শুক্রবার, ০৩ মে ২০২৪, ১৯ বৈশাখ ১৪৩১

সপ্তম শ্রেণির জীবন ও জীবিকা

মোচ্ছা. রুবিনা খাতুন, সহকারী শিক্ষক, দখিনা রূপকারী উচ্চ বিদ্যালয়, বাগাইছড়ি, রাঙামাটি
  ৩১ মার্চ ২০২৪, ০০:০০
সপ্তম শ্রেণির জীবন ও জীবিকা

ষষ্ঠ অধ্যায়

সমস্যা ১ ও সমস্যা ২ এর জন্য নেওয়া পদক্ষেপগুলো বাস্তবায়নের রিহার্সেল হিসেবে কয়েকটি কথোপকথনের দৃশ্য সাজাও।

দলে ভাগ হয়ে শিপ্রা ও সজীবের সঙ্গে কথোপকথনের কয়েকটি স্ক্রিপ্ট বানাও এবং তা ভূমিকাভিনয় করে দেখাও। (জীবন ও জীবিকা বই : পৃষ্ঠা ১০২)

উত্তর :

ক. শিপ্রা ও তার মায়ের সঙ্গে কথোপকথন

মায়ের সাথে আলোচনা [আগ্রহ নিয়ে উভয়ের কথা শোনা; পড়াশোনা বন্ধ করে দিলে তার প্রভাব কী হতে পারে নিয়ে আলোচনা করা; শিপ্রার আচরণ কীভাবে পরিবর্তন করা যায়; মা কীভাবে শিপ্রাকে সহযোগিতা করতে পারেন

ইত্যাদি।]

ঙ্ শিপ্রার মায়ের কাছে শিপ্রার ব্যাপারে বিস্তারিত জানাব।

ঙ্ শিপ্রা বাসায় সবার সাথে কেমন আচরণ করে এসব তথ্য জানব।

ঙ্ শিপ্রার মাকে শিপ্রার সাথে আরও বন্ধুত্বপূর্ণ আচরণের জন্য অনুরোধ করব।

ঙ্ শিপ্রার পড়াশোনা বন্ধ করে দেওয়ার নেতিবাচক প্রভাব সম্পর্কে আলোচনা করব।

ঙ্ সবশেষে শিপ্রাকে স্কুলে পাঠানোর ব্যাপারে অনুরোধ করব।

শিপ্রার সাথে আলাপ সবাই মিলে শিপ্রার বাসায় যাব। শিপ্রার সাথে ওর মনের সুখ, দুঃখ, অভিমান, হতাশা প্রভৃতি সম্পর্কে

জানব। একে শিক্ষা ও সুশৃঙ্খল জীবনযাপনের গুরুত্বের বিষয়ে উদ্বুদ্ধ করব এবং নিয়মিত লেখাপড়াও চালিয়ে যেতে উদ্বুদ্ধ করব।

একসঙ্গে উভয়ের সাথে কথোপকথন

আমরা সবাই মিলে উভয়ের সাথেই বসব। শিপ্রা ও তার মায়ের নিজ নিজ কথা শুনব। শিপ্রাকে বলব, মায়ের সাথে সুন্দরভাবে কথা বলতে এবং মায়ের কথার অবাধ্য না হতে। শিপ্রার মাকেও অনুরোধ করব, তাকে যেন আবার স্কুলে পাঠায়।

সজীব ও তার পরিবারের সঙ্গে কথোপকথন

মায়ের সাথে আলোচনা : আমরা প্রতিবেশী বন্ধুরা, একজন সম্মানিত শিক্ষক এবং প্রয়োজনে এলাকার গণ্যমান্য একজন মুরুব্বি নিয়ে তার মায়ের সাথে কথা বলব। তার কাছ থেকে সজীবের হঠাৎ পরিবর্তনের কারণ জানব।

বাবার সাথে আলোচনা : মায়ের সাথে কথা বলে সবাই মিলে ওর বাবাকেও সমানভাবে বোঝাবো। তাকে বলব সন্তানকে যেন

তিনি আরও একটু বেশি সময় দেন। পরিবারের সকলের সাথে যেন সজীবের একটা বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক থাকে এবং সজীবের পড়াশোনা বিষয়ে যেন আরও সচেতন থাকেন সে বিষয়েও অনুরোধ করব।

সজীবের সঙ্গে আলোচনা : সবাই মিলে সজীবের বাবা-মায়ের সাথে কথা বলা শেষ করে সজীবের কাছে যাব। হঠাৎ কেন তার এত

পরিবর্তন হলো এ বিষয়টি ভালোভাবে জানব এবং আবারও যেন সে পড়াশোনায় নিয়মিত হয় সে বিষয়ে ভালোভাবে বোঝাব।

(প্রজেক্ট ওয়ার্ক)

নিজেদের বিদ্যালয় বা পরিবার বা নিজেদের বিল্ডিং বা পাড়া বা এলাকার কোনো একটি সমস্যা খুঁজে বের কর। উক্ত সমস্যাটি সমাধানের জন্য একটি পরিকল্পনা প্রণয়ন কর। সমস্যার সমাধানের পরিকল্পনা অনুযায়ী বাস্তবায়নের পদক্ষেপ বা উদ্যোগ গ্রহণ কর। সমস্যার সমাধান করে পুরো ঘটনা বা অভিজ্ঞতার বর্ণনা (স্টোরিলাইন) উলেস্নখ করে একটি প্রতিবেদন লেখ। (জীবন ও জীবিকা বই : পৃষ্ঠা ১০৭)

উত্তর : আমার নাম রবিন। আমি সপ্তম শ্রেণিতে পড়ি। আমাদের স্কুলের নাম সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়। আমাদের শ্রেণিকক্ষে বিশুদ্ধ খাবার পানির সুব্যবস্থা নেই। এ সমস্যাটি সমাধানের লক্ষ্যে আমি এবং আমার পাঁচজন বন্ধু মিলে শ্রেণি শিক্ষকের সহায়তায় একটি দল গঠন করেছি। দলের অন্য বন্ধুরা হলো আহসান, আমিন, মোস্তাফা, গাজী এবং জামান। নিচে সমস্যা সমাধানের পর্যায়ক্রমিক ধাপগুলো তুলে ধরছি-

সমস্যার নাম : শ্রেণিকক্ষে খাবার পানি না থাকা।

সমস্যা সমাধানের লক্ষ্যে পরিকল্পনা প্রণয়ন ও উদ্যোগ গ্রহণ : আমাদের শ্রেণিকক্ষে বিশুদ্ধ খাবার পানির ব্যবস্থা না থাকা আমাদের কাছে একটি বড় সমস্যা। তবে এ সমস্যাটি আমরা নিজেরাই উদ্যোগী হয়ে খুব সহজে সমাধান করতে পারি। এজন্য প্রথমেই আমরা সলিউশন ফ্লুয়েন্সির ছয়টি ধাপ অনুসরণ করব। যেমন- প্রথম ধাপে সমস্যাটি চিহ্নিত করব। দ্বিতীয় ধাপে সমস্যার উৎস খুঁজে বের করব। তৃতীয় ধাপে সমস্যা সমাধানের সম্ভাব্য একাধিক সমাধান নিয়ে ভাবব।

চতুর্থ ধাপে সমস্যা সমাধানের একাধিক উপায় থেকে যাচাই-বাছাই করে একটি উপায় বেছে নিয়ে নকশা তৈরি করব। পঞ্চম ধাপে তৈরি করা নকশার পুরো অবয়ব (স্টোরিলাইন) উন্মুক্ত করব। সর্বশেষে ষষ্ঠ ধাপে তৈরি করা নকশার সাথে আমাদের আগের কোনো অভিজ্ঞতা তুলনা করে সমস্যা সমাধানের লক্ষ্যে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করব।

সমস্যার সমাধান করে প্রতিবেদন তৈরি : আমরা ছয় বন্ধু মিলে আমাদের শ্রেণিকক্ষের খাবার পানির সমস্যা সমাধান করেছি। এ কাজে আমাদের শ্রেণিশিক্ষক হোসেন স্যার সার্বিক সহযোগিতা করেছেন। নিচে পুরো ঘটনা বা অভিজ্ঞতা বর্ণনা করে একটি প্রতিবেদন তুলে ধরছি-

শ্রেণিকক্ষে খাবার পানির ব্যবস্থাকরণ

আমরা সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ে সপ্তম শ্রেণিতে পড়াশোনা করছি। আমাদের স্কুলে একটি টিউবওয়েল থাকলেও সেটা থেকে ঠিকমতো পানি উঠত না। এছাড়া আমাদের শ্রেণিকক্ষেও পানি পানের জন্য আলাদা কোনো ব্যবস্থা ছিল না। এ সমস্যাটি সমাধানের জন্য আমরা ক্লাসের ৩৫ জন শিক্ষার্থীর মধ্য থেকে ছয়জনের একটি দল গঠন করি। এ ব্যাপারে শ্রেণিশিক্ষক আমাদেরকে সার্বিক সহযোগিতা করেন। প্রথমে আমাদের সমস্যাটি নিয়ে নিজেরা পরামর্শ করি।

পরে এলাকার মেম্বার এবং স্থানীয় কিছু গণ্যমান্য ব্যক্তির সাথে আলোচনা করি। যেহেতু টিউবওয়েলের সমস্যা রয়েছে, তাই সেটা মেরামতের জন্য কিছু অর্থ সংগ্রহের প্রয়োজন ছিল। এ ক্ষেত্রে স্থানীয় মেম্বার এবং কয়েকজন বিশিষ্ট ব্যক্তি প্রয়োজনীয় অর্থ গিয়ে আমাদেরকে সহযোগিতা করেছেন। পরবর্তীতে আমরা টিউবওয়েল মেরামত করে আমাদের শ্রেণিকক্ষসহ প্রতিটি শ্রেণিকক্ষে খাবার পানির সরবরাহ নিশ্চিত করেছি। এজন্য আমরা প্রত্যেক শ্রেণিকক্ষের জন্য একটি করে বড় পানির জার এবং দুটি স্টিলের গ্যাসের ব্যবস্থা করেছি।

সেই সাথে প্রতিটি শ্রেণিকক্ষে দুজন করে চারটি দল তৈরি করে দিয়েছি, যারা সাতদিন করে প্রতিমাসে নিজেদের ক্লাসে খাবার পানির সরবরাহ নিশ্চিত করবে। এ কাজটি সুষ্ঠুভাবে সম্পাদন করতে পেরে আমাদের খুব ভালো লাগছে। যারা আমাদের কাজে প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে সহযোগিতা করেছেন তাদের প্রত্যেকের কাছে আমরা আন্তরিক কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে