সোমবার, ১২ মে ২০২৫, ২৮ বৈশাখ ১৪৩২
সামরিক আবাসন থেকে আসাদ আমলের কর্মকর্তারা উচ্ছেদ

সিরিয়ার সশস্ত্র বাহিনীতে যোগ দিচ্ছে বিদেশি যোদ্ধারা

আন্তজাতিক ডেস্ক
  ০২ জানুয়ারি ২০২৫, ০০:০০
সিরিয়ার সশস্ত্র বাহিনীতে যোগ দিচ্ছে বিদেশি যোদ্ধারা

সিরিয়ার সশস্ত্র বাহিনীতে কয়েকজন বিদেশি যোদ্ধাকে অন্তর্ভুক্ত করেছে দেশটির নতুন শাসক গোষ্ঠী। তাদের মধ্যে অন্তত একজন করে জর্ডান ও তুরস্কের নাগরিক এবং কয়েকজন উইঘুর সম্প্রদায়ের লোক রয়েছেন। মঙ্গলবার প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে ব্রিটিশ বার্তাসংস্থা রয়টার্স এ খবর জানিয়েছে। রোববার সামরিক বাহিনীর ৪৯টি পদে নিয়োগের জন্য মনোনীতদের নাম ঘোষণা করেছে প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়। তাদের মধ্যে দেশটির প্রধান বিদ্রোহী গোষ্ঠীর নেতারাও অন্তর্ভুক্ত আছেন। সিরিয়ার সেনাবাহিনীর এক সূত্র জানিয়েছে, সুপারিশপ্রাপ্তদের মধ্যে বেশ কয়েকজন বিদেশি যোদ্ধা। তাদের মধ্যে তিনজনকে বিগ্রেডিয়ার জেনারেল ও অন্তত তিনজনকে কর্নেল পদে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। আসাদ সরকারের পতনের পর সিরিয়ার সংখ্যালঘুদের প্রতি কোনও নিপীড়নমূলক পদক্ষেপ নেওয়া ও ইসলামিক বিপস্নবের ভিত্তিতে শাসন পরিচালনা থেকে বিরত থাকার অঙ্গীকার করেছিল নতুন শাসকদল। তবে, সিনিয়র বিভিন্ন পদবিসহ প্রশাসনিক পদে জিহাদিদের অন্তর্ভুক্ত করায় দেশটির সাধারণ নাগরিকসহ অন্যান্য দেশের নেতৃবৃন্দের আশঙ্কা, শাসকদল তাদের অঙ্গীকার পালন করবে না। দুই সিরীয় নিরাপত্তা সূত্রের দাবি, দেশটির বিদ্রোহী গোষ্ঠীগুলোকে পেশাদার বাহিনীতে পরিণত করতেই এই পদক্ষেপ নিয়েছে দামেস্ক। নতুন নিয়োগের উদ্দেশ্য জানতে সরকারের মুখপাত্রের সঙ্গে যোগাযোগে চেষ্টা করে সাড়া পায়নি রয়টার্স। এছাড়া, নিয়োগপ্রাপ্ত বিদেশিদের জাতীয়তা স্বাধীনভাবে এখনও যাচাই করতেও ব্যর্থ হয়েছে তারা। সিরিয়ার ১৩ বছরের গৃহযুদ্ধে আসাদ সরকার ও ইরান সমর্থিত শিয়া সশস্ত্র গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে যুদ্ধে বিদ্রোহীদের দলে হাজারও বিদেশি সুন্নি যোগ দিয়েছিলেন। এতে পরিস্থিতি আরও ভয়াবহ আকার ধারণ করে। অনেক বিদেশি নিজেদের দল গঠন করেছিলেন। অনেকে আবার ইসলামিক স্টেটের মতো দলে যোগদান করেছিলেন। বাকিরা এইচটিএসে যোগ দিয়েছিলেন।

সিরিয়ার কার্যত নেতা (ডি-ফ্যাক্টো রুলার) ও এইচটিএস প্রধান আহমেদ আল-শারা, দল থেকে কয়েক ডজন বিদেশি মিলিশিয়াকে বহিষ্কৃত করেছেন। দলকে আরও বেশি সিরীয় ও আধুনিক করতে এই পদক্ষেপ নেওয়া হয় বলে তিনি দাবি করেন। রবিবার এক ভাষণে তিনি বলেছেন, দল ও গোষ্ঠী ভিত্তিক মানসিকতা দিয়ে নতুন সিরিয়া পরিচালিত হবে না। আসাদ সরকারের বিরুদ্ধে যুদ্ধে অবসানের সম্মাননাস্বরূপ বিদেশি যোদ্ধা ও তাদের পরিবারের সদস্যদের সিরীয় নাগরিকত্ব প্রদান করে দেশে অবস্থানের অনুমতি দেওয়া হতে পারে বলে আভাস দিয়েছেন দেশটির নতুন শাসক গোষ্ঠী।

এদিকে সিরিয়ার সাবেক প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদের আমলে ভতুর্কি দেওয়া বাড়িগুলোতে বাস করা সামরিক কর্মকর্তাদের পরিবারকে উচ্ছেদ করে সেগুলো এখন দিয়ে দেওয়া হচ্ছে সদ্যই ঝড়ো অভিযানে জয়ী হওয়া সাবেক বিদ্রোহী যোদ্ধা ও তাদের পরিবারের সদস্যদেরকে। স্থানীয় অধিবাসী ও যোদ্ধারা একথা জানিয়েছে। রাজধানী দামেস্কের বাইরে মুয়াদামিয়াত আল-শাম কম্পাউন্ডে চলছে এই জবরদখল। আসাদের শাসনামলে সামরিক কর্মকর্তাদের আবাসনের বেশ কয়েকটি এলাকার মধ্যে এই কম্পাউন্ড ছিল একটি। সেখানে এক ডজনেরও বেশি ভবনে শত শত মানুষের বাস। সিরিয়ার সামরিক বাহিনী পুনর্গঠনের সঙ্গে সঙ্গে আসাদ আমলের কর্মকর্তাদের সরিয়ে দেওয়া হচ্ছে। তাদের একসময়কার নিরাপদ আবাসন এখন হস্তান্তর করা হচ্ছে বিরোধী বাহিনীর যোদ্ধাদের, যারা বছরের পর বছর ধরে গরিব, পলস্নী, বিদ্রোহী নিয়ন্ত্রিত এলাকাগুলোতে ছিল।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে