বৃহস্পতিবার, ১৬ মে ২০২৪, ২ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১
ইসরাইলি আগ্রাসন

গাজায় ২৪ ঘণ্টায় শতাধিক ফিলিস্তিনি নিহত

গাজার শিশুদের মধ্যে ক্রমাগত অতি উচ্চমাত্রার উদ্বেগ, ক্ষুধামান্দ্যের মতো বিভিন্ন লক্ষণ দেখা যাচ্ছে
যাযাদি ডেস্ক
  ০৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ০০:০০
জর্ডান-সিরিয়া সীমান্তে অবস্থিত মার্কিন সেনাঘাঁটিতে ইরান সমর্থিত বিদোহীদের ড্রোন হামলায় তিন সেনা নিহত হওয়ার প্রতিশোধ হিসেবে শনিবার ইরাক ও সিরিয়ায় হামলা চালিয়েছে আমেরিকা। ইরাকের আল-কাইমে মার্কিন বিমান হামলার জায়গায় শেলের খোলগুলো পড়ে আছে -রয়টার্স

ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় ইসরাইলি বাহিনীর নৃশংসতা থামছেই না। সেখানে ২৪ ঘণ্টায় আরও ১১২ ফিলিস্তিনিকে হত্যা করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার থেকে শুক্রবার সন্ধ্যার মধ্যে ইসরাইলি বাহিনীর হামলায় আরও ১৪৮ জন আহত হয়েছেন। গাজায় ইসরাইলি সেনাদের তান্ডবে ৭৫ শতাংশ মানুষ বাস্তুহারা হয়ে পড়েছে। সেখানে খাবার, পানি, ওষুধ এবং নিরাপদ আশ্রয়ের তীব্র সংকট তৈরি হয়েছে। তথ্যসূত্র : এএফপি, আল-জাজিরা, রয়টার্স

গত কয়েক দিনের মধ্যে ইসরাইলি বাহিনীর সবচেয়ে মারাত্মক হামলার ঘটনা ঘটেছে গত বুধবার। খান ইউনিস ও রাফাহের মধ্যবর্তী এলাকা দিয়ে যাওয়ার সময় একটি বেসামরিক গাড়ি এবং একটি মালবাহী গাড়ি হামলার শিকার হয়। এতে শিশুসহ চারজন নিহত হয়।

বর্তমানে ইসরাইলি সেনারা দক্ষিণাঞ্চলের খান ইউনিসে তান্ডব চালাচ্ছে। ইসরাইলি বাহিনী এরপর গাজার সর্বশেষ 'নিরাপদ স্থান' রাফাহতে হামলা চালানোর পরিকল্পনা করছে। রাফাহতে হামলার হুমকি দিয়ে ইসরাইলের প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইয়োয়াভ গ্যালান্ত বলেছেন, 'হামাসের খান ইউনিস ব্রিগেডকে নির্মূল করা হয়েছে। আমরা সেখানে অভিযান শেষ করব এবং রাফাহতে এটি অব্যাহত রাখব। হামাসের ওপর আমরা যত চাপ প্রয়োগ করব, ততই জিম্মিদের কাছে পৌঁছাব, যা অন্য সবকিছুর চেয়ে বেশি। আমরা শেষ পর্যন্ত অভিযান অব্যাহত রাখব। এ ছাড়া অন্য কোনো উপায় নেই।'

এদিকে ইউনিসেফ জানিয়েছে, ফিলিস্তিনি ছিটমহল গাজার আনুমানিক ১৭ হাজার শিশু যুদ্ধের মধ্যে সঙ্গীহীন বা তাদের পরিবার থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে, আর ভূখন্ডটির প্রায় সব শিশুর মানসিক স্বাস্থ্য সহায়তা দরকার বলে বিশ্বাস তাদের। অধিকৃত ফিলিস্তিনি অঞ্চলগুলোর জন্য ইউনিসেফের যোগাযোগ প্রধান জোনাথন ক্রিক্স শুক্রবার বলেন, 'তাদের মধ্যে ক্রমাগত অতি উচ্চমাত্রার উদ্বেগ, ক্ষুধামান্দ্যের মতো বিভিন্ন লক্ষণ দেখা যাচ্ছে। তারা ঘুমাতে পারে না, তাদের মধ্যে আবেগে ফেটে পড়ার লক্ষণ দেখা যাচ্ছে, আর বোমার প্রতিটা শব্দে তারা আতঙ্কিত হয়ে পড়ছে।

তিনি বলেন, 'এই যুদ্ধ শুরুর আগেই গাজার পাঁচ লাখ শিশুর মানসিক স্বাস্থ্য ও মনো-সামাজিক সমর্থন প্রয়োজন। আজ আমাদের হিসাবে গাজার প্রায় সব শিশুর ওই সহায়তা দরকার, আর তাদের সংখ্যা ১০ লাখের বেশি।'

গাজায় ইসরাইলি হামলায় এখন পর্যন্ত প্রায় ২৭ হাজারের বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। যাদের মধ্যে সাড়ে ১২ হাজারের বয়স ১৮ বছরের নিচে। আরও বহু মানুষ আহত হয়েছেন। যাদের অনেককে আজীবনের জন্য পঙ্গুত্ব বরণ করতে হবে।

যদিও গাজা যুদ্ধের প্রকৃত চিত্র পাওয়া খুবই কঠিন। তবে 'ইউরো-মেডিটেরানিয়ান হিউম্যান রাইটস মনিটর'র পরিসংখ্যান অনুযায়ী গাজায় ইসরাইলের হামলায় ২৫ হাজারের বেশি শিশু, বাবা অথবা মা অথবা বাবা-মা উভয়কেই হারিয়েছে।

গত ৭ অক্টোবর থেকে শুরু হওয়া ইসরাইলের অবিরাম হামলা ও কঠোর অবরোধের মধ্যে ছোট্ট ফিলিস্তিনি ভূখন্ড গাজার সব জায়গায় ক্ষুধা ছড়িয়ে পড়েছে। এর ২৩ লাখ বাসিন্দার সবাই ক্ষুধার্ত। তারা ইসরাইলের বিরামহীন বোমা হামলার মধ্যে বেঁচে থাকার চেষ্টা করছে। গত সপ্তাহে জাতিসংঘ সতর্ক করে বলেছে, ভূখন্ডটির অনেক এলাকা এরই মধ্যে দুর্ভিক্ষের সম্মুখীন।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়
X
Nagad

উপরে