বুধবার, ১৪ মে ২০২৫, ৩১ বৈশাখ ১৪৩২

ডেঙ্গু পরিস্থিতি প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নিন

  ১৬ আগস্ট ২০২৪, ০০:০০
ডেঙ্গু পরিস্থিতি প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নিন

দেশের ডেঙ্গু পরিস্থিতি আশঙ্কাজনক- এই আলোচনা বিভিন্ন সময়েই সামনে এসেছে। এছাড়া, ডেঙ্গু এডিস মশাবাহিত ভাইরাসজনিত রোগ আর কার্যকর উদ্যোগের অভাবে দিন দিন এডিস মশার উৎপাত বেড়েছে এমন আলোচনাও নতুন নয়। ফলে সামগ্রিকভাবে ডেঙ্গু পরিস্থিতি আমলে নিয়ে কার্যকর উদ্যোগ গ্রহণ জরুরি বলেই প্রতীয়মান হয়। প্রসঙ্গত, সম্প্রতি পত্রপত্রিকায় প্রকাশিত খবরে জানা গেল, ডেঙ্গুতে আক্রান্ত আরও দুইজনের মৃতু্য হয়েছে। তথ্য মতে, মঙ্গলবার সকাল ৮টা থেকে বুধবার সকাল ৮টার মধ্যে তাদের মৃতু্য হয়। এ নিয়ে চলতি বছর এখন পর্যন্ত ডেঙ্গুতে মারা গেলেন ৭১ জন। উলেস্নখ্য, বুধবার স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানায়, ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে নতুন ভর্তি হয়েছেন ২৩৩ জন। তাদের মধ্যে ৫৭ জন ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন এবং ২৯ জন ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন এলাকার। এছাড়া স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্য বলছে, সারাদেশের বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতালে বর্তমানে ৮৬১ জন রোগী ভর্তি আছে। এর মধ্যে ঢাকাতে ৪৯৯ জন। ৩৬২ জন অন্য বিভাগে রয়েছেন। এ বছর এখন পর্যন্ত হাসপাতালে মোট ভর্তি হন ৮ হাজার ৭০২ জন বলেও জানা যায়।

আমরা বলতে চাই, ডেঙ্গু সংক্রান্ত সার্বিক পরিস্থিতি এড়ানোর সুযোগ নেই, আক্রান্ত ও মৃতু্য- এসব তথ্য আমলে নিয়ে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ অব্যাহত রাখা জরুরি। স্মর্তব্য যে, এডিসবাহিত এই রোগ ছড়িয়ে পড়া ঠেকাতে পরিকল্পিত পদক্ষেপ গ্রহণ অপরিহার্য। এছাড়া ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণের জন্য যেখানে এডিস মশা জন্ম ও বৃদ্ধি পায় সেখানে যেমন ধ্বংস করা দরকার, এর পাশাপাশি জনসচেতনতা বাড়াতেও কার্যকর উদ্যোগও জরুরি। আমরা মনে করি, বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ বিবেচনায় রেখে সব ধরনের উদ্যোগ গ্রহণ ও তার যথাযথ বাস্তবায়নে কাজ করতে হবে সংশ্লিষ্টদেরই। এটা ভুলে যাওয়া যাবে না, এডিস মশা নিয়ন্ত্রণ করা না গেলে ডেঙ্গু রোগের প্রভাব কমবে না। এর আগে এমন আলোচনা উঠে এসেছে- বিভিন্ন কারণে পরিত্যক্ত বাসাবাড়িসহ বিভিন্ন জায়গা দেখভাল ভালোভাবে হয় না। এতে বিভিন্ন জায়গায় এডিসের ঘনত্ব দেখা দেয়। ফলে, সামগ্রিক পরিস্থিতি আমলে নিয়ে পরিস্থিতি মোকাবিলায় সব ধরনের কার্যক্রম চালু রাখতে হবে এবং অভিযান পরিচালনা করতে হবে। উলেস্নখ্য, যেহেতু এডিস মশা সংক্রমিত মশা। এতে এক রোগী থেকে অন্যজন সংক্রমিত হয়ে থাকে। তাই সংশ্লিষ্টদের সার্বিক বিষয় পর্যবেক্ষণ করে এর পরিপ্রেক্ষিতে ব্যবস্থা নিতে হবে।

1

এর আগে জানা গিয়েছিল যে, চলতি বছরের জানুয়ারিতে ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হন ১ হাজার ৫৫ জন, যাদের মধ্যে ১৪ জনের মৃতু্য হয়। ফেব্রম্নয়ারিতে হাসপাতালে ভর্তি হন ৩৩৯ জন, যাদের মধ্যে মৃতু্য হয়েছে ৩ জনের। মার্চ মাসে আক্রান্ত হন ৩১১ জন, তাদের মধ্যে ৫ জনের মৃতু্য হয়েছে। এপ্রিলে আক্রান্ত হয়েছেন ৫০৪ জন, যাদের মধ্যে মৃতু্য হয়েছে ২ জনের। মে মাসে আক্রান্ত হয়েছেন ৬৪৪ জন, যাদের মধ্যে মৃতু্য হয়েছে ১২ জনের। জুন মাসে ৭৯৮ জন আক্রান্ত হয়েছেন, এর মধ্যে ৮ জনের মৃতু্য হয়েছে। আর জুলাই মাসের ২৪ দিনে ১৩৩৬ জন ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হওয়ার তথ্য আসে যার মধ্যে মৃতু্য হয় ৬ জনের। আমরা বলতে চাই, যখন ডেঙ্গুতে আক্রান্ত ও মৃতু্য থেমে নেই, তখন সার্বিক পরিস্থিতি আমলে নিতে হবে এবং এর পরিপ্রেক্ষিতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিশ্চিত করতে হবে।

সর্বোপরি আমরা বলতে চাই, ডেঙ্গু সংক্রান্ত সামগ্রিক পরিস্থিতি মোকাবিলায় সর্বাত্মক পদক্ষেপ নিন। সামগ্রিক অবস্থা পর্যবেক্ষণ করে করণীয় নির্ধারণ ও তার যথাযথ বাস্তবায়নে কার্যকর উদ্যোগ নিশ্চিত করা জরুরি। এছাড়া ডেঙ্গু রোধে প্রয়োজনীয় সচেতনতা বাড়ানোসহ পরিকল্পিত উদ্যোগ গ্রহণ এবং তার বাস্তবায়নেরও কোনো বিকল্প নেই। অন্যদিকে, সচেতনতা বাড়নোর পাশাপাশি ডেঙ্গু পরিস্থিতি আমলে নিয়ে তা মোকাবিলায় সর্বাত্মক উদ্যোগ অব্যাহত রাখতে হবে। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে যেভাবে ডেঙ্গু আশঙ্কাজনক হয়ে উঠেছে তা আমলে নেওয়া এবং এর পরিপ্রেক্ষিতে পরিকল্পিত উদ্যোগ অপরিহার্য। সামগ্রিক পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ সাপেক্ষে ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে সর্বাত্মক প্রচেষ্টা অব্যাহত থাকুক এমনটি কাম্য।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে