শুক্রবার, ০৩ মে ২০২৪, ১৯ বৈশাখ ১৪৩১

বোতলজাত সয়াবিন তেলের দাম বেড়েছে বাজার নিয়ন্ত্রণ করতে হবে

নতুনধারা
  ২০ এপ্রিল ২০২৪, ০০:০০
বোতলজাত সয়াবিন তেলের দাম বেড়েছে বাজার নিয়ন্ত্রণ করতে হবে

বোতলজাত সয়াবিন তেলের দাম প্রতি লিটারে ৪ টাকা বাড়ল। আর খোলা তেলের দাম প্রতি লিটারে ২ টাকা কমানোর সিদ্ধান্ত হয়েছে।

বৃহস্পতিবার সচিবালয়ে এক ব্রিফিংয়ে বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী আহসানুল ইসলাম এ কথা জানিয়েছেন। প্রতিমন্ত্রী বলেন, দাম বাড়ার নতুন এই সিদ্ধান্ত মিলগেট (পাইকারি বিক্রেতারা যে দামে কিনবেন) থেকে এখন কার্যকর হবে। নতুন সিদ্ধান্ত অনুসারে প্রতি লিটার বোতলজাত তেলের দাম ১৬৩ টাকা থেকে বেড়ে দাঁড়াল ১৬৭ টাকা। ৫ লিটার বোতলজাত তেলের দাম ৮০০ টাকা থেকে বেড়ে দাঁড়াল ৮১৮ টাকা। প্রতি লিটার খোলা তেলের দাম ১৪৯ টাকা থেকে কমে দাঁড়াল ১৪৭ টাকা। এর আগে সয়াবিন তেলের দাম লিটারে ১০ টাকা বাড়ানোর ঘোষণা দেন মিল মালিকরা। গত মঙ্গলবার থেকে নতুন এই দাম কার্যকরের ঘোষণা দিয়ে বাণিজ্য সচিব বরাবর চিঠি দেয় কোম্পানিগুলো সংগঠন বাংলাদেশ ভেজিটেবল অয়েল রিফাইনার্স অ্যান্ড বনস্পতি ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যাসোসিয়েশন। সেদিন সয়াবিনের মূল্য বৃদ্ধির 'সুযোগ নেই' বলে জানিয়েছিলেন বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী আহসানুল ইসলাম। তারপরও বোতলজাত সয়াবিন তেলের দাম বৃদ্ধি করা হলো।

অতীতে আমরা দেখেছি অধিকাংশ ক্ষেত্রেই দেশের ব্যবসায়ীরা সরকারি নির্দেশনা মানতে চান না। ফলে তারা ইচ্ছে মতো পণ্যের দাম বাড়িয়ে দেন। এতে একদিকে যেমন ভোক্তা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন তেমনি বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখানো হয় সরকারি নির্দেশনাকেও। এটা সত্য, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের পর থেকে সৃষ্ট উচ্চ মূল্যস্ফীতিতে বিপাকে পড়েছে সাধারণ মানুষ। হাতে নগদ টাকা কমে যাওয়ায় ক্রয়ক্ষমতাও কমে গেছে। ডলারের বিপরীতে স্থানীয় মুদ্রার ব্যাপক অবমূল্যায়ন ও উচ্চ মূল্যস্ফীতির কারণে আয়ের সব টাকা খরচ হয়ে যাচ্ছে জীবনধারণে। যার প্রভাব পড়েছে সর্বত্র।

আমরা মনে করি, ব্যবসায়ীদের কাছে জিম্মি হলে চলবে না। তাদের কঠোরভাবে নিয়ন্ত্রণ করতে হবে। প্রয়োজনে ভ্রাম্যমাণ আদালতের সংখ্যা বাড়াতে হবে। এরা জনগণের স্বার্থের দিকে কখনোই নজর দেয় না। এরা বাজারসন্ত্রাসী। কীভাবে অসৎ উপায় অবলম্বন করে দ্রম্নত ধনী হওয়া যায় সেটাই তাদের প্রধান উদ্দেশ্য। বাজারে মূল্য তালিকা টাঙিয়ে যথাযথ তদারকির ব্যবস্থা করতে হবে। দেশের অসহায় জনগণকে জিম্মি করে তারা পকেট কাটবে এটা কোনোভাবেই মেনে নেওয়া যায় না। এর আগে তারা চাল, চিনি, ভোজ্যতেল ও পেঁয়াজের বাজারে অস্থিরতা সৃষ্টি করেছিল। লবণের ক্ষেত্রেও চেষ্টা চালিয়েছিল, সফল হয়নি। এবার আবার তারা বোতলজাত সয়াবিন তেলের দাম প্রতি লিটারে ১০ টাকা বৃদ্ধি করতে চেয়েছিল। এর চেয়ে দুঃখজনক ঘটনা আর কী হতে পারে।

বাজার নিয়ে অতীতে অনেক পদক্ষেপ ও পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে, প্রচুর লেখালেখি হয়েছে কোনো কাজ হয়নি। বিক্রেতাদের মানসিকতার কোনো পরিবর্তন হয়নি। এটা সত্যিই দুর্ভাগ্যজনক। আমরা মনে করি, বিক্রেতাদের মানসিকতার পরিবর্তন যতদিন না ঘটবে ততদিন নিত্যপণ্যের বাজার অস্থির থাকবেই এবং দেশের জনগণও তাদের কাছে জিম্মি থাকবে। এ ব্যাপারে সরকারের কার্যকর কঠোর উদ্যোগই কেবল পারে জনগণকে হয়রানি ও দুর্ভোগ থেকে মুক্তি দিতে।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে