বুধবার, ১৪ মে ২০২৫, ৩১ বৈশাখ ১৪৩২

অস্থির নিত্যপণ্যের বাজার কঠোর পদক্ষেপ নিন

  ১১ অক্টোবর ২০২৪, ০০:০০
অস্থির নিত্যপণ্যের বাজার কঠোর পদক্ষেপ নিন

অস্থির হয়ে উঠেছে দেশের নিত্যপণ্যের বাজার। চাল, শাকসবজি, ডিম, ব্রয়লার মুরগিসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি নিম্ন আয়ের মানুষের ওপর ক্রমবর্ধমান চাপ সৃষ্টি করায় তাদের দেয়ালে পিঠ ঠেকে গেছে। বাজার বিশ্লেষকরা পণ্যের দাম অস্বাভাবিক বৃদ্ধি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে ভোক্তাদের স্বার্থ রক্ষায় সময়মতো পদক্ষেপ নিতে না পারার সমালোচনা করেছেন। তারা বলেছেন, সিন্ডিকেটগুলো পরিস্থিতির সুবিধা নিয়ে ভোক্তাদের ওপর আরও বোঝা চাপিয়ে দিচ্ছে। চাল, শাকসবজি, ডিম এবং ব্রয়লার মুরগির দাম গত এক মাসে অস্বাভাবিক বেড়েছে। অন্যান্য পণ্যের দামও ক্রমাগতভাবে বাড়ছে লাগামহীনভাবে। বাজার পরিস্থিতি এমন যে, দেখার কেউ নেই।

এ বিষয়ে কনজিউমার অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের সহসভাপতি বলেছেন, অন্তর্র্বর্তী সরকার পণ্য বাজারে শৃঙ্খলা প্রতিষ্ঠার জন্য কিছু উদ্যোগ নিয়েছে। কিন্তু আগের সরকারের আমলারাই রয়ে গেছে এবং ব্যবসায়িক সিন্ডিকেটের সঙ্গে তাদের যোগসাজশ আছে। তাই নিত্যপণ্যের দাম কমছে না।

1

এটা সত্য, ৫ আগস্টের পর পণ্যের দাম কমেছিল। কয়েকদিন পর সিন্ডিকেট দেখল তাদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে না। এই ফাঁকে তারা আবার দাম বাড়িয়ে দিল। আবার অনেক পণ্য আমদানি করা হচ্ছে তারপরও দাম কমছে না সিন্ডিকেটের কারণে। অবাক ব্যাপার হচ্ছে, বেশ ক'দিন ধরে ডিমের হালি ৬০ টাকা। ডিম আমদানির খবরেই দাম কমতে শুরু করেছে। এর সরল অর্থ হচ্ছে বাজার নিয়ন্ত্রণ করে সিন্ডিকেট। মোবাইলে খুদে বার্তা পাঠিয়ে সারাদেশে দাম ঠিক করে দেয় সিন্ডিকেট। নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের বাজার ও সরবরাহ পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ এবং মূল্যায়নের জন্য সরকার সম্প্রতি জেলা পর্যায়ে একটি বিশেষ টাস্কফোর্স গঠন করেছে। এর আগেও সরকার চিনি, আলু এবং পিঁয়াজের আমদানি শুল্ক হ্রাস করলেও বাজারে তার কোনো প্রভাব পড়েনি। গত বুধবার আবারও কমানো হয়েছে চিনির শুল্ক। দেখা যাক এবার কী হয়।

গত দুই মাসে ৫০ কেজি চালের দাম বস্তাপ্রতি ২০০ টাকা বেড়েছে। পাইকার ও মিলাররা চালের দাম বাড়ার অজুহাতে ধানের দাম বাড়িয়েছে। রাজধানীর বাজারে মাঝারি চাল বিক্রি হয় ৫৮ থেকে ৬২ টাকা কেজিতে। নিম্নমানের মিনিকেট ৬৫-৭০ টাকা কেজিতে বিক্রি হয়। মিনিকেটের (চিকন) প্রতি কেজি ৭৬-৮০ টাকায় এবং নাজিরশাইল ৮৫-৯০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। বাংলা বাসমতি বিক্রি হচ্ছে ১০০ টাকা থেকে ১১০ টাকা কেজি।

বলার অপেক্ষা রাখে না, সেপ্টেম্বরের মাঝামাঝিতে ডিম এবং ব্রয়লার মুরগির যৌক্তিক মূল্য নিশ্চিত করতে সরকারের চেষ্টা সত্ত্বেও এক দিনের জন্যও এই পণ্যগুলো সরকার নির্ধারিত দরে বিক্রি হয়নি। গত এক মাসে সবজির দাম নাটকীয়ভাবে বেড়েছে- যা নিম্ন আয়ের মানুষের জীবনযাত্রাকে ক্রমশ কঠিন করে তুলেছে। বেশিরভাগ সবজির কেজি ১২০ টাকা থেকে ১৪০ টাকা। কেবল পেঁপের দাম কম। প্রতি কেজি পেঁপে বিক্রি হচ্ছে ৪০-৫০ টাকায়। কাঁচা মরিচ বিক্রি হচ্ছে ৩৮০-৪০০ টাকা কেজি।

আমরা মনে করি, সিন্ডিকেটের বিরুদ্ধে কঠোর আইনগত ব্যবস্থা নিতে না পারলে নিত্যপণ্যের বাজার নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব হবে না।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে