মধ্যপ্রাচ্য সফরের অংশ হিসেবে বুধবার সংযুক্ত আরব আমিরাত ও সৌদি আরব সফর করেছেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভস্নাদিমির পুতিন। গাজায় ইসরাইলের হামলা, ইউক্রেন যুদ্ধসহ নিজেদের মধ্যে সম্পর্কের নানা বিষয়ে কথা বলেছেন পুতিন। সৌদি ও আমিরাতের নেতাদের সঙ্গে বৈঠকের পর পুতিন বলেন, 'কেউই আমাদের সম্পর্কের মাঝে বাধা হতে পারবে না।' সংবাদসূত্র : আনাদলু নিউজ
বুধবার আবুধাবি সফরের সময় পুতিনকে স্বাগত জানিয়ে অনুষ্ঠানের আয়োজন করেন সংযুক্ত আরব আমিরাতের প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ বিন জায়েদ আল-নাহিয়ান। সেখানে এক বক্তৃতায় রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট বলেন, রাশিয়া ও সংযুক্ত আরব আমিরাতের মধ্যে সম্পর্ক সর্বকালের সর্বোচ্চ পর্যায়ে রয়েছে। রুশ নেতা দুই দেশের মধ্যে সমৃদ্ধ ব্যবসা এবং জ্বালানি সম্পর্কের প্রশংসা করেন। পুতিন বলেন, 'আজ, আপনার অবস্থানের জন্য ধন্যবাদ। আমাদের সম্পর্ক একটি অভূতপূর্ব উচ্চ পর্যায়ে পৌঁছেছে।'
সংযুক্ত আরব আমিরাতকে মস্কোর 'আরব বিশ্বের প্রধান বাণিজ্য অংশীদার' হিসেবে বর্ণনা করেন পুতিন। দুই দেশের মধ্যে বাণিজ্য লেনদেন ২০২২ সালে ৬৭ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। এই প্রবণতা আরও ত্বরান্বিত হবে বলে আশা প্রকাশ করেন পুতিন। তিনি জানান, দু'টি দেশ সক্রিয়ভাবে শিল্প সহযোগিতা সম্প্রসারণ করছে এবং বেশ কয়েকটি বড় যৌথ তেল ও গ্যাস উদ্যোগে জড়িত রয়েছে। সংযুক্ত আরব আমিরাতের প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ বিন জায়েদ আল-নাহিয়ানও রাশিয়ার সঙ্গে সম্পর্ককে ঐতিহাসিক হিসেবে বর্ণনা করেছেন। ২০২২ সালের ফেব্রম্নয়ারিতে ইউক্রেন সংঘাত শুরু হওয়ার পর থেকে মধ্যপ্রাচ্যে রাশিয়ার মূল বাণিজ্য অংশীদার হিসেবে সংযুক্ত আরব আমিরাত আবির্ভূত হয়েছে।
রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভস্নাদিমির পুতিন বুধবার আমিরাতের পর সৌদি আরবে পৌঁছান। সেখানে তিনি সৌদি যুবরাজ ও প্রধানমন্ত্রী মোহাম্মদ বিন সালমানের সঙ্গে বৈঠক করেন। বৈঠকে পুতিন বলেন, কোনো কিছুই তাদের দেশের সম্পর্কের উন্নয়নে বাধা দিতে পারবে না। রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক ও মানবিক ক্ষেত্রের কথা তুলে ধরে পুতিন বলেন, রাশিয়া ও সৌদি আরবের মধ্যে স্থিতিশীল এবং খুব ভালো সম্পর্ক রয়েছে। রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট বলেন, 'অবশ্যই এই অঞ্চলে কী ঘটছে, সে সম্পর্কে তথ্য ও মূল্যায়নের আদান-প্রদান করা আমাদের সবার জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ।' বৈঠককে সময়োপযোগী বলেও উলেস্নখ করেন পুতিন। বৈঠকে পুতিন সৌদি যুবরাজকে মস্কো সফরের আমন্ত্রণ জানান। বিন সালমান পুতিনের প্রস্তাব গ্রহণ করেন।
বৈঠকের সময় পুতিনকে সৌদি আরবের বিশেষ অতিথি বলে অভিহিত করেন। মুহাম্মদ বিন সালমান বলেন, রাশিয়া এবং সৌদি আরবের অনেক সাধারণ স্বার্থ রয়েছে এবং পুরো বিশ্ব এবং মধ্যপ্রাচ্যে উভয় ক্ষেত্রেই স্থিতিশীলতা ও উন্নয়ন অর্জনের জন্য কাজ করছে। উলেস্নখ্য, ২০১৯ সালের অক্টোবরের পর এই অঞ্চলে প্রথমবারের মতো সফর করলেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভস্নাদিমির পুতিন।
এদিকে বৃহস্পতিবার রাশিয়া সফরে যান ইরানের প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসি। মস্কোয় এ দিন তিনি পুতিনের সঙ্গে বৈঠক করেন। দুই প্রেসিডেন্ট বিস্তৃত কৌশলগত অংশীদারিত্ব চুক্তি স্বাক্ষর করেছেন। এটি ইরানকে রাশিয়ার কৌশলগত অংশীদার করে তুলবে এবং দু'টি দেশের মধ্যে সহযোগিতা উলেস্নখযোগ্যভাবে বৃদ্ধি করবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। তবে এই রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত পুতিন ও রাইসির বৈঠকের বিষয়ে বিস্তারিত জানা যায়নি।