নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জের মৌচাক এলাকায় শুক্রবার ভোরে এক অজ্ঞাত ব্যক্তির লাশ পড়ে থাকতে দেখেন স্থানীয়রা।
খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে যায় থানা ও হাইওয়ে পুলিশ। তবে ওই ব্যক্তি কীভাবে মারা গেছেন, তা নিশ্চিত করতে না পারায় লাশ উদ্ধার নিয়ে দুই বিভাগের মধ্যে ঠেলাঠেলি শুরু হয়। প্রায় ৯ ঘণ্টা পর, দুপুরে হাইওয়ে পুলিশ লাশটি উদ্ধার করে।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্র জানায়, গতকাল শুক্রবার ভোর ৫টার দিকে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের পাশে মৌচাক এলাকায় একজনের লাশ পড়ে থাকতে দেখা যায়।
স্থানীয়দের খবর পেয়ে সেখানে পৌঁছায় সিদ্ধিরগঞ্জ থানা পুলিশ ও হাইওয়ে পুলিশ। কিন্তু কারা লাশ উদ্ধার করবে—সে বিষয়ে দ্বন্দ্বে জড়িয়ে পড়ে উভয় পক্ষ।
থানা পুলিশ বলে, যদি এটি হত্যাকাণ্ড হয়, তবে তারা লাশ উদ্ধার করবে। অন্যদিকে হাইওয়ে পুলিশ জানায়, যদি এটি সড়ক দুর্ঘটনা হয়, তাহলে উদ্ধার কাজ তাদের দায়িত্ব।
তবে লাশে আঘাতের চিহ্ন থাকায় হাইওয়ে পুলিশ ধারণা করে এটি হত্যা হতে পারে, তাই তারা থানা পুলিশকে লাশটি উদ্ধার করতে বলে।
পরিস্থিতি স্পষ্ট করতে পুলিশ আশপাশের সিসিটিভি ফুটেজ বিশ্লেষণ শুরু করে।
ফুটেজ এবং অন্যান্য তথ্য পর্যালোচনা করে নিশ্চিত হওয়া যায়, ব্যক্তি সড়ক দুর্ঘটনায় মারা গেছেন। এরপর দুপুর ২টার দিকে হাইওয়ে পুলিশের শিমরাইল ক্যাম্পের এসআই আশরাফ উদ্দিন লাশটি উদ্ধার করেন।
পুলিশ ও স্থানীয়দের ধারণা, ভোরে কোনো এক সময় ওই ব্যক্তি সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত হয়েছেন।
শিমরাইল হাইওয়ে পুলিশ ক্যাম্পের ইনচার্জ পরিদর্শক জুলহাস উদ্দিন বলেন, ‘লাশ দেখে সড়ক দুর্ঘটনার মতো মনে হয়নি। আঘাতের চিহ্ন ছিল।
তাই আমরা থানা পুলিশকে বলেছিলাম, এটি হত্যা হতে পারে বলে তারা যেন উদ্ধার করে।’
সিদ্ধিরগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোহাম্মদ শাহীনুর আলম বলেন, ‘লাশটি মহাসড়কে ছিল, তাই আমরা হাইওয়ে পুলিশকে দায়িত্ব নিতে বলি।
তবে লাশে আঘাতের চিহ্ন থাকায় তারা অনীহা দেখায়। পরে আমরা আশপাশের সিসিটিভি ফুটেজ দেখি ও প্রত্যক্ষদর্শীদের বক্তব্য শুনে নিশ্চিত হই—এটি সড়ক দুর্ঘটনা।’
গতকাল দুপুরে ঘটনাস্থলে গিয়ে মৃত ব্যক্তির আঙুলের ছাপ সংগ্রহ করে নারায়ণগঞ্জ পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)।
সন্ধ্যা ৭টার দিকে শিমরাইল ক্যাম্পের এসআই আশরাফ উদ্দিন জানান, লাশ বর্তমানে আমাদের হেফাজতে রয়েছে।
ময়নাতদন্তের জন্য এখনও হাসপাতালে পাঠানো হয়নি। নিহতের পরিচয় জানার চেষ্টা চলছে। স্বজনদের পাওয়া না গেলে হাইওয়ে পুলিশ বাদী হয়ে মামলা করবে।’