আজকের যায়যায়দিন

রাশিয়ার সীমান্তের কাছে পশ্চিমা সামরিক জোট ন্যাটোর চার মাস ধরে চলা দীর্ঘ সামরিক মহড়া প্রমাণ করে এই জোট রাশিয়ার সঙ্গে সম্ভাব্য সংঘাতের জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছে। শনিবার রাশিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র মারিয়া জাখারোভা ?'স্টিডফাস্ট ডিফেন্ডার' নামে ন্যাটো জোটের মহড়ার প্রেক্ষাপটে এমন মন্তব্য করেছেন। তথ্যসূত্র : রয়টার্স

ন্যাটো জোটের সদস্য দেশগুলোতে রাশিয়া হাইব্রিড ধাঁচের হামলা পরিচালনা করছে বলে চলতি সপ্তাহে যে অভিযোগ তুলেছে সামরিক জোটটি তা প্রত্যাখ্যান করেছেন মারিয়া জাখারোভা। তিনি বলেছেন, এটা বিভ্রান্তিকর 'ভুল তথ্য'; যা জোটের কার্যক্রম থেকে মানুষের নজর আড়াল করার লক্ষ্যে ছড়ানো হয়েছে। এক বিবৃতিতে রাশিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এই মুখপাত্র বলেন, বরং ন্যাটোই অস্ত্র, গোয়েন্দা তথ্য এবং অর্থ দিয়ে ইউক্রেনকে সহায়তা করে রাশিয়ার সঙ্গে হাইব্রিড যুদ্ধ চালিয়ে যাচ্ছে।

তিনি বলেন, স্নায়ুযুদ্ধের পর ন্যাটোর সবচেয়ে বড় মহড়া 'স্টিডফাস্ট ডিফেন্ডার' এই মুহূর্তে রাশিয়ার সীমান্তের কাছে অনুষ্ঠিত হচ্ছে। তাদের পরিকল্পনা অনুযায়ী, রাশিয়ার বিরুদ্ধে জোটের পদক্ষেপের অংশ হিসেবে হাইব্রিড ও প্রচলিত অস্ত্র-সহ সব ধরনের উপকরণ ব্যবহার করে অনুশীলন করা হচ্ছে।' মারিয়া জাখারোভা বলেন, 'আমাদের স্বীকার করতেই হবে, রাশিয়ার সঙ্গে 'সম্ভাব্য সংঘাতের' বিষয়ে গুরুত্ব সহকারে প্রস্তুতি নিচ্ছে ন্যাটো।'

২০২২ সালে ইউক্রেনে রাশিয়ার সামরিক সংঘাত শুরু হওয়ার পর গত কয়েক দশকের মধ্যে রাশিয়া ও পশ্চিমের সম্পর্ক সবচেয়ে বৈরী হয়ে উঠেছে।

রাফাহতে ইসরাইলের অভিযান বন্ধ চায় দক্ষিণ আফ্রিকা

গত জানুয়ারিতে মহড়া শুরুর ঘোষণা দিয়ে ন্যাটো বলেছিল, রাশিয়ার সীমান্তের কাছের এই মহড়ায় ন্যাটোর ৯০ হাজার সেনা অংশ নেবে। মার্কিন সেনারা রাশিয়ার সীমান্তবর্তী দেশগুলোতে এবং জোটের পূর্ব প্রান্তে কোনো সংঘাত ছড়িয়ে পড়লে ইউরোপীয় মিত্রদের কীভাবে শক্তি বৃদ্ধি করতে পারে, সেই মহড়া চালাবে তারা। স্নায়ুযুদ্ধের পর ন্যাটোর সবচেয়ে বড় এই মহড়া মে মাস পর্যন্ত চলবে। সেই সময়ে রাশিয়া বলেছিল, এসব মহড়াকে স্নায়ুযুদ্ধের পরিকল্পনায় জোটের 'অপ্রতিরোধ্য প্রত্যাবর্তন' হিসেবে চিহ্নিত করেছে মস্কো।

'ক্রিমিয়ায় আমেরিকা নির্মিত চার ক্ষেপণাস্ত্র ভূপাতিত'

এদিকে, ক্রিমিয়া উপদ্বীপের আকাশে আমেরিকায় নির্মিত চারটি দূরপালস্নার ক্ষেপণাস্ত্র ভূপাতিত করার দাবি করেছে রাশিয়া। শনিবার (৪ মে) রুশ প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় এই দাবি করেছে। এই ক্ষেপণাস্ত্রগুলো আর্মি ট্যাকটিক্যাল মিসাইল সিস্টেমস (এটিএসিএমএস) নামে পরিচিত। সম্প্রতি আমেরিকা এই ধরনের ক্ষেপণাস্ত্র ইউক্রেনকে সরবরাহ করেছে। রাশিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় এ বিষয়ে বিস্তারিত জানায়নি।

এর আগে গত ৩১ এপ্রিল রাশিয়ার কর্মকর্তারা বলেছিলেন, ক্রিমিয়ায় এটিএসিএমএস দিয়ে হামলা করেছে ইউক্রেন। রাশিয়ার আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থাকে ভেদ করার চেষ্টা হিসেবে এই হামলা করেছে কিয়েভের সেনারা। কিন্তু ছয়টি ক্ষেপণাস্ত্র ভূপাতিত করা হয়েছে।

গত মাসে ওয়াশিংটনে এক মার্কিন কর্মকর্তা বলেছিলেন, সাম্প্রতিক সপ্তাহগুলোতে আমেরিকা ইউক্রেনকে গোপনে দূরপালস্নার ক্ষেপণাস্ত্র সরবরাহ করেছে।

এটিএসিএমএস ক্ষেপণাস্ত্রগুলো ৩০০ কিলোমিটার দূরের লক্ষবস্তুতে আঘাত হানতে সক্ষম। ওই মার্কিন কর্মকর্তা বলেছিলেন, গত ১৭ এপ্রিল ইউক্রেন প্রথমবার এগুলো ব্যবহার করেছিল। ওই সময় রণক্ষেত্র থেকে ১৬৫ কিলোমিটার দূরে ক্রিমিয়ায় রাশিয়ার একটি বিমানঘাঁটিতে হামলা করে ইউক্রেন।