বৃহস্পতিবার, ১৬ মে ২০২৪, ২ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১

ষড়যন্ত্র থেমে নেই, এখনো চলছে : প্রধানমন্ত্রী

টুঙ্গিপাড়া প্রতিনিধি
  ১৪ জানুয়ারি ২০২৪, ০০:০০
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা শনিবার টুঙ্গিপাড়ায় উপজেলা আওয়ামী লীগ কার্যালয়ে মতবিনিময় সভায় পৌঁছলে নেতাকর্মীরা তার সঙ্গে সেলফি তোলেন -ফোকাস বাংলা

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, চক্রান্ত এখনো শেষ হয়নি, এখনো চলছে। একজন নারী হয়ে তিনি পাঁচ-পাঁচবার ক্ষমতায় এসেছেন এটা অনেক দেশের পছন্দ না। ভৌগোলিক অবস্থার কারণে অনেকের নজর আছে এদেশের ওপর।

তিনি বলেন, 'এখানে বসে অন্য দেশের ওপর সন্ত্রাসী কর্মকান্ড চালাবে, এয়ার অ্যাটাক চালাবে সেটা আমি মেনে নেব না। দেশ হিসেবে আমরা ছোট হতে পারি। আমরা স্বাধীন-সার্বভৌম দেশ। আমরা স্বাধীনভাবে চলব।'

শনিবার টুঙ্গিপাড়া উপজেলা আওয়ামী লীগ কার্যালয়ে নেতাকর্মী ও জনপ্রতিনিধিসহ স্থানীয়দের সঙ্গে শুভেচ্ছা এবং মতবিনিময় সভায় তিনি এসব কথা বলেন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, 'আমেরিকার গোয়েন্দার

সাক্ষীতেই কিন্তু তারেক জিয়ার সাজা হয়েছে। তবে এদের (আমেরিকার) লজ্জা নেই। এরা একজনকে এমন করবে, আবার কখন কাকে পছন্দ করে ক্ষমতায় নিয়ে আসে তার ঠিক নেই।'

মতবিনিময় সভায় গোপালগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মাহাবুব আলী খান, টুঙ্গিপাড়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ আবুল বশার খায়ের বক্তব্য রাখেন।

এ সময় শেখ হাসিনা বলেন, 'বিএনপি নির্বাচন করবে না এটা আমরা জানি। কারণ, এরা (বিএনপি) যে নির্বাচন করবে তাদের নেতা কোথায়? একজন দুর্নীতি আর এতিমের অর্থ আত্মসাৎ করে সাজাপ্রাপ্ত, আরেকজন অর্থ পাচার ও মানি লন্ডারিংয়ের মামলায়। এই যে দুর্নীতি আমেরিকার গোয়েন্দা সংস্থা এফবিআই খুঁজে বের করেছে। তাদের (এফবিআই) গোয়েন্দার সাক্ষীতেই কিন্তু তারেক জিয়ার সাজা হয়েছে।'

জনগণ আমাদের শক্তি উলেস্নখ করে শেখ হাসিনা বলেন, 'চক্রান্ত ছিল আমাকে ক্ষমতায় আসতে দেবে না। তাদের হুকুমের দাস এমন কাউকে বসাবে। তারপর এ দেশটাকে নিয়ে খেলতে পারবে। বাংলাদেশের জনগণ তার (ষড়যন্ত্রের) ভালো জবাব দিয়েছে। আমি নির্বাচনকে উন্মুক্ত করে দিয়েছিলাম। উদ্দেশ্য ছিল- ভোটার যেন আসে এবং প্রতিযোগিতা যেন হয়।'

প্রধানমন্ত্রী বলেন, 'আগুন দিয়ে পোড়ানো, সবচেয়ে জঘন্য কাজ এই যে রেলে আগুন দিয়ে মা আর শিশু যেভাবে পুড়ে অঙ্গার হয়ে গেল, যাত্রীসহ বাসে আগুন দেওয়া। ২০১৩ সালেও এই সন্ত্রাসী কর্মকান্ড, ১৪-তে করল, ১৫-তে করল। এবার আবার শুরু করল। ২৮ অক্টোবর পুলিশকে যেভাবে পিটিয়ে মারা, সাংবাদিকদের ওপর হামলা, প্রধান বিচারপতির বাড়িতে হামলা, জাজ কোয়ার্টারে হামলা। এসব জঘন্যতম কাজ করে তারা নিজেদের জনগণ থেকে বিচ্ছিন্ন করে ফেলে।

তিনি বলেন, 'এর আগে যতদিন শান্তিপূর্ণ মিছিল-মিটিং করেছে আমরা বাধা দিইনি। তখন তাদের অবস্থা একটু ভালো ছিল। কিন্তু ২৮ অক্টোবরের ঘটনার পর তাদের আসল রূপ বের হয়ে আসে। তাদের সন্ত্রাসী চেহারাটা যখন জনগণ দেখল যে, অ্যাম্বুলেন্সে অসুস্থ মানুষ যাচ্ছে, সেই অ্যাম্বুলেন্সে আক্রমণ করে। রাজারবাগ পুলিশ লাইনে ঢুকে পুলিশ হাসপাতালে আক্রমণ করল, সেখানে কতগুলি অ্যাম্বুলেন্স ভাঙল-পোড়াল, গাড়ি ভাঙল-পোড়ালো।'

তিনি আরও বলেন, 'ওই ইসরায়েলেরা করছে প্যালেস্টাইনে। আর তারেক জিয়ার হুকুমে বিএনপি-জামায়াত করছে আমাদের দেশের মানুষের ওপর। হাসপাতাল আর অ্যাম্বুলেন্সে আক্রমণ করে তারা দেখালো যে তারা ওদের প্রেতাত্মা বা ওদেরই লোক।'

প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, 'আমাদের সতর্কতার সঙ্গে চলতে হবে। আমরা নতুন কেবিনেট করেছি। সেটাও তাদের লাগে। শুনলাম বলছে এত তাড়াতাড়ি কেন সরকার করল। আমাদের তো সব তৈরি আছে আমরা করব না কেন? আমরা সিদ্ধান্ত নিতে কখনো পিছপা হই না। জানি ইলেকশন হবে, ইলেকশনে জিতলে কি করব এটা তো আগেই তৈরি করা থাকবে। তাহলে সময় লাগবে কেন? আমি সময় নষ্ট করব কেন? আমার কাছে একটা দিনেরও মূল্য আছে। আমাদের তো উন্নয়নের ধারাটা অব্যাহত রাখতে হবে।'

আওয়ামী লীগ প্রধান বলেন, 'আবার দেখলাম তাদের (বিএনপি) অফিসের তালা ভাঙছে। সেই রবীন্দ্রনাথের গানটাই মনে পড়ে 'ভেঙে মোর ঘরের চাবি, নিয়ে যাবি কে আমারে'। আমি ঠিক জানি না রিজভী সাহেব এই গান গাইতে গাইতে তালা ভাঙছিল কি না।'

তিনি বলেন, 'আর তালা ভেঙে কাকে বের করল তাও জানি না। বলে যে চাবি খুঁজে পাচ্ছে না, তাহলে তালাটা লাগাল কে? এই তালার কোন সিলগালা ছিল না, কাজেই এটা পুলিশ লাগায়নি। একটা ভালো তালা তারা হাতুড় দিয়ে ভাঙছে। এটা একটা নাটক। এই নাটক করে করে মানুষকে কিছু দিনের জন্য ধোঁকা দেওয়া যায়; সব সময়ের জন্য না। যারা প্রশ্রয়দাতা তারা আবার খুশি হয়ে কাছে টেনে নেয়।'

শেখ হাসিনা বলেন, 'এখন আমাদের সবচেয়ে বড় কাজ হচ্ছে এই উন্নয়নের ধারাটা অব্যাহত রাখা। জিনিসের দাম যেটা বেড়ে গেছে সেটা নিয়ন্ত্রণ করা, আমি গ্রামে-গঞ্জে খুব অসুবিধা দেখি না। কিন্তু যারা নির্দিষ্ট আয়ের মধ্যে তাদের একটু সমস্যা। ঢাকার শহরে একটু বেশি। সেখানে জীবনযাত্রার ব্যয় সবসময় একটু বেশি। বাজারে কিন্তু জিনিসের অভাব নেই। খাদ্যের কোনো ঘাটতি নেই। কিন্তু মনে হয়, যে কেউ জিনিসের দাম বাড়িয়ে মানুষকে হয়রানি করে। সেটাও আমাদের যথাযথভাবে নজরদারি বাড়াতে হবে। আর আমাদের খাদ্য উৎপাদনটা বাড়াতে হবে।'

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়
X
Nagad

উপরে