারা (টিটিই) ও আনসার সদস্যদের অবস্থান রয়েছে। তারা যাত্রীদের টিকিট চেক করে ভেতরে প্রবেশ করতে দিচ্ছেন। ডিজিটাল ডিভাইসের মাধ্যমে যাত্রীদের টিকিট স্ক্যান করে দেখা হচ্ছে টিকিটটি আসল কি নকল। যদি নকল পাওয়া যায় তবে ওই যাত্রীকে আটকে রাখা হচ্ছে। টিকিটের সমাধান হলেই পড়ে তাদের ছাড়া হচ্ছে। এদিকে স্টেশনের প্রবেশদারে রয়েছে যাত্রীদের ভিড়।

পদ্মা সেতু টোল প্লাজায় গাড়ির দীর্ঘ সারি

শুক্রবার সকাল থেকেই পদ্মা সেতু টোল প্লাজা এলাকায় ব্যক্তিগত যানবাহনের পাশাপাশি যাত্রীবাহী বাসের দীর্ঘ সারির দেখা মিলছে। এর সঙ্গে মোটর সাইকেলের চাপও বেড়েছে। যানবাহন চলাচলে বিশৃঙ্খলা এড়াতে ও নিরাপদ রাখতে মহাসড়কের ৬টি গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টে চেকপোস্ট বসিয়েছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। এই বাড়তি চাপকে মাথায় রেখে দ্রæতগতিতে টোল আদায় হচ্ছে বলে জানিয়েছে পদ্মা সেতু কর্তৃপক্ষ।

তারা জানায়, এবার ঈদযাত্রা নির্বিঘ্ন করতে সেতুর মাওয়া প্রান্তের টোল প্লাজায় ৭টি টোল বুথে প্রতি পাঁচ সেকেন্ডে একটি করে যানবাহনে টোল আদায় করা হচ্ছে। ফলে দ্রুত সময়ের মধ্যেই ভোগান্তিহীনভাবে পদ্মা সেতু পাড়ি দিয়ে গন্তব্যের উদ্দেশ্যে যাচ্ছেন যানবাহন চালক ও যাত্রীরা। তবে মোটর সাইকেলের উপচেপড়া ভিড় থাকায় আলাদা দুটি লেন তৈরি করে টোল আদায় করা হচ্ছে।

পদ্মা সেতুর মাওয়া প্রান্তের টোল ম্যানেজার আহমেদ হক বলেন, ‘ভোর থেকেই যানবাহনের চাপ বাড়তে শুরু করেছে। এখন পর্যন্ত দূরপাল্লার গণপরিবহনের চেয়ে ব্যক্তিগত গাড়ির সংখ্যাই বেশি দেখলাম। ভোর থেকে মোটর সাইকেলের বাড়তি চাপ দেখছি।’

তিনি আরও বলেন, ‘ঈদকে সামনে রেখে যানবাহনের চাপ বৃদ্ধি পেলেও কোথাও কোনো বিড়ম্বনা নেই। যেহেতু সরকারি বেসরকারি বিভিন্ন শিল্প প্রতিষ্ঠানসহ এখনো গার্মেন্টস ছুটি হয়নি ফলে সেভাবে এখনো যানবাহনের চাপ বাড়েনি।’ এদিকে অনাকাক্সিক্ষত দুর্ঘটনা এড়াতে সেতু নিরাপত্তার দায়িত্বে নিয়োজিত থাকা কর্মীরা সেতুর বিভিন্ন পয়েন্টে নজরদারি বৃদ্ধি করেছে বলেও জানান তিনি।

ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে ধীরগতি

দাইদকান্দি (কুমিল্লা) প্রতিনিধি জানান, ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের মুন্সীগঞ্জের গজারিয়া উপজেলা অংশে ১৩ কিলোমিটার অংশে যানজট থাকলেও কুমিল্লা অংশে কোনো যানজট নেই। শুক্রবার দুপুর আড়াইটার দিকে হাইওয়ে পুলিশ এসব তথ্য জানিয়েছে।

দাউদকান্দি হাইওয়ে থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শাহীনুল আলম বলেন, ‘মুন্সীগঞ্জের গজারিয়ার ভবেরচর এলাকা থেকে দাউদকান্দির শহীদনগর পর্যন্ত ৫ কিলোমিটার যানজট ছিল দুপুর ১টা পর্যন্ত। এখন কোনো যানজট নেই। অবাধেই যানবাহনগুলো যাচ্ছে ঢাকা-কুমিল্লা উভয় লেনে।’

ইলিয়টগঞ্জ হাইওয়ে থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মঞ্জুরুল আলম বলেন, ‘ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের কুমিল্লার ইলিয়টগঞ্জ হাইওয়ে থানার অংশে কোনো যানজট নেই। তবে সড়কে গাড়ির প্রচুর চাপ রয়েছে। শুক্রবার ছুটির দিন হওয়ায় গাড়ির চাপ অনেক বেশি। গাড়ির চাপের ফলে উভয় লেনে কিছুটা ধীরগতি আছে। তবে কোনো গাড়ি থেমে নেই।’ হাইওয়ে পুলিশ কুমিল্লা রিজিয়নের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার শামসুল আলম সরকার বলেন, ‘ঘরমুখো মানুষের ঈদযাত্রাকে নির্বিঘœ ও ভোগান্তিমুক্ত রাখতে কয়েক স্তরে কাজ করছে প্রশাসন।’

দাউদকান্দি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আরাফাতুল ইসলাম বলেন, ‘দাউদকান্দি হাইওয়ে অংশে পুলিশ প্রশাসনের পাশাপাশি দাউদকান্দির ইউএনও হিসেবে আমি, এসি ল্যান্ড এবং তিতাস উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও এসিল্যান্ড মহাসড়কে অবস্থান করছি। সড়কে কোনো যানজট নেই এখন। উভয় লেনে সুন্দরভাবে গাড়ি চলাচল করছে।’

যাযাদি/ এসএম

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে