দুই দশক কাটালেন কুমিল্লা কেন্দ্রীয় কারাগারের গারদে। কিন্তু হতাশ হননি। বরং বন্দি জীবনে কঠোর পরিশ্রম ও নিষ্ঠায় সঞ্চয় করেছেন নতুন জীবনের রসদ।
দীর্ঘ ২০ বছর পর কারামুক্ত হলেন আয়েশা আক্তার ও নার্গিস আক্তার—যাবজ্জীবন দণ্ডপ্রাপ্ত এই দুই নারী। শুধু কারামুক্তিই নয়, তাদের হাতে রয়েছে যথাক্রমে ৯৮ হাজার ও ৭৩ হাজার টাকা সঞ্চয়।
সোমবার (৩০ জুন) বিকেলে দণ্ডবিধির ৫৬৯ ধারায় মুক্তি পান তারা।
কারাগার সূত্রে জানা যায়, বন্দি থাকা অবস্থায় নার্গিস আক্তার বিভিন্ন উৎপাদনমুখী কাজ—বিশেষ করে সেলাই ও কারুশিল্প—করে উপার্জন করেছেন ৭৩ হাজার টাকা। আর আয়েশা আক্তার নিজের হাতে তৈরি ফুল ও হস্তশিল্প বিক্রি করে সঞ্চয় করেন প্রায় ৯৮ হাজার টাকা।
কারা জীবনের এই দীর্ঘ সময় তারা শুধুই শাস্তির পেছনে হারাননি। বরং প্রতিটি দিন গড়েছেন আত্মমর্যাদা ও আত্মবিশ্বাসে।
তারা জানান, কারাগারে শেখা দক্ষতাগুলো কাজে লাগিয়ে মুক্ত জীবনে ফিরে ক্ষুদ্র ব্যবসা শুরুর ইচ্ছা তাদের।
কুমিল্লা কেন্দ্রীয় কারাগারের সিনিয়র জেল সুপার হালিমা খাতুন বলেন, “আমাদের চেষ্টাই থাকে বন্দিরা যেন শাস্তির পাশাপাশি কিছু শিখে সমাজে ফিরে নিজেকে গড়তে পারেন।
আয়েশা ও নার্গিস সেই চেষ্টার বাস্তব ফল। তারা নিজেদের পরিশ্রমে আত্মনির্ভর হয়েছেন।”
কারা জীবনের অন্ধকার পেরিয়ে নতুন সূর্যের আলোয় হাঁটা শুরু করেছেন দুই নারী। তাদের গল্প এখন কেবল ‘মুক্তি’র নয়—এটা নতুন করে বাঁচার, সমাজে ফিরে দাঁড়ানোর এক অনন্য অনুপ্রেরণা।