শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১

আমজাদ হোসেনের পঞ্চম প্রয়াণ দিবস

বিনোদন রিপোর্ট
  ১৪ ডিসেম্বর ২০২৩, ০০:০০

বহুমুখী প্রতিভার অধিকারী আমজাদ হোসেন। দেশীয় চলচ্চিত্র আকাশে উজ্জ্বল এক নক্ষত্র তিনি। একুশে পদকপ্রাপ্ত এই চলচ্চিত্র নির্মাতা তার কর্মজীবনে ১২টি জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার এবং ছয়টি বাচসাস পুরস্কার অর্জন করেন। কণ্ঠশিল্পী সাবিনা ইয়াসমিনের (১৩টি) পর তিনিই সর্বাধিক জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার বিজয়ী। এছাড়া তিনি প্রথম ব্যক্তি হিসেবে ছয়টি ভিন্ন বিভাগে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার অর্জন করেছেন এবং এক আয়োজনে পাঁচটি বিভাগে (গোলাপী এখন ট্রেনে চলচ্চিত্রের জন্য) জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার লাভ করেন।

বরেণ্য এ চলচ্চিত্রকারের পঞ্চম মৃতু্যবার্ষিকী আজ। ২০১৮ সালের নভেম্বর মাসে ইশকেমিক স্ট্রোকে আক্রান্ত হলে তাকে ঢাকার ইমপালস হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সরকারি অনুদানে উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে ২৭ নভেম্বর ব্যাংককে নিয়ে যাওয়া হয়। পরবর্তী সময়ে ১৪ ডিসেম্বর ৭৬ বছর বয়সে ব্যাংককের বামরুনগ্রাদ হাসপাতালে মৃতু্যবরণ করেন তিনি। ২০ ডিসেম্বর তার মরদেহ দেশে পৌঁছলে জামালপুরের পৌর কবরস্থানে তাকে দাফন করা হয়।

আমজাদ হোসেনকে নিয়ে চলচ্চিত্রের তার সহকর্মী এবং বেশ কয়েকজন তারকার সঙ্গে কথা হয়। তাদের বেশির ভাগই স্মৃতিচারণ করতে গিয়ে কান্নায় ভেঙে পড়েন। তার সিনেমায় সবচেয়ে বেশি অভিনয় করা অভিনেতা আলমগীর বলেন, 'তাকে নিয়ে অনেক স্মৃতি, অনেক ঘটনা মনে পড়ছে। যেগুলো বলতে কয়েক বছর লেগে যাবে। তাই এসব এখন বলতে চাই না। শুধু বলব, আমরা আমাদের চলচ্চিত্রের আড্ডাগুলোতে তাকে মিস করি। সিনেমার আলোচনায় তিনি যখন উপসংহার টানতেন, তখন বুঝতাম আমরা এখনো চলচ্চিত্র সম্পর্কে কতটা মূর্খ। আমাদের জ্ঞান দেওয়ার মতো এমন একটা মানুষ আর হয়তো পাব না।' আমজাদ হোসেনকে সবচেয়ে প্রিয় পরিচালক মন্তব্য করে তার আলোচিত চরিত্র 'গোলাপি'খ্যাত দেশবরেণ্য অভিনেত্রী ববিতা বলেন, 'কত স্মৃতি যে আছে আমজাদ ভাইয়ের সঙ্গে, কোনটা রেখে কোনটা বলব! তার অনেক ছবিতে অভিনয় করেছি। তার পরিচালিত আমার অনেকগুলো সিনেমা জনপ্রিয়। তার মতো এমন জিনিয়াস মানুষ আমি জীবনে খুব কম পেয়েছি। সারা বাংলাদেশের প্রত্যেক মানুষের গল্প গোলাপী এখন ট্রেনে। যে সময় ছবিটি মুক্তি পায় সে সময়ের প্রতিটি গ্রামবাংলার মানুষের গল্প ছিল এটি। ছবির প্রত্যেকটা সংলাপ কী যে অসামান্য ছিল, ভাবতেও ভালো লাগে এখন। সে সময়তো অফিস-আদালতেও গোলাপী এখন ট্রেনের সংলাপগুলো মানুষ বলে বেড়াত। তিনি নেই- পাঁব বছর পরও মানতে কষ্ট হচ্ছে।'

চলচ্চিত্রকার আমজাদ হোসেন ১৯৬১ সালে 'তোমার আমার' চলচ্চিত্রে অভিনয় দিয়ে চলচ্চিত্র ক্যারিয়ার শুরু করেন। পরে তিনি চিত্রনাট্য রচনা ও পরিচালনায় মনোনিবেশ করেন এবং চলচ্চিত্র পরিচালনা করে খ্যাতি অর্জন করেন। তার পরিচালিত প্রথম চলচ্চিত্র 'আগুন নিয়ে খেলা' (১৯৬৭)। পরে 'তিনি নয়নমনি' (১৯৭৬), 'গোলাপী এখন ট্রেনে' (১৯৭৮), 'ভাত দে' (১৯৮৪) চলচ্চিত্রের মাধ্যমে প্রশংসিত হন। এছাড়া 'সুন্দরী', 'জন্ম থেকে জ্বলছি' ও 'কসাই' চলচ্চিত্রের মাধ্যমে তাবৎ দর্শক হৃদয়ে স্থায়ী জায়গা করে নেন। একুশে পদক, জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার ছাড়াও ১৯৯৩ ও ১৯৯৪ সালে দু'বার অগ্রণী শিশু সাহিত্য পুরস্কার ও ২০০৪ সালে বাংলা একাডেমি সাহিত্য পুরস্কারসহ একাধিক পুরস্কার লাভ করেন।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে