শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১
কাখোভকা বাঁধ ধ্বংস

পস্নাবিত ঘরবাড়ি থেকে উদ্ধার কয়েকশ' মানুষ

ম বন্যাদুর্গত এলাকার ৬৮ শতাংশই পড়েছে রাশিয়ার দখলে থাকা নিপ্রো নদীর বাম তীরের অংশে
যাযাদি ডেস্ক
  ১০ জুন ২০২৩, ০০:০০
কাখোভকা বাঁধ ভেঙে বিস্তীর্ণ এলাকা পস্নাবিত

ইউক্রেনের নোভা কাখোভকার বিশাল বাঁধ ধ্বংস হয়ে খেরসনের দক্ষিণাঞ্চলের একাধিক গ্রাম, ফসলের ক্ষেত ও রাস্তাঘাট ডুবে যাওয়ার দুই দিন পরও পস্নাবিত বিভিন্ন বাড়ির ছাদ থেকে কয়েকশ' লোককে উদ্ধার করা হয়েছে। অঞ্চলটির ইউক্রেনীয় গভর্নর জানিয়েছেন, ড্রোন ভিডিওতে বন্যাদুর্গত অনেক এলাকায় বাড়িঘরের ছাদ ছাড়া আর কিছু দেখা যাচ্ছে না; বন্যায় খেরসনের প্রায় ৬০০ বর্গকিলোমিটার এলাকা তলিয়ে গেছে। সংবাদসূত্র : বিবিসি, রয়টার্স, এনবিসি

নোভা কাখোভকার বাঁধটি এমন এক সময় ধসে পড়ল, যখন ইউক্রেন পাল্টা আক্রমণের প্রস্তুতি নিচ্ছিল। এই পাল্টা আক্রমণকে ইউক্রেইন যুদ্ধের পরবর্তী গুরুত্বপূর্ণ পর্যায় হিসেবে দেখা হচ্ছে। গত বছরের ২৪ ফেব্রম্নয়ারি রাশিয়া ইউক্রেনে 'বিশেষ সামরিক অভিযানের' নামে সেনা পাঠালে যুদ্ধ শুরু হয়। এটি এরই মধ্যে লাখ লাখ মানুষের প্রাণ কেড়ে নিয়েছে, অগণিত মানুষকে বাস্তুচু্যত করেছে, অসংখ্য শহরকে মাটির সঙ্গে মিশিয়ে দিয়েছে।

রাশিয়া ও ইউক্রেন উভয়েই সোভিয়েত আমলে নির্মিত বিশাল কাখোভকা জলবিদু্যৎ বাঁধ ধ্বংসের জন্য একে অপরকে দায়ী করছে।

এ ঘটনায় যেসব এলাকা পস্নাবিত হয়েছে, সেখানে অপরপক্ষের গোলাবর্ষণের কারণে উদ্ধার কার্যক্রম ব্যাহত হচ্ছে বলে বৃহস্পতিবার কিয়েভ আর মস্কো একে অপরকে দোষারোপ করেছে। ইউক্রেনের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলেছে, খেরসনে লোকজনকে সরিয়ে নেওয়ার সময় রাশিয়ার গোলায় অন্তত ৯ বাসিন্দা আহত হয়েছে। দেশটির প্রসিকিউটর জেনারেলের দপ্তর প্রথমে গোলায় একজন নিহত হয়েছে বলে জানালেও পরে জানায়, নিহতের কোনো খবর পাওয়া যায়নি। একই ধরনের অভিযোগ করেছে ক্রেমলিনও। ইউক্রেনীয় সেনারা রাশিয়ার উদ্ধারকর্মীদের লক্ষ্য করে গুলি ছুড়ছে বলে অভিযোগ তাদের।

ইউক্রেইনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি বন্যা কবলিতদের জন্য 'দ্রম্নত ও পর্যাপ্ত' আন্তর্জাতিক সহায়তা চেয়েছেন। তিনি হঠাৎ সৃষ্ট বন্যা পরিস্থিতি নিয়ে খেরসনের কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথাও বলেছেন। মানবিক ত্রাণ সহযোগিতা সমন্বয়ের দায়িত্বে থাকা জাতিসংঘের দপ্তর বলেছে, দুর্গত এলাকায় খাবার পানি, পানি বিশুদ্ধকরণ ট্যাবলেট, পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা সামগ্রী ও জেরিক্যান পাঠিয়েছে দাতা সংস্থাগুলো। তারা বলছেন, এখন খাবার পানিই সবচেয়ে দরকারি জিনিস।

ক্রেমলিন বলেছে, বন্যাদুর্গত এলাকা সফরে যাওয়ার পরিকল্পনা পুতিনের নেই, তবে তিনি পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছেন। রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট এরই মধ্যে রুশ নিয়ন্ত্রিত এলাকায় থাকা বাঁধ ধ্বংসে ইউক্রেনকে দায় দিয়ে বলেছেন, পশ্চিমা মিত্রদের পরামর্শেই তারা এমন কাজ করেছে। অন্যদিকে, ইউক্রেন বলছে, রাশিয়া কয়েক মাস আগেই ওই বাঁধে মাইন পেতে রেখেছিল এবং কিয়েভ বাহিনীর নিপ্রো নদী অতিক্রম করা ঠেকাতে তারাই বাঁধ উড়িয়ে দিতে পারে।

অন্যদিকে, বন্যায় এখন পর্যন্ত কতজনের মৃতু্য হয়েছে তা জানা যায়নি। নোভা কাখোভকার রুশপন্থি মেয়র বৃহস্পতিবার বলেছেন, অন্তত পাঁচজনের মৃতু্যর খবর জেনেছেন তিনি।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে