বুধবার, ১৫ মে ২০২৪, ১ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১

বায়ুদূষণ

রোধে উদ্যোগ নিতে হবে
নতুনধারা
  ০৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ০০:০০
বায়ুদূষণ

কোনোভাবেই দূষণমুক্ত হচ্ছে না রাজধানী ঢাকা। এ প্রসঙ্গে বলা দরকার, বিভিন্ন সময়ে প্রকাশিত খবরে বায়ুদূষণ সংক্রান্ত যেসব তথ্য উঠে আসে, তাও অত্যন্ত উদ্বেগজনক। প্রসঙ্গত, পত্রপত্রিকায় প্রকাশিত খবরের মাধ্যমে জানা যাচ্ছে যে, বিশ্বের ১০০ শহরের মধ্যে বৃহস্পতিবার সকাল ৯টায় বায়ুদূষণে রাজধানী ঢাকার অবস্থান ছিল শীর্ষে। আইকিউএয়ারের (এয়ার কোয়ালিটি ইনডেক্স) বাতাসের মানসূচকে ঢাকার স্কোর ছিল ৩২৩। এই স্কোরকে 'ঝুঁকিপূর্ণ' বলে ধরা হয়। তথ্য মতে, এদিন বিশ্বে বায়ুদূষণে দ্বিতীয় অবস্থানে ছিল ঘানার আক্রা। এই শহরের স্কোর ছিল ১৯৭। আর ১৭৬ স্কোর নিয়ে তৃতীয় অবস্থানে ছিল নেপালের কাঠমান্ডু।

উলেস্নখ্য, বায়ুদূষণের এই পরিস্থিতি নিয়মিত তুলে ধরে সুইজারল্যান্ডভিত্তিক প্রতিষ্ঠান আইকিউএয়ার। বাতাসের মান নিয়ে তৈরি করা এই লাইভ বা তাৎক্ষণিক একিউআই সূচক একটি নির্দিষ্ট শহরের বাতাস কতটা নির্মল বা দূষিত, সে সম্পর্কে মানুষকে তথ্য দেয় ও সতর্ক করে। আইকিউএয়ারের দেওয়া রোববারের তালিকায় বলা হয়েছে, ঢাকার বাতাসে অতিক্ষুদ্র বস্তুকণাই (পিএম ২.৫) দূষণের প্রধান উৎস। এদিন ঢাকার বাতাসে যতটা এই বস্তকণা ছিল, তা বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডবিস্নউএইচও) মানদন্ডের চেয়ে ৩৪ গুণের বেশি।

উলেস্নখ্য যে, আইকিউএয়ারের মানদন্ড অনুযায়ী, স্কোর ৫১-১০০ হলে তাকে 'মাঝারি' বা 'গ্রহণযোগ্য' মানের বায়ু হিসেবে বিবেচনা করা হয়। ১০১-১৫০ স্কোরকে 'সংবেদনশীল গোষ্ঠীর জন্য অস্বাস্থ্যকর' ধরা হয়। স্কোর ১৫১-২০০ হলে তা 'অস্বাস্থ্যকর' বায়ু। স্কোর ২০১-৩০০ হলে তাকে 'খুবই অস্বাস্থ্যকর' বায়ু ধরা হয়। ৩০১ থেকে তার ওপরের স্কোরকে 'দুর্যোগপূর্ণ' বা 'ঝুঁকিপূর্ণ' ধরা হয়।

লক্ষণীয়, এবারে আইকিউএয়ারের (এয়ার কোয়ালিটি ইনডেক্স) বাতাসের মানসূচকে ঢাকার স্কোর ছিল ৩২৩। এই স্কোরকে 'ঝুঁকিপূর্ণ' বলে ধরা হয়। ফলে এটি আমলে নিতে হবে। এছাড়া স্মর্তব্য যে, রাজধানী ঢাকার বায়ুদূষণ সংক্রান্ত উদ্বেগ বিভিন্ন সময়ে সামনে এসেছে। এর আগে এমনটিও আলোচনায় এসেছিল যে, বায়ুদূষণের জন্য সবচেয়ে বেশি দায়ী ইটভাটাগুলো। পরিবেশ অধিদপ্তরের নির্মল বায়ু ও টেকসই পরিবেশ প্রকল্পের গবেষণায় উঠে এসেছিল, সারাদেশে ইটভাটা আছে প্রায় ৮ হাজার। আর ঢাকার আশপাশের এলাকাগুলোতে রয়েছে সাড়ে ৭০০টির বেশি। এ ক্ষেত্রে উলেস্নখ্য, ইটভাটাগুলো প্রতি মৌসুমে ২৫ লাখ টন কয়লা ও ২২ লাখ টন জ্বালানি কাঠ পোড়ায়। ইটভাটার দূষণে ৮৮ লাখ ৮৬ হাজার টন গ্রিন হাউস গ্যাস নির্গত হয়। ঢাকার বায়ুদূষণের জন্য ইটভাটা প্রায় ৫৮ শতাংশ দায়ী বলেও তথ্য উঠে এসেছিল। অন্যদিকে, বায়ুদূষণের কারণ হিসেবে নির্মাণকাজ, যানবাহন, সড়ক ও মাটি থেকে সৃষ্ট ধুলার কারণে, বিভিন্ন জিনিসপত্রসহ পস্নাস্টিক পোড়ানোসহ বিভিন্ন কারণ উঠে এসেছে নানা সময়ে। আমরা মনে করি, দূষণের কারণগুলো আমলে নিয়ে দূষণমুক্ত করতেও যথাযথ পদক্ষেপ জরুরি।

আমরা বলতে চাই, সামগ্রিক পরিস্থিতি যেমন আমলে নিতে হবে, তেমনি বায়ুদূষণের ভয়াবহতা বিশ্লেষণপূর্বক প্রয়োজনীয় উদ্যোগও অব্যাহত রাখতে হবে। মনে রাখা দরকার, বায়ুদূষণে প্রাণহানি শুধু নয়, নানা ধরনের অসুখ- বিসুখসহ জনসাধারণের জীবনে বিরূপ পরিস্থিতি সৃষ্টি করে। এটাও আমলে নেওয়া জরুরি, একদিকে বাতাসের এ মান 'ঝুঁকিপূর্ণ' এটি যেমন উঠে এসেছে, তেমনি ঢাকার বাতাসে অতিক্ষুদ্র বস্তুকণাই দূষণের প্রধান উৎস, এটাকেও এড়ানো যাবে না। আমরা বলতে চাই, সামগ্রিক পরিস্থিতি যেমন আমলে নিতে হবে, তেমনি বায়ুদূষণের ভয়াবহতা বিশ্লেষণপূর্বক প্রয়োজনীয় উদ্যোগও অব্যাহত রাখতে হবে। মনে রাখা দরকার, বায়ুদূষণে প্রাণহানি শুধু নয়, নানা ধরনের অসুখ বিসুখসহ জনসাধারণের জীবনে বিরূপ পরিস্থিতি সৃষ্টি করে। এটাও আমলে নেওয়া জরুরি, একদিকে বাতাসের এ মান 'ঝুঁকিপূর্ণ' এটি যেমন উঠে এসেছে, তেমনি বৃহস্পতিবার ঢাকার বাতাসে অতিক্ষুদ্র বস্তুকণাই দূষণের প্রধান উৎস, এটাকেও এড়ানো যাবে না।

সর্বোপরি বলতে চাই, এর আগে জানা গিয়েছিল বায়ুদূষণ বিশ্বের সবচেয়ে বড় পরিবেশগত স্বাস্থ্য হুমকি। ফলে, বায়ুর মানের বিষয়টি আমলে নিতে হবে। বায়ুদূষণের কারণে বাচ্চাদের স্বল্প ও দীর্ঘস্থায়ী রোগব্যাধি হয়। ফুসফুসে ক্যানসার, হৃদরোগ, লিভার ও কিডনিতে জটিলতা বাড়তে পারে এমন বিষয়ও এর আগে উঠে এসেছে। ফলে ঢাকার বায়ুদূষণ সংক্রান্ত সামগ্রিক পরিস্থিতি আমলে নিয়ে বায়ুদূষণ রোধে সর্বাত্মক প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখতে হবে। সার্বিক পরিস্থিতি আমলে নিয়ে বায়ুদূষণ রোধে যথাযথ পদক্ষেপ নিশ্চিত হোক এমনটি প্রত্যাশিত।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়
X
Nagad

উপরে