সোমবার, ২৯ এপ্রিল ২০২৪, ১৬ বৈশাখ ১৪৩১

অধিনায়কত্ব পেয়ে রোমাঞ্চিত শান্ত

ক্রীড়া প্রতিবেদক
  ২৬ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ০৯:৪১
ফাইল ছবি

একসময় তার দলে থাকা নিয়ে ছিল অনেক প্রশ্ন। ব্যাট হাতে ম্যাচের পর ম্যাচ রানের ফোয়ারা ছুটিয়ে নাজমুল হোসেন শান্ত দলে শুধু জায়গা পাকা করেননি, নিজেকে পরিণত করেছেন অপরিহার্য সদস্য হিসেবে। সেই শান্তর এবার নেতৃত্বের অভিষেক হতে যাচ্ছে। নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে তিন ম্যাচ সিরিজের তৃতীয় ও শেষ ওয়ানডেতে শান্তর নেতৃত্বে খেলবে বাংলাদেশ। ১৬তম অধিনায়ক হিসেবে শান্ত বাংলাদেশকে নেতৃত্ব দেবেন। আজ মঙ্গলবার মিরপুর শেরেবাংলা স্টেডিয়ামে নিউজিল্যান্ডের মুখোমুখি হবে বাংলাদেশ।

ম্যাচপূর্ব সংবাদ সম্মেলনে শান্ত জানিয়েছেন নেতৃত্ব দেওয়া গর্বের বিষয়, তিনি উপভোগ করবেন, ‘আমার মনে হয় একজন ক্রিকেটার হিসেবে আমার জন্য অনেক গর্বের ব্যাপার। সঙ্গে সঙ্গে আমার পরিবারের সদস্যদের জন্য অনেক গর্বের ব্যাপার। বিসিবি এই সুযোগটা তৈরি করে দিয়েছে, তাতে আমি খুবই রোমাঞ্চিত এবং উপভোগ করব।’

শান্ত বাংলাদেশের হয়ে এখন পর্যন্ত তিন সংস্করণ মিলিয়ে ৭৭টি ম্যাচ খেলেছেন। সর্বোচ্চ ২৯টি ম্যাচ খেলেছেন ওয়ানডে সংস্করণে। ২ সেঞ্চুরি ও ৪ ফিফটিতে এই সংস্করণে তার ব্যাট থেকে আসে ৮৩২ রান। এ ছাড়া ২৩ টেস্টে ১২৮৩ ও ২৫ টি২০-তে ৫৬৬ রান করেন। ২০১৮ সালে আফগানিস্তানের বিপক্ষে ওয়ানডে ক্রিকেটে যাত্রা শুরু হয় শান্তর। তারও ১ বছর আগে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে টেস্ট ক্রিকেট দিয়ে বাংলাদেশের হয়ে প্রতিনিধিত্ব শুরু করেন এই বাঁহাতি ব্যাটার। অনেক চড়াই-উতরাই পেরিয়ে শান্ত নিজেকে এমন অবস্থায় নিয়ে এসেছেন, তার কাঁধে নেতৃত্বের ভার দিতে বেশি ভাবতে হয়নি টিম ম্যানেজমেন্টকে। যদিও তা ১ ম্যাচের জন্যই।

শান্ত বলেন, ‘ভবিষ্যতে যদি ওই সুযোগ আসে দলের দেশের হয়ে নেতৃত্ব দেওয়ার অবশ্যই ওইটা করার চেষ্টা করব। এবং এটা আসলে আমার মনে হয় প্রত্যেকটা ক্রিকেটারেরই স্বপ্ন যে, দেশের হয়ে প্রতিনিধিত্ব করবে। এটা আমার এখন পর্যন্ত আসছে। ভবিষ্যতে যদি আবার সুযোগ আসে, আবার ভালোভাবে করার চেষ্টা করব’- যোগ করেন শান্ত।

নিউজিল্যান্ড সিরিজে নিয়মিত অধিনায়ক সাকিব আল হাসানকে বিশ্রাম দিয়ে লিটন দাসের নেতৃত্বে দল দেওয়া হয়েছিল। দুই ম্যাচ পর লিটনকেও বিশ্রাম দেওয়ায় শান্তর কাঁধে আসে নেতৃত্বের ভার। শান্ত বেশি কিছু ভাবতে চান না, উপভোগ করে যেতে চান। ভবিষ্যতে এমন সুযোগ আসলে ভালো করেই কাজে লাগাতে চান। বাকিটা বলে দেবে সময়।

আগামী ৫ অক্টোবর ভারতের মাটিতে গড়াবে আইসিসি ওয়ানডে বিশ্বকাপ। টুর্নামেন্টের ত্রয়োদশ আসরকে ঘিরে বড় স্বপ্ন দেখছিলেন ক্রিকেটপ্রেমীরা। তবে সম্প্র্রতি এক সাক্ষাৎকারে বিশ্বকাপ জয়ের ‘স্বপ্ন’ ইস্যুতে চন্ডিকা হাথুরুসিংহে জানিয়েছেন, ‘ঘুম থেকে জেগে ওঠ।’

সংবাদ সম্মেলনে হাথুরুসিংহের সেই কথাকে উদ্ধৃতি করে এক সংবাদকর্মী শান্তর কাছে জানতে চান, বিশ্বকাপ নিয়ে আগের স্বপ্ন থেকে তারা সরে এসেছেন কি না? এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘তাদের স্বপ্নটা এখনো আগের জায়গায় আছে।’

ওয়ানডে সুপার লিগে তৃতীয় হওয়াই তাদের স্বপ্ন দেখতে আত্মবিশ্বাসী করেছে বলে জানালেন নাজমুল, ‘আমরা সবাই তো আগে যে স্বপ্ন দেখছিলাম, এখনো সেই স্বপ্নই দেখছি। আমরা ক্রিকেটাররা যারা আছি, আমরা চেয়েছিলাম ওয়ানডে সুপার লিগ যেন সেরা চারের মধ্যে শেষ করি। যেটা আমরা সেরা তিনে থেকে শেষ করেছি।’

শান্ত বলেন, ‘তখন (সুপার লিগ) থেকেই আমরা কিন্তু স্বপ্ন দেখি যে, আমরা বিশ্বকাপে ভালো কিছু করব, যেটা কখনো করিনি। আমরা বিশ্বাস করি, আমাদের সেই সামর্থ্য আছে। এখনো আমাদের ওই একই স্বপ্নটা আছে।’

বিসিবি সূত্রের খবর, আজ মঙ্গলবার ঘোষণা করা হবে বাংলাদেশের বিশ্বকাপ স্কোয়াড। দল ঘোষণা প্রসঙ্গে শান্ত বলেন, ‘অনিশ্চয়তা বললে ভুল হবে, ম্যাক্সিমাম প্লেয়ার হয়তো এ সম্পর্কে অবগত আছে। দুই-একজন খেলোয়াড় এদিক-ওদিক হতে পারে। অনেক খেলোয়াড়ই জানে কারা যাবে, তাদের রোল কী হবে। এটা প্লেয়ার হিসেবে আমাদের কাছে খুব একটা সমস্যা হয় না, কারণ আমরা মোটামুটি জানি কারা যাব, কারা খেলব এবং কাদের কী রোল। তাই এটা নিয়ে খুব বেশি আসলে সমস্যা হয়নি।’

অন্য যেকোনো আসরের তুলনায় এবারের বিশ্বকাপ নিয়ে স্বপ্নটা একটু বড় বাংলাদেশের। আগের ছয় আসরে বড় সাফল্য একটাই, কোয়ার্টার ফাইনাল খেলা। এবার নিজেদের আরেকটু ছাড়িয়ে যেতে চান শান্তরা। এশিয়া কাপ আশানুরূপ না হলেও এবং নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে একটি ম্যাচ হারলেও সেখান থেকে সরে দাঁড়াচ্ছেন না টাইগাররা।

সিরিজের প্রথম ম্যাচ বৃষ্টিতে ভেসে যাওয়ার পর দ্বিতীয় ম্যাচে ৮৬ রানের বড় জয় পেয়েছে নিউজিল্যান্ড। বিশ্বকাপের আগে প্রস্তুতির চিন্তা বেশি থাকলেও সিরিজ বাঁচানোর হিসাবটাও রাখতে হচ্ছে মাথায়। এই পরিস্থিতিতে অবশ্য কোনো চ্যালেঞ্জ দেখছেন না শান্ত, ‘চ্যালেঞ্জ না, আমার কাছে মনে হয় আনন্দের। খুব ভালো লাগছে এমন সুযোগ এবং এমন অবস্থায় আমাদের দল আছে, সামনে বিশ্বকাপ। সব মিলিয়ে আমার কাছে মনে হয়, যদি আমরা এই জায়গায় ভালোভাবে শেষ করতে পারি ম্যাচটা আমার ভবিষ্যতের জন্য ভালো হবে।’

অধিনায়ক হিসেবে কাকে অনুসরণ করা হয়? বাঁহাতি এই ব্যাটার খোলামেলাভাবে জানিয়েছেন, অধিনায়ক সাকিব আল হাসানের নেতৃত্ব তিনি খুবই উপভোগ করেন, ‘ব্যক্তিগতভাবে আমার সাকিব ভাইয়ের ক্যাপ্টেনসি বলেন বা ওনার পরিকল্পনা বলেন বা মাঠে ক্রিকেটারদের নিয়ন্ত্রণ করা আমি খুবই উপভোগ করি। বিপিএলে তার সঙ্গে খেলার সুযোগ হয়েছিল যখন, তখন অনেক কিছু শিখেছি। চেষ্টা করব যে, আমার যতটুকু অভিজ্ঞতা আছে এবং আমার যে জিনিসগুলো বড় ভাইদের কাছ থেকে শিখেছি ওই জিনিসগুলো ছোট ছোটভাবে কাজে লাগানোর।’

যাযাদি/ এস

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে