গাড়ি চালানোর সময় সর্বদা ট্রাফিক আইন মেনে চলুন। ট্রাফিক সিগন্যাল অমান্য করবেন না ও অতিরিক্ত গতি পরিহার করুন। ঘন ঘন লেন পরিবর্তন করবেন না। ট্রাফিক পুলিশকে মান্য করুন। আপনার একটি অসতর্ক মুহূর্ত হতে পারে একটি দুর্ঘটনার কারণ। হেলমেট পরুন মোটরসাইকেল, স্কুটার থেকে পড়ে মাথায় চোট লাগার সম্ভাবনা সব থেকে বেশি, মাথার চোট অনেক সময় ক্রিটিক্যাল পর্যন্ত হতে পারে। তাই মোটরসাইকেল, স্কুটার নিয়ে বেরোনোর আগে হেলমেট পরতে ভুলবেন না।
ওভার স্পিড বা অতিরিক্ত দ্রম্নতগতিতে গাড়ি চালালে প্রাণ সংশয়ের আশঙ্কা তাই স্পিড বা গতি নির্দিষ্ট করা প্রয়োজন। অতিরিক্ত দ্রম্নতগতিতে অনেক সময় আপনি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে নিজের সঙ্গে অন্যের জীবনও বিপদে ফেলতে পারেন। তাই সতর্ক হোন। ওভার টেকিং ও অসতর্ক হয়ে গাড়ি চালাবেন না। গাড়ি চালানোর সময় সিট বেল্ট পরতে ভুলবেন না। সিল্ট বেল্ট পরে গাড়ি চালান। সিট বেল্ট ড্রাইভার এবং অন্য যাত্রীদের সুরক্ষা দেয়। ট্রাফিক আইন মেনে চলুন। ট্রাফিক লাইট উলস্নঙ্ঘন বা ট্রাফিক আইন মেনে না চললে বিপদ হতে পারে, এমনকি আপনি দুর্ঘটনাগ্রস্ত হতে পারেন।
অতিরিক্ত জোরে গাড়ি ছোটাবেন না, বাড়ি থেকে একটু সময় নিয়ে বেরোন, আপনি সহজে এবং আস্তে ধীরে ধীরে গন্তব্যে পৌঁছে যাবেন। চেনা পরিচিত রাস্তা বা রুট বেছে নিন। রাস্তা-ঘাটের দুরবস্থার কথা মাথায় রেখে চেনা পরিচিত রুটই বেছে নিন। সাধারণের জন্য ব্যবহৃত গাড়িতে ওঠার সময় কিছু কথা মাথায় রাখুন। গাড়িতে ওঠার বা নামার সময় সতর্ক থাকুন, বিশেষ করে বর্ষাকালে বা জল জমে থাকা এলাকায় আরও বেশি করে সতর্ক হওয়া প্রয়োজন। জেব্রা ক্রসিং ব্যবহার করুন রাস্তা পার হওয়ার সময় নির্দিষ্ট জেব্রা ক্রসিং ব্যবহার করুন। সবুজ আলো দেখলে কখনোই রাস্তা পার করবেন না এবং অতি অবশ্যই লাল আলো দেখে রাস্তা পারাপার করবেন, গাড়ির যত্ন নিন। গাড়ির যত্ন নেওয়া প্রয়োজন। গাড়ির টায়ার, ব্রেক, স্টেয়ারিং, ক্লাচ, লাইট, ইঞ্জিন ওয়েল, ব্রেক ওয়েল, কোলান্টস কিছুদিন পর পর চেক করে নিন। ট্রাফিক আইন কিংবা পুলিশের নির্দেশনার তোয়াক্কা না করেই অধিকাংশ পথচারী চলেন নিজের মতো। দুর্ঘটনা রোধে সরকার বিপুল অর্থ ব্যয় করে ফুটওভার ব্রিজ তৈরি করেছে। অথচ এগুলো ব্যবহার করছেন না অসচেতন নগরবাসী। ফুটওভার ব্রিজ, জেব্রা ক্রসিং ও আন্ডারপাস ছাড়া রাস্তা পারাপার ঝুঁকিপূর্ণ। ক্লান্ত পথচারী, প্রবীণ, শিশু, নারী, প্রতিবন্ধী, রোগী ও মালামাল বহনকারীদের পক্ষে ফুটওভার ব্রিজ দিয়ে রাস্তা পার হওয়া কঠিন। তাদের সুবিধার জন্য জেব্রা ক্রসিং এবং চলন্ত সিঁড়ি তৈরি করা হলেও তা ব্যবহার করেন না অধিকাংশ পথচারী। অনেক সময় দেখা যায় ফুটওভার ব্রিজ ব্যবহার না করেই মা তার বাচ্চাকে নিয়ে যাচ্ছেন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে। এভাবে তিনি নিজেই শেখাচ্ছেন আইন ভাঙার নিয়ম। অন্যদিকে বেশকিছু ফুটওভার ব্রিজ দখল করে রাখে হকার, ভিক্ষুক কিংবা মাদকসেবীরা। এ কারণেও ফুটওভার ব্রিজ ব্যবহার করতে চান না পথচারীরা। কাজেই শুধু পথচারীদের দোষ দিলেই হবে না, এ ক্ষেত্রে কর্তৃপক্ষেরও দায়িত্ব রয়েছে। ১ নভেম্বর থেকে কার্যকর হওয়া নতুন সড়ক পরিবহণ আইনে সড়ক দুর্ঘটনায় প্রাণহানির জন্য সর্বোচ্চ পাঁচ বছরের শাস্তির বিধান রাখা হয়েছে। এতে বলা হয়েছে, দন্ডবিধির ৩০৪বি ধারায় যাই থাকুক না কেন, কোনো ব্যক্তির বেপরোয়া বা অবহেলাজনিত মোটরযান চালনার কারণে সংঘটিত কোনো দুর্ঘটনায় কোনো ব্যক্তি গুরুতরভাবে আহত বা নিহত হলে চালক সর্বোচ্চ পাঁচ বছরের কারাদন্ড বা সর্বোচ্চ পাঁচ লাখ টাকা জরিমানা অথবা উভয় দন্ডে দন্ডিত হবে। একই সঙ্গে এটি জামিন অযোগ্য অপরাধ হিসেবে গণ্য করা হবে। এ ছাড়া নতুন আইনে বেপরোয়া যানবাহন পরিচালনার মাধ্যমে সড়ক দুর্ঘটনা ঘটালে সর্বোচ্চ শাস্তির বিধান তিন বছর কারাদন্ড। নতুন আইনের বিভিন্ন ধারা লঙ্ঘনের দায়ে জরিমানার পরিমাণও বাড়বে। এ আইন বাস্তবায়নের পাশাপাশি সড়ক দুর্ঘটনা রোধে প্রয়োজন সাধারণ মানুষের সচেতনতা। যেমন- ফুটওভার ব্রিজ, জেব্রা ক্রসিং ও আন্ডারপাস ব্যবহার করা। মোবাইল ফোনে কথা বলার সময় রাস্তা পার না হওয়া এবং সিগন্যাল ছেড়ে দেওয়ার পর রাস্তা পার না হওয়া। তবে মানুষের অভ্যাস সহজে বদলায় না। এ জন্য শুধু পুলিশকে তৎপর হলেই হবে না, পুলিশের পাশাপাশি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, সিটি করপোরেশন, সরকারি-বেসরকারি এনজিও ও বিআরটিএসহ সবাইকে একসঙ্গে কাজ করতে হবে। সড়কে মৃতু্যর মিছিল কমাতে জনগণকে সচেতন করতে এবং নগরবাসীকে ট্রাফিক আইন মেনে চলতে উদ্বুদ্ধ করতে রাজধানীর সর্বত্র সচেতনতামূলক ক্যাম্পেইন চালানো উচিত। রাস্তা পারাপারে ফুটওভার ব্রিজ ও জেব্রা ক্রসিং ব্যবহার করতে, পরিবহণে চলাচলের সময় যাত্রীদের হাত-মাথা বাইরে না নিতে, ঝুঁকি নিয়ে ও অতিরিক্ত যাত্রী হয়ে পরিবহণে না উঠতে জনসাধারণকে সতর্ক করে দেওয়া উচিত। পরিবহণে হয়রানির ক্ষেত্রে জাতীয় হেল্প নম্বর ৯৯৯-এর মাধ্যমে পুলিশের সহায়তা নিতেও জনগণকে উদ্বুদ্ধ করতে হবে। আমাদের একটু সচেতনতাই পারে অনাকাঙ্ক্ষিত দুর্ঘটনা কমাতে। আসুন, সবাই ট্রাফিক আইন মেনে চলি, নিজের জীবন রক্ষা করি। এতে প্রতিদিনই কোথাও না কোথাও ঘটছে দুর্ঘটনা। অসচেতন পথচারী হচ্ছেন পঙ্গু, আবার কাউকে অকালেই বিদায় নিতে হচ্ছে পৃথিবী থেকে। ট্রাফিক আইন মেনে চলা একটি জাতির সভ্যতার প্রতীক, আসুন সবাই মিলে ট্রাফিক আইন মেনে চলি- ট্রাফিক আইন মেনে চলুন, নিরাপদে ঘরে ফিরুন। একটি দুর্ঘটনা, সারাজীবনের কান্না। চালক এবং আরোহী উভয় হেলমেট ব্যবহার করুন। বৈধ্য ড্রাইভিং লাইসেন্স ছাড়া গাড়ি চালাবেন না।
সাঈমা আক্তার
শিক্ষার্থী, সমাজবিজ্ঞান বিভাগ
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়