ঠিক এভাবেই ম্যাচ জিততে হয়। প্রবল আত্মবিশ্বাস নিয়ে। বুক ভরা সাহস নিয়ে।
হায়দার আলী ২ রান নেবেন কী বুঝতে পারছিলেন না। তাওহীদ হৃদয়ের মতিভ্রম! বল ধরেও থ্রো করবেন কিনা দ্বিধাদ্বন্দে।
হায়দার সুযোগ পেয়ে সীমানা অতিক্রম করলেন। জয়ের ২ রানের সমীকরণ মিলিয়ে নিলেন। ব্যাস, সংযুক্ত আরব আমিরাতের প্রথম বাংলাদেশ বধের কাব্য লিখা হয়ে গেল।
৫ বলে ১১ রানের সমীকরণে প্রাসার যখন তানজিমের ফুলটস ছক্কায় উড়ালেন অপরপ্রান্তে থাকা হায়দারের বুনোউল্লাস।
পরের স্লোয়ার বলে প্রাসার বোল্ড হলে রাগান্বিত হায়দার পারলে ব্যাটটাই সতীর্থকে ছুঁড়ে মারেন।
মিনিট ব্যবধানে তার আনন্দ নিরানন্দে পরিণত হলেও শেষটা কিন্তু যারপরনাই খুশিতে কেটেছে। বাংলাদেশের দেওয়া ২০৬ রানের লক্ষ্য এক বল আগেই ২ উইকেট হাতে রেখে ছুঁয়ে ফেলা।
প্রথম টি-টোয়েন্টিতে ইউএই কেবল স্নায়ু স্থির রাখতে পারেনি। চোখ রাঙানি দিয়েও বাংলাদেশকে তারা জিততে দিয়েছিল। আজ হাতের মুঠোয় আবার পেল।
এবার কোনো ভুল নয়। পথ থেকে ছিটকে গিয়েছে। আবার ফিরে এসেছে। প্রতিপক্ষের নিশানায় ক্ষত বিক্ষত হয়েছে। কিন্তু মনোবল হারায়নি। শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত জয়ের নেশায় বুদ হয়ে ছিল ইউএই। ২ উইকেটের জয়ে আনন্দ ছড়িয়ে পড়ল ঐতিহাসিক শারজাহয়।
শারজাহ তাঁদের নখদর্পনে। উইকেট, মাঠের আকার, আবহ তাদের সবটাই জানা।
আন্তর্জাতিক ক্রিকেটের ‘টাইগাররা’ যখন খারাপ সময়ের ভেতর দিয়ে যাচ্ছে তখনই তাদেরকে আরেকটু বিব্রতকর করলো ইউএই। সময়ের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে ক্রিকেট এগিয়েছে যেভাবে সেই চিত্রটাই আজ তাদের ব্যাটে ফুটে উঠলো।
ছক কষে খেলা, ভালো বল সমীহ করা, খারাপ বল শাসন করা, আগ্রাসন দেখিয়ে বোলারের মনোবল নষ্ট করা....কত কী।
২২ গজে বাংলাদেশকে হারিয়ে নতুন এক ইতিহাসে নিজেদের জড়িয়ে নিলেন তাঁরা। এই জয়ে নিশ্চিত করেই মরুর বুকে আনন্দের ঝড় উঠলো। যে ঝড়ে ধুলোর স্তূপে উড়ে গেল বাংলাদেশ।
সংযুক্ত আরব আমিরাতে এর আগে কোনো ম্যাচে দুইশর বেশি রান তাড়া করে জয় পায়নি কোনো দল। আমিরাত বাংলাদেশকে হারিয়ে নতুন ইতিহাস লিখল। তাদের এই জয়ের নায়ক মুহাম্মদ ওয়াসিম।
৪২ বলে ৮২ রান করে সব আলো নিজের ওপর কেড়ে নেন ওয়াসিম। ৯ চার ও ৫ ছক্কায় ১৯২ স্ট্রাইক রেটের ব্যাটিং ছিল সময়ের দাবি মেটানোর মতোই।
সিরিজে ১-১ এ সমতা। দুই ম্যাচের সিরিজ হলে ট্রফি ভাগাভাগি করতে হতো দুই দলকে।
বাংলাদেশের প্রস্তাবে ইউএই একটি ম্যাচ বাড়িয়েছে। ২১ মে একই মাঠে সিরিজের ফয়সালা।