বুধবার, ১৪ মে ২০২৫, ৩১ বৈশাখ ১৪৩২
এই অর্জন ধরে রাখতে হবে

জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনে নারী

  ০৯ ফেব্রুয়ারি ২০২১, ০০:০০
জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনে নারী

বিশ্বের বিভিন্ন দেশে জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনে সুনামের সঙ্গে কাজ করছেন বাংলাদেশের আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা। কেবল পুরুষরাই নয়, নারীরাও শান্তিরক্ষা মিশনে অবদান রেখে চলেছেন অত্যন্ত সাফল্যের সঙ্গে। সম্প্রতি পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. একে আব্দুল মোমেন জানিয়েছেন, জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনে বাংলাদেশের নারী সদস্যরা পথিকৃৎ। এ মিশনে ১ হাজার ৯০০ নারী সদস্যকে পাঠিয়েছে বাংলাদেশ। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্ব ও সদিচ্ছায় বাংলাদেশের নারীরা এগিয়ে চলেছে। শান্তিরক্ষায় আমাদের নারীরা এজেন্ট হিসেবে কাজ করছে। জাতিসংঘের শান্তিরক্ষা মিশনের অনেক কঠিন ক্ষেত্রেও বাংলাদেশের নারীরা কাজ করছেন। জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনে জুডিশিয়াল কর্মকর্তা হিসেবেও বাংলাদেশের নারীরা নিয়োজিত। বর্তমানে দক্ষিণ সুদানে নিয়োজিত জাতিসংঘ মিশন (ইউএনএমআইএসএস) ও ইউএনএসওএমে নারীরা বিচারক হিসেবে নির্বাচিত হয়েছেন। শান্তিরক্ষার সংখ্যার দিক থেকে দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে বাংলাদেশ। বাংলাদেশি শান্তিরক্ষীদের জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা কার্যক্রমে অংশগ্রহণের তিন দশক পূর্ণ হয়েছে আগেই। জাতিসংঘ মহাসচিব বলেছেন, মানবাধিকার সুরক্ষার পাশাপাশি গোলযোগপূর্ণ অঞ্চলে স্থায়ী শান্তি প্রতিষ্ঠায় বাংলাদেশের শান্তিরক্ষীদের ভূমিকা আমাকে মুগ্ধ করেছে। বাংলাদেশের নারীরা সোচ্চার রয়েছেন সামাজিক-সম্প্রীতি সুসংহত করতে।

উলেস্নখ্য, ১৯৮৮ সালে ইরাকের দাঙ্গা মেটাতে জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনে সর্বপ্রথম অংশ নেন বাংলাদেশের শান্তিরক্ষীরা। সেই থেকে বিশ্বের ২৭টি মিশনের দায়িত্ব সম্পাদন করেছেন তারা। এখন তারা কাজ করছে বিভিন্ন দেশে। দ্বিতীয় বৃহত্তম শান্তিরক্ষী সরবরাহকারী রাষ্ট্রের মর্যাদায় রয়েছে বাংলাদেশ।

1

২০০০ সালে ৫ নারী পুলিশের একটি টিম প্রথমবারের মতো শান্তিমিশনে পূর্ব তিমুরে অংশ নেয়। পরবর্তী সময়ে নানা কারণে আর নারী পুলিশের কোনো টিম মিশনে অংশ নেয়নি। এরপর অপেক্ষা করতে হয় আরও দশ বছর। সব বাধা অতিক্রম করে ২০১০ সালে বাংলাদেশ নারী পুলিশের প্রথম কনটিনজেন্ট পাঠানো হয় শান্তিরক্ষা হাইতি মিশনে। এ কনটিনজেন্টে ছিল নারী পুলিশের ১৬৮ সদস্য। আর এর মধ্যদিয়েই ব্যাপক আকারে শান্তি মিশনে বাংলাদেশ নারী পুলিশের যাত্রা শুরু।

ইতিপূর্বে বাংলাদেশ পুলিশের পুরুষ সদস্যদের পাশাপাশি নারী সদস্যরাও কর্মদক্ষতার মধ্যদিয়ে শান্তি মিশনে কুড়িয়েছে প্রশংসা। সংখ্যার দিক দিয়ে পৌঁছে গেছে শীর্ষ অবস্থানে। ২০১৫ সালের ৯ এপ্রিল শান্তিরক্ষা কঙ্গো মিশনে যোগ দিতে ঢাকা ত্যাগ করেন বাংলাদেশ নারী পুলিশের দ্বিতীয় কনটিনজেন্টের ১২৫ সদস্য। এ ধারাবাহিকতা বজায় রয়েছে।

জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনে খুবই সাহসিকতার সঙ্গে কাজ করে যাচ্ছেন বাংলাদেশের নারীরা। স্থানীয় জনসাধারণ বিশেষ করে নির্যাতিত নারীদের ভরসার স্থল হিসেবে আস্থা অর্জন করেছেন তারা। ওই সব দেশে স্থানীয় নারীরা ওয়ার এবং ডমেস্টিক ভায়োলেন্সের শিকার হন বেশি। এই ক্ষেত্রগুলোতে ভিক্টিমরা নারী পুলিশ সদস্যদের কাছে কথা বলতে স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করেন। নারী পুলিশ সদস্যদের আপনজন হিসেবে মনে করেন তারা। এ ক্ষেত্রে বাংলাদেশের নারীরা বেশ সফল। জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা বাহিনীতে প্রতিদিন বাংলাদেশ মহিলা পুলিশ অফিসারের চাহিদা বাড়ছে, তাদের সাহসিকতা ও কর্মদক্ষতার কারণে। এটা বাংলাদেশের নারীদের বড় ধরনের অর্জন। এ অর্জন ধরে রাখতে হবে।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে