ইউক্রেনজুড়ে দিনদুপুরে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়েছে রাশিয়া। সোমবার পরিচালিত এই হামলায় অন্তত ৩৬ জন নিহত হয়েছেন। ইউক্রেনীয় কর্মকর্তারা বলেছেন, কিয়েভের একটি শিশু হাসপাতালে ক্ষেপণাস্ত্র আঘাত হেনেছে। এদিকে, রাশিয়া বেসামরিক নাগরিকদের লক্ষ্যবস্তু করার অভিযোগ অস্বীকার করেছে। তথ্যসূত্র : রয়টার্স
দেশটির প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি জানিয়েছেন, রুশ বাহিনী ৪০টির বেশি ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করেছে। এতে বিভিন্ন শহরে অবকাঠামো, বাণিজ্যিক ও আবাসিক ভবনগুলো ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
কিয়েভ কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, রাজধানীতে হামলায় সাতজন নিহত এবং অন্তত ২৫ জন আহত হয়েছেন। জেলেনস্কির নিজ শহর ক্রিভি রিহ-তে ১০ জন নিহত এবং ৩১ জন আহত হয়েছে বলে জানিয়েছেন মেয়র অলেক্সান্ডার ভিলকুল। পূর্ব ইউক্রেনের পোকরভস্ক শহরে একটি শিল্প স্থাপনায় আঘাতের কারণে আরও তিনজন মারা গেছেন বলে জানিয়েছেন দোনেৎস্ক অঞ্চলের গভর্নর।
মেসেজিং অ্যাপ 'টেলিগ্রামে' জেলেনস্কি বলেছেন, যত বেশি সম্ভব মানুষকে বাঁচানোর জন্য সব সেবা সক্রিয় রয়েছে। পুরো বিশ্বকে তার সব দৃঢ়তা ব্যবহার করে রুশ হামলার অবসান ঘটাতে হবে।
এই হামলার সময় হলো, যখন হাঙ্গেরির প্রধানমন্ত্রী ভিক্টর ওরবান চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং-এর সঙ্গে সম্ভাব্য ইউক্রেনে শান্তিচুক্তি নিয়ে আলোচনা করতে বেইজিংয়ে এক অপ্রত্যাশিত সফর করছিলেন।
কিয়েভের মেয়র ভিতালি ক্লিৎশকো বলেছেন, রাজধানীতে এই হামলাটি রাশিয়ার ২০২২ সালের ফেব্রম্নয়ারিতে আক্রমণ শুরু হওয়ার পর থেকে সবচেয়ে বড় হামলাগুলোর মধ্যে একটি। তিনি জানান, শহরের প্রধান শিশু হাসপাতালটি এই হামলায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। জানালাগুলো ভেঙে গেছে এবং প্যানেলগুলো ছিটকে পড়েছে। অভিভাবকরা শিশুকে ধরে হতবাক ও কান্নাকাটি করতে করতে রাস্তায় বেরিয়ে আসছিলেন।
৩৩ বছর বয়সি সিতলাকা ক্রাভচেঙ্কো বলেছেন, 'আমরা একটি বিস্ফোরণের শব্দ শুনেছি। তারপর আমাদের ওপর ধ্বংসাবশেষ ছিটকে পড়েছে।' তিনি ও তার স্বামী ভিক্টর আশ্রয় থেকে বেরিয়ে এসেছিলেন। তাদের দুই মাসের শিশু নিরাপদ ছিল, কিন্তু সিতলাকা আহত হয়েছেন। তাদের গাড়িটি হাসপাতালের পাশে ধ্বংসাবশেষে চাপা পড়েছিল। তার কথায়, 'ভয়ংকর ছিল। আমি শ্বাস নিতে পারছিলাম না। আমি আমার শিশুকে ঢেকে রাখার চেষ্টা করছিলাম।'
স্থানীয় ও আঞ্চলিক কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, এই হামলায় কিয়েভ, ক্রিভি রিহ, দোনিপ্রো, পোকরভস্ক, ক্রামাতোরস্ক এবং অন্যান্য এলাকায় শিল্প-কারখানা, অবকাঠামো এবং আবাসিক ও বাণিজ্যিক ভবনগুলো ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।