সোমবার, ২০ মে ২০২৪, ৬ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১
উপজেলা পরিষদ নির্বাচন

তৃণমূলের ৫০০ নেতার মত নেয় বিএনপি, ভোটের পক্ষে ছিল মাত্র ১০ জন

যাযাদি ডেস্ক
  ০৯ মে ২০২৪, ০৯:২২
আপডেট  : ০৯ মে ২০২৪, ০৯:২৫
ছবি-যায়যায়দিন

দলীয় সরকারের অধীনে আর কোনো নির্বাচনে অংশ নিবে না বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপি। কারণ বিএনপি নেতাদের মতে দলীয় সরকারের অধিনে নির্বাচনে অংশ নেয়া মানে নিশ্চিত পরাজয়। বাড়তি পাওনা হামলা, মামলা ও বাড়ী ছাড়া। বিএনপির পাশাপাশি বিরোধী কোন দল এবারের উপজেলা নির্বাচনে অংশ নেয়নি। তাই সর্বনিন্ম ভোট পড়েছে এই নির্বাচনে।

সূত্রে জানা যায় বিএনপির স্থায়ী কিমিটি সারাদেশের ৫০০ নেতার মতামত নেন নির্বাচনে যাওয়া না যাওয়ার পক্ষে। সেখানে মাত্র ১০ জন নেতা নির্বাচনে যাবার পক্ষে মত দেয়। অন্য ৪৯০ জন সাফ জানিয়ে দেন আওয়ামী লীগের অধীনে নির্বাচনে গেলে নিশ্চিত পরাজয়।

এদিকে ষষ্ঠ উপজেলা নির্বাচনের প্রথম ধাপে ১৩৭টি উপজেলায় ভোটগ্রহণ শেষ হয়েছে। তবে জাতীয় নির্বাচনের মতো উপজেলা নির্বাচনও বর্জনের সিদ্ধান্ত নেয় বিএনপি। যদিও অনেক জায়গায় নির্বাচনে অংশগ্রহণ করেছেন দলটির কিছু নেতা। দলীয় সিদ্ধান্ত না মেনে নির্বাচনে অংশ নেয়ায় ইতোমধ্যে কঠোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে দলটির হাইকমান্ড। প্রথম ধাপে উপজেলা নির্বাচনে অংশ নেয়া অন্তত ৭৬ জনসহ সারাদেশে ১৪৪ নেতাকে বহিষ্কার করেছে বিএনপি।

জানা যায়, বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতারা বলছেন, যারা নির্বাচনে দাঁড়িয়েছেন তারা বেশিরভাগই স্থানীয় পর্যায়ের নেতা বা দলের গ্রহণযোগ্য ব্যক্তি নয়। স্থানীয়ভাবে অন্য প্রার্থীকে সুবিধা দিতেই নির্বাচনে অংশ নিয়েছে তারা।

তারা বলছেন, এই ভোটে অংশগ্রহণ মানে সরকারকে স্বীকৃতি দেয়া, এই নির্বাচন কমিশনকে স্বীকৃতি দেয়া। সুতরাং, এই নির্বাচনে বিএনপির অংশগ্রহণ করার কোনো প্রশ্নই আসে না।বিএনপি কেন স্থানীয় নির্বাচন বয়কট করছে তার যুক্তি তুলে ধরে দলটির সাংগঠনিক সম্পাদক সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্স সাংবাদিকদের জানান, ‘বর্তমান আওয়ামী লীগ সরকার ৭ জানুয়ারি জাতীয় নির্বাচনে দেশে-বিদেশে কোথাও গ্রহণযোগ্যতা পায়নি। তাই গ্রহণযোগ্যতা পেতে উপজেলা নির্বাচনে বিএনপিকে নিয়ে একটি ফাঁদ পাততে চেয়েছিল আওয়ামী লীগ, কিন্তু বিএনপিসহ বিরোধী দল সে ফাঁদে পা দেয়নি।’

উপজেলা নির্বাচন নিয়ে তৃণমূলের সঙ্গে কেন্দ্রীয় নেতাদের কোনো বোঝাপড়ার ঘাটতি রয়েছি কিনা- এমন প্রশ্নে প্রিন্স বলেন, আমরা যেহেতু গণতন্ত্রের চর্চা করি, তাই দলের মধ্যে ভিন্নমত থাকতে পারে। তাই এ নির্বাচনের আগে দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানসহ স্থানীয় কমিটির সদস্যদের সঙ্গে স্থানীয় পর্যায়ের প্রায় ৫০০ নেতাদের নিয়ে অনলাইনে বৈঠক হয়েছে। সেখানে মাত্র ১০ থেকে ১২ জন নির্বাচনে যাওয়ার পক্ষে মতামত দেয়। বাকিরা সবাই নির্বাচনের বিপক্ষে ছিল।

তৃণমূলের সিদ্ধান্ত নিয়েই আমরা নির্বাচন বর্জনের সিদ্ধান্ত নিয়েছি। বিএনপির হাইকমান্ডের সঙ্গে তৃণমূলের কোনো বোঝাপড়ার ঘাটতি নেই বলেও মন্তব্য করেন দলটির এ নেতা।

প্রসঙ্গত, ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারির দশম সংসদ নির্বাচন বর্জন করলেও ওই বছরের ফেব্রুয়ারিতে অনুষ্ঠিত উপজেলা নির্বাচনে বিএনপি অংশ নেয়। পরবর্তীতে ২০১৮ সালের একাদশ সংসদ নির্বাচনের পর স্থানীয় সরকারের নির্বাচনে প্রথম দিকে অংশ নিলেও ভোটে অনিয়ম ও কারচুপির অভিযোগে ২০২১ সালের ২৭ ফেব্রুয়ারি বিএনপির স্থায়ী কমিটির বৈঠকে স্থানীয় সরকার নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা না করার সিদ্ধান্ত হয়। এরই ধারাবাহিকতায় সব স্থানীয় নির্বাচন বর্জন করে আসছে বিএনপি।

সেসময় দলীয় সিদ্ধান্ত অমান্য করে প্রার্থী হওয়ায় কুমিল্লার মনিরুল হক সাক্কু, নারায়ণগঞ্জের তৈমূর আলম খন্দকারসহ অনেক হেভিওয়েট নেতাকে বহিষ্কার করেছিল বিএনপি।

যাযাদি/ এস

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়
X
Nagad

উপরে