সোমবার, ০৬ মে ২০২৪, ২৩ বৈশাখ ১৪৩১

তীব্র গরমে বাড়ছে রোগ

সতর্ক ও সচেতন হতে হবে
নতুনধারা
  ২২ এপ্রিল ২০২৪, ০০:০০
তীব্র গরমে বাড়ছে রোগ

তাপপ্রবাহে পুড়ছে প্রায় সারাদেশ। জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবে বিশ্বের অন্যান্য দেশের মতো চরমভাবাপন্ন আবহাওয়ার মুখোমুখি হচ্ছে বাংলাদেশের প্রকৃতি ও মানুষ। গ্রীষ্মে বাংলাদেশে প্রচন্ড গরমের দিনের সংখ্যা বাড়ছে। দেশজুড়ে চলা তাপপ্রবাহের কারণে দেশের সব স্কুল-কলেজ সাত দিনের ছুটি ঘোষণা করেছে সরকার। গরমে তিনগুণ রোগী হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে। জ্বর, ডায়রিয়া, নিউমোনিয়া, টাইফয়েড, হিটস্ট্রোকসহ গরমজনিত বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হচ্ছে মানুষ। এতে হাসপাতালে বাড়ছে রোগীর ভিড়। অতিরিক্ত রোগীর চাপ সামলাতে হিমশিম খাচ্ছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। সব বয়সের মানুষের কষ্ট হলেও এই গরম সবচেয়ে বেশি কাবু করেছে শিশুদের। হাসপাতালে ভর্তি রোগীর প্রায় ৭০ শতাংশই শিশু। তাই গরমে সুস্থ থাকতে অপ্রয়োজনে বাড়ির বাইরে না যাওয়া, সুতি কাপড় পরা এবং বেশি বেশি পানি পান করার পরামর্শ দিচ্ছেন চিকিৎসকরা। এটা সত্য, শিশুরা বড়দের মতো আবহাওয়ার দ্রম্নত পরিবর্তনের সঙ্গে নিজেকে মানিয়ে নিতে পারে না। গরমের সময় সাধারণত জ্বর, ডায়রিয়া বা পাতলা পায়খানা, ডিহাইড্রেশন; অর্থাৎ শরীরে পানিশূন্যতা বা স্বল্পতা রোগী বেশি দেখা যায়। গরমের এ পরিস্থিতিতে ফলের শরবত, ডাবের পানি, লেবুর শরবত, স্যালাইন, গস্নুকোজ ও পুষ্টিকর রসাল ফল বেশি করে খেতে হবে। এতে শরীর থেকে ঘাম হয়ে বের হয়ে যাওয়া পানির চাহিদা পূরণ হবে। তবে গরমের কারণে ঠান্ডা পানি, বরফ কিংবা রাস্তার পাশের বিভিন্ন ধরনের শরবত এবং খোলা খাবার থেকে বিরত থাকতে হবে। শিশুদের এই গরমে ঢিলেঢালা পোশাক ব্যবহার করতে হবে, নিয়মিত গোসল করাতে হবে। এ সময় বাচ্চাদের অবশ্যই ফুটানো পানি ও ফ্রেশ খাবার খাওয়াতে হবে।

এখানে উলেস্নখ করা প্রয়োজন, ১৯৬১ সালের দিকে বছরে এ রকম সাত দিনের মুখোমুখি হতে হয়েছিল বাংলাদেশের মানুষকে। এখন সেই কষ্টের দিনের সংখ্যা বেড়ে হয়েছে ২০ থেকে ২১। অধিক তাপমাত্রা জনস্বাস্থ্যে বিরূপ প্রভাব ফেলে, বিশেষ করে শিশু ও বয়স্কদের ওপর প্রভাব হঠাৎই পড়ে। তাপমাত্রা ৩৫-৩৬ ডিগ্রি সেলসিয়াসে পৌঁছানোর আগেই সতর্ক হওয়া উচিত। মানুষ ৪২ ডিগ্রি তাপমাত্রায় কিছু সময় পার করলেই তার শরীরে পানিশূন্যতা দেখা দিতে পারে, হঠাৎ অজ্ঞান হয়ে যেতে পারে। এটিই জরুরি স্বাস্থ্য পরিস্থিতি। বাস্তবতা হচ্ছে, গরম আবহাওয়ার কারণে শরীরের অভ্যন্তরীণ তাপমাত্রা বেড়ে যায়। শরীরের অভ্যন্তরীণ তাপমাত্রা বেড়ে যাওয়ার কারণে শরীর থেকে পানি বের হয়ে যায়। ঘামের সঙ্গে শরীর থেকে লবণজাতীয় পদার্থ বের হয়ে যায়। শরীরে ইলেকট্রোলাইটের ভারসাম্যহীনতা দেখা দেয়। মানুষ অজ্ঞান হয়, খিঁচুনি দেখা দেয়। পরিস্থিতির বেশি অবনতি ঘটলে কিডনি ও ফুসফুসের ক্ষতি হয়, মানুষ মারাও যেতে পারে।

এপ্রিল বাংলাদেশের উষ্ণতম মাস। এ মাসে গরমের পাশাপাশি কালবৈশাখীরও দাপট থাকে বেশি। সঙ্গে বাড়ছে রোগবালাই। সুতরাং, সতর্ক ও সচেতন হওয়াই সঙ্গত।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে