মঙ্গলবার, ১৪ মে ২০২৪, ৩১ বৈশাখ ১৪৩১

শিক্ষাপদ্ধতি : প্রজন্ম সুরক্ষার নতুন সমীকরণ

বহুমাত্রিক প্রকাশ ও আত্মনির্ভরশীল জাতি প্রতিষ্ঠার টেক্সটবুক হচ্ছে নতুন শিক্ষাপদ্ধতি। একজন মানুষের কথা, মন-মননের ভাষা হচ্ছে শিল্পকর্ম ও চিন্তাকর্ম। জীবনে বৈচিত্র্য তৈরিতে বৈচিত্র্যময় আয়োজন দরকার। যাপিত জীবনের জন্য একটা রোডম্যাপ হচ্ছে নতুন শিক্ষা পদ্ধতি।
শাহমুব জুয়েল
  ৩০ জানুয়ারি ২০২৪, ০০:০০
শিক্ষাপদ্ধতি : প্রজন্ম সুরক্ষার নতুন সমীকরণ

জাতি হিসেবে আমরা আপসহীন। ছায়া ও মায়া বাঙালির নিত্যসঙ্গী। নতুনত্বের প্রতি আমাদের মোহ এবং স্বপ্ন-সৃষ্টির প্রতি প্রবল আগ্রহ কাজ করে। জাতিগত নাম বাঙালি। নাড়ি ছেদ করে শব্দটি বের হয়ে মিহিস্বর তৈরি করে। শির দাঁড়ায় সৃজনের পথে অগ্রসর হয়। কেননা সৃষ্টিশীলতাই প্রধান ধর্ম। শিরশির করে দেহের ধমণী। আবেগের বিহ্বল তৈরি হয় সবই আবেগীয় ও ধমণীগত, অন্যদিকে বাঙালির মনের চৌকাঠে জেদ আছে। প্রবল জেদ- যা চুম্বকীয়। আকর্ষণ করে এবং সঙ্গবদ্ধ হতে উৎসাহ যোগায়। উৎসাহ তৈরির পদ্ধতিই নতুন শিক্ষাপদ্ধতি। বাঙালির বিদ্যমান সংকট এসব একদিনের নয় সহস্র বছরের আর্দ্র স্বভাব। বহুপক্ষীয় মানুষ হলেও ঐতিহ্যগতভাবে নতুন কিছু করার ইচ্ছে ও কৌশল বারে বারে রপ্ত করেছে। কারণ নিজস্ব একটি ভাষা আছে। যে ভাষা রক্তসোধিত ও জীবনত্যাগের মাধ্যমে পাওয়া যায়। এই ভাষার সম্মুখে দাঁড়িয়ে নতুন নতুন শিখন-শেখানো পদ্ধতিও তৈরি হচ্ছে। প্রধান কারণ হচ্ছে ভিত্তি তৈরি এবং কাঠামোগত পদ্ধতিতে পরিবর্তন আনয়ন করা। যাতে দ্রম্নত ও দীর্ঘমেয়াদি ফলপ্রসূ ফলাফল লাভ করা যায়। তথাকথিত গদবাঁধা নিয়ম থেকে বের হয়ে নতুন কিছু সম্পাদন করা। সময় নতুনের দাবি রাখে। কারণ নজরুল তো বলেছেন, 'তারুণ্যের কাজ নতুন কিছু করা।' নতুনত্বের সন্ধানে থাকে এদেশের মানুষ।

বাংলাদেশ এখন সম্ভাবনা নয় সমৃদ্ধির উঠানে সমাধৃত। চারদিকে উন্নয়ন, আধুনিক সিঁড়ি, গতিবেগ, জলে-গভীরেও সড়কের অগ্রগতি। সেইমুহূর্তে শিক্ষাপদ্ধতি কেন পিছিয়ে থাকবে। কারণ উন্নতির প্রধান সহায়ক শিক্ষা। ১১৮টি গবেষণার মধ্য দিয়ে বিশ্বের উন্নত ও রুচিশীল দেশের সঙ্গে একাত্মতা করে নিজ মেধার মাধ্যমে শক্তিমান রূপরেখা তৈরি করেছে। নতুন পদ্ধতি নতুনভাবে পরিচয় করাতে নানামুখী চাপ কিংবা চেপে ধরার অপচেষ্টা বিদ্যমান। কিন্তু যিনি নিরলস শ্রম দিয়ে পরামর্শক হয়ে দায় ও উদারচিন্তা সঞ্চয় করে জাতির জন্য কাজ করছেন তিনি দুঃসাহসিক- যা তার আত্মবিশ্বাস ও সফলতার কুসুমকলি। জাতীয় উন্নতি মানে ১৭ কোটি মানুষের উন্নতি তথা বাংলাদেশের উন্নতি। দেশকে প্রধানমন্ত্রী উন্নত বিশ্বে সারিবদ্ধ করতে চান।

তা করার লক্ষ্যে শিক্ষার সুবিস্তার, প্রসারণ, বর্তমান বাজারের সঙ্গে মিল রেখে শিক্ষকদের বেতনভাতা বৃদ্ধি ও মূল্যায়ন দরকার। পাওয়া ও চাওয়ায় মিল থাকলে অভীষ্ট লক্ষ্যে পৌঁছা সহজ হয়। সেক্ষেত্রে বর্তমান সরকার প্রধানের সদিচ্ছা রয়েছে। সদিচ্ছা থাকলে সবই সম্ভব। আমরা জাতি হিসেবে মুঠোবদ্ধ ও সহনশীল। অতএব, জয় সুনিশ্চিত।

জাতীয় পরিবেশে নিজের অবস্থান তৈরি করা সামাজিক দায়বদ্ধতা। সেক্ষেত্রে কর্ম ও কর্মযোগ্যতা এবং পেশাগত দক্ষতা অপরিসীম। ছোটবেলা থেকে সুকুমার বৃত্তি তৈরি করতে না পারলে তা আদৌ সম্ভব নয়। মন ও মননে দেশপ্রেম, আত্মমর্যাদা, কাজের মধ্য দিয়ে বিশ্বের সঙ্গে টেক্কা দিয়ে নিজের অবস্থান তৈরি করতে হবে। এ বিষয়গুলো সম্পর্কে মনোভাব তৈরি করতে গড়ে উঠতে সাহায্য করবে বর্তমান শিক্ষাপদ্ধতির নতুন কারিকুলাম। যে কোনো সময় যে কোনো পদ্ধতি ব্যবহার করতে সক্ষম হয়। উদ্ভূত পরিস্থিতি এবং ঝুঁঁকি মোকাবিলা করতেও সচেষ্ট থাকতে পারে যদি উদারতা থাকে। এর বিকল্প নেই। কারণ বাঙালি জাতি হিসেবে পিছিয়েপড়া, হীনমনা, ঝরেপড়া জনগোষ্ঠী। দায়বদ্ধতা সম্পর্কে অসচেতন। তবে মানুষ হিসেবে তাড়নাবোধ রয়েছে- ভেতরে একটি ঝড় সৃষ্টি করতে পারলে, দায়বদ্ধতা সম্পর্কে জাগ্রত করতে পারলে আত্মউন্নয়ন সম্ভব।

বিশ্ববাজারে নিজেদের তুলে ধরা দরকার, তাতে পুঁজি তৈরি করা, পেশা সম্পর্কে সচেতনতা তৈরি করা। শুধু চাকরির পেছনে সময় ব্যয় না করে উদ্যোক্তা তৈরি করা। সংখ্যা বৃদ্ধি পেলে দারিদ্র্যতাসীমা নিচে নেমে আসবে। স্বাবলম্বন হয়ে আত্মমর্যাদাবান জাতি হিসেবে গড়ে উঠবে দলবদ্ধ মানবগোষ্ঠী। বহির্বিশ্বের উন্নতি দেখে নিজেদের ছোটো ভাবার শঙ্কা থেকে মুক্ত হবে। বাঙালি সংগ্রামপ্রিয় জাতি। কাজ ও শ্রমপ্রিয় করা গেলে নিজের ভিত্তি প্রস্তুত হবে। মেঘ কেটে যাবে উদিত হবে নতুন সূর্য। ভিত্তি প্রস্তুতের পদ্ধতি উৎসাহ ও সাহস শেখানো কার্যক্রম রয়েছে এই নতুন পদ্ধতিতে। তাতে নিজের মানসিক দুর্বলতা কাটিয়ে নীতিবান ও আদর্শ জাতি হিসেবে তৈরি করা সম্ভব। বিশ্ব যখন পরিবর্তনশীল তখন পিছিয়ে থাকার কোনো প্রশ্নই নেই, ওঠে না। সময়ের সঙ্গে বস্তুবাদী দর্শনচর্চা করে আত্ম সমন্বয় করতে হবে। বিশ্বাস থাকবে আমরা পারব, আমাদের পারার সক্ষমতা রয়েছে। এটিই চলার প্রধান শক্তি।

ক্যারিয়ার জাতির উত্তরণের সোপান কিংবা সিঁড়ি। ক্যারিয়ার তৈরির ও সচেতনতা সৃষ্টির সুযোগ রয়েছে। সোজাকথা গতানুগতিক ধারা থেকে বাস্তববাদিতা শিক্ষা নিয়ে এগোচ্ছে নতুন পদ্ধতি। মাথা আর নিচু নয় ঊর্ধ্বমুখী। বর্তমান প্রেক্ষাপট বিবেচনায় সে ধরনের দাবি রাখে। বলাবাহুল্য, বর্তমান শিক্ষাধারা আত্মপ্রস্তুতির সুপরিকল্পিত উপায় ও পদ্ধতি।

ধর্ম-বিশ্বাস ও মূল্যবোধের গুরুত্ব পরস্পর সংযুক্ত। যে ধর্মের মানুষ যা বিশ্বাস করে তা প্রতিপালন, রীতিনীতি জানা ও প্রয়োগের ক্ষেত্রে সচেতনতা সৃষ্টির সুযোগ বিদ্যমান। নিজেকে সৎ, নিবেদিত, সহনশীল বিবেকবান হিসেবে তৈরা করা। ধর্মের কাজ সুখী-সুন্দর সমাজব্যবস্থা তৈরি করা, এসবের স্থিতিজ্ঞান রয়েছে। পাশাপাশি দরকার ধর্মের উৎস, পালনের পদ্ধতি সম্পর্কে জানা, এসবের ইঙ্গিতও যথোপযুক্ত। সঠিক ধর্মশিক্ষার অভাবে মানুষের মনে অন্ধত্ব ও উন্মাদনা যাতে মাথাচাড়া দিতে না পারে; তাই মূল ও ধর্মীয় সৌন্দর্যচর্চায় উদ্বুদ্ধ করা দরকার হয়। নতুন শিক্ষা রূপরেখায় মুখস্তবিদ্যা নয়, বাস্তব অনুশীলনের পদ্ধতি রয়েছে। যাতে ভুল থেকে মুক্ত হয়ে সঠিক পদ্ধতি সম্পর্কে ধারণা পেতে পারে।

ধর্ম মানুষকে মানবিকতা শিক্ষা দেয়। নীতি ও আদর্শের কথা শুধায়। দু'টি বিষয় জীবনের বড়ো প্রাপ্তি। প্রাপ্তি সচেতনা তৈরি কৌশল রয়েছে ধর্মীয় অনুশাসনে। একজন শিক্ষার্থী আগে সালাত কত প্রকার মুখস্ত করত, এখন সালাত পড়ার অনুশীলনের মাধ্যমে জানে, সালাত আদায়ের উপায় ও পদ্ধতি জানতে পারে বাস্তবজ্ঞানে। এছাড়া কীভাবে আদায় করতে হয় এবং সালাত আদায় করার কারণে কোন কোন খারাপ কাজ থেকে রক্ষা পাওয়া যায়। অন্য ধর্মের প্রতি সহিষ্ণু হয়ে ওঠে। এক কথায়, পদ্ধতিতেও বাস্তববাদী শিক্ষার মাধ্যমে পরমতসহিষ্ণু জাতি তৈরির দীক্ষা রয়েছে।

স্বাস্থ্য সচেতনা মানুষের জীবনে অপরিহার্য। মন ভালো রাখতে স্বাস্থ্য ঠিক থাকা জরুরি। মন ভালো করে সংস্কৃতি শরীর ভালো রাখে স্বাস্থ্য সচেতনতা। এসব ঠিক রাখার জন্য বাস্তব শিক্ষা গুরুত্বপূর্ণ। শরীর-মন এক না থাকলে কখনো পরিপাটি জীবন গঠন সম্ভব হয় না। পরিপাটি জীবন সুন্দর মনন তৈরি করে। মন ও মনন জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে প্রয়োজন। নিজের শারীরিক গঠন ও বৃদ্ধির সময় সচেতনতা তৈরির মহৎ চিন্তা রয়েছে নতুন রূপরেখায়। যাতে নিজেই নিজের সমস্যা সমাধান করতে পারে। কারো দ্বারস্থ হওয়ার চেয়ে নিজে নিজে সমাধান করতে পারা দক্ষতা, দক্ষ নাগরিক তৈরি করা দরকার। যাতে নিজের অবস্থা অনুধাবণ করতে পারে। সামাজিক বুদ্ধিমত্তার সঙ্গে লড়াই করতে পারে। যখনই শারিরীক দুর্বলতা ত্রম্নটি দেখা দেয় তখনই নিজ সিদ্ধান্তের মাধ্যমে সমাধান করতে পারে। কেননা সমাধানই আত্মশুদ্ধির পথ।

শিল্প ও সংস্কৃতি জাতির মেরুদন্ড সোজা রাখার উপায়। এসব চর্চার মাধ্যমে মন ও মননে দেশপ্রেম উদারতা ও সহনশীলতা এবং সম্প্র্রীতি তৈরি হয়। এসব জানা অভিনব কৌশল রয়েছে বিদ্যমান পদ্ধতিতে। আমরা জাতি হিসেবে কেমন, আমাদের উৎস কোথায়, ইতিহাস ও ঐতিহ্যগতভাবে আমাদের কী রয়েছে, কারা আমাদের শত্রম্ন-মিত্র কিংবা সহযোগী ছিলেন। বরাবর ইতিহাস ও শিল্পসচেতনা রয়েছে। কারণ জাতীয় উন্নতির ক্ষেত্রে শিল্প ও সংস্কৃতি জানা নীতিগত বিষয়। আমাদের প্রজন্ম পরম্পরায় তা উপস্থাপন করা না হলে মূলকে ভুলে যাবে। যে জাতি মূলকে ভূলে যায় সে জাতি কখনো আদর্শবান ও ঋদ্ধ হতে পারে না। খোঁড়া ও বিকলাঙ্গ নপুংসক হয়ে ওঠে। তাই জীবনদর্শনের জন্য শিল্প ও সংস্কৃতি জানা দরকার আছে। উন্নত বিশ্বের সঙ্গে আমাদের সমন্বয় সাধনে তা গুরুত্বপূর্ণ। আমাদের প্রজন্ম গড়ে উঠবে আমাদের সংস্কৃতির ওপর নচেৎ বিদেশি সংস্কৃতি মাথাছাড়া দিয়ে উঠবে- উঠেছেও। আমরা রোধ করতে পারিনি। কারণ আমরা তাদের তা শেখাচ্ছি না- যা শুদ্ধ ও অতীত বিষয় অর্থাৎ সংস্কৃতি। বহির্মুখী চিন্তা গলদকরণ করাচ্ছি, আমরা নিজেদের সংবেদনশীল করতে হবে। অন্যদের সংস্কৃতি জানব, বুঝব কিন্তু নিজেকে না জেনে নয়। নিজেকে জানা মানে নিজের সংস্কৃতি সম্পর্কে জানা ও জানান দেওয়া। নচেৎ আমরা ভুলে যাব আমাদের সংগীত, লোকগাঁথা এবং পরম্পরা লোক ইতিহাস ও ঐতিহ্য। পূর্বেকার জনগোষ্ঠীর কৃষ্টি ও সংস্কৃতি ভুলে যাব, যা কাম্য নয়। প্রত্যেক নাগরিকের মাঝে আমাদের ঐতিহ্যগত সংস্কৃতি সম্পর্কে ধারণা থাকতে হবে। বিশ্বে আমাদের সংস্কৃতিও স্থান দিতে চাই। চাওয়া ও পাওয়ার সমন্বয় সাধনে পদ্ধতির বিকাশ রয়েছে নতুন শিক্ষা রূপরেখায়।

প্রতিযোগিতামূলক বিশ্বে টিকে থাকার প্রধান মাধ্যম হচ্ছে নতুনভাবে নিজেকে তৈরি করা। যে যত নতুনভাবে, সৃজনশীলভাবে উদ্দীপনা তৈরি করবে তারা তত তাড়াতাড়ি আত্মনির্ভরশীল হতে পারবে। নিজেদের মজবুতভাবে প্রস্তুত করতে পারবে। প্রস্তুতের আগে আরেকটি প্রস্তুতি দরকার। ইতোমধ্যে নতুন কারিকুলামের মাধ্যমে প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে। সময় এখন বাস্তব আঙ্গিকে পরিবেশন করা। শুধু তা নয়-নিবেদিতভাবে ছড়িয়ে দেওয়া। বাধা প্রতিবন্ধকতা থাকবে, সবকিছুকে সুনিপুণভাবে মোকাবিলা করা। কঠিন ও ঝড়-বিক্ষুব্ধ মুহূর্তে যারা এগিয়ে যায় তারা সাহসী ও নির্ভীক। তাদের মূল্য ও সুনাম পৃথিবীতে অসীম। জাতি হিসেবে বাঙালির সাহসিকতা অতুলনীয়, কেবল স্পৃহা দরকার। বর্তমান পদ্ধতিতে এসব বস্তুনিষ্ঠ গতিপ্রকৃতি রয়েছে। বেড়ে ওঠার জলতৃষ্ণা রয়েছে। কারণ যাদের রক্তিম ইতিহাস থাকে তাদের পথরেখা মসৃণ হয়ে ওঠে। ক্ষণপ্রভা হয়ে ভর করে দুঃসাহসিক বিমূর্ত যন্ত্রণা। এই পদ্ধতি থেকে বিচু্যত হওয়ার সুযোগ নেই। আমরা এগিয়ে যেতে চাই, উন্নতির কাতারে সামিল হতে চাই, তাহলে এই পদ্ধতির যথাযথ প্রয়োগ অতীব গুরুত্বপূর্ণ।

নতুন শিক্ষা রূপরেখার পরতে পরতে গবেষণা ও সূক্ষ্ণচিন্তার চারণ রয়েছে- যা সুস্পর্ষ্ট। একটি মোড়কে গোটা সমাজ, পরিবার, স্বাস্থ্য উদ্যোক্তা ও সামাজিক অবস্থান তৈরির দীর্ঘ পরিকল্পিত বাস্তবতা সদৃশ্যমান। সমালোচনা সহজ কিন্তু মহৎ আলোচনা কঠিন। কারণ সেক্ষেত্রে আত্মোপলব্ধি থাকা লাগে। যারা কাজটি করেছেন তাদের চিন্তা, ধ্যান ও মননে উদারতা, দেশপ্রেম, পরমত, নীতিগত সিদ্ধান্ত, ধর্মীয় অনুভূতি এবং সমন্বিত প্রচেষ্টা বিদ্যমান। মহাকালীক চিন্তা ও মানসিকতা এবং দূরদৃষ্টি ছিল বলেই সূক্ষ্ণ চাতুর্যে তা উপস্থাপন করেছেন। গাবড়ানোর কিছু নেই নতুন কিছু মানিয়ে নিতে একটু বিড়ম্বনা হবে, যখন বোধোদয় হবে তখন নিন্দুকেরা প্রশংসা করবে তাতে বিন্দুমাত্র ভুল নেই। ফাঁকা আওয়াজ দিয়ে বিভ্রান্ত করা যায়, কিন্তু গতিপ্রকৃতি পরিবর্তন করা যায় না। যদি নিজের প্রতি আত্মবিশ্বাস ও সদিচ্ছা থাকে। এসবের কমতি নেই শুধু গতিবেগ আরও বেগবান করা প্রয়োজন। তাতে আশানুরূপ সাফল্য অর্জন করা যাবে।

বহুমাত্রিক প্রকাশ ও আত্মনির্ভরশীল জাতি প্রতিষ্ঠার টেক্সটবুক হচ্ছে নতুন শিক্ষাপদ্ধতি। একজন মানুষের কথা, মন-মননের ভাষা হচ্ছে শিল্পকর্ম ও চিন্তাকর্ম। জীবনে বৈচিত্র্য তৈরিতে বৈচিত্র্যময় আয়োজন দরকার। যাপিত জীবনের জন্য একটা রোডম্যাপ হচ্ছে নতুন শিক্ষা পদ্ধতি।

রূপরেখা ছাড়া জীবন অচল। সচলতা সৃষ্টির জন্য নৈতিকতার বিকল্প নেই। এক্ষেত্রে সৃষ্টিশীলতা প্রধান। অত্যন্ত নিঁখুত ও পরিপাটি বিষয়-আশয় রয়েছে নতুন পদ্ধতিতে। একটি সুন্দর, শৃঙ্খল ও আত্মমর্যাদাসম্পন্ন জাতি গঠনে এ পদ্ধতি সময়োপযোগী বিপস্নব তথা শিক্ষাবিপস্নব। বিপস্নবে বাধা আসে, কারণ সচেতনতা ও বুঝতে না পারা। সোজা কথা হলো বোধোদয়ের অক্ষমতা। সক্ষমতা ও জীবনে তড়িৎগতি তৈরি করতে এ নতুন শিক্ষা পদ্ধতির বিকল্প নেই। এখানে যত্ন রয়েছে, চিন্তার অবকাশ রয়েছে, সৃজনের মাঠ রয়েছে, গঠনের নিপুণতা রয়েছে। সহজ ও সরল পদ্ধতির মাধ্যমে বাস্তবজীবনে বেঁচে থাকা নয় সফলভাবে বাঁচিয়ে রাখার পদ্ধতি রয়েছে বিদ্যমান। কোথাও কোনো দাগ নেই, খোঁচাখুঁচি নেই, বরং ধর্মীয় অনুভূতির প্রতি শ্রদ্ধাশীল এবং মানব পৃষ্ঠাজুড়ে মানবতা শিক্ষার অভিনব কৌশল বিদ্যমান।

শাহমুব জুয়েল : শিক্ষক ও প্রাবন্ধিক

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে