সোমবার, ২৯ এপ্রিল ২০২৪, ১৬ বৈশাখ ১৪৩১

বাংলাদেশ-শ্রীলংকা প্রথম টেস্ট শুরু আজ

ক্রীড়া প্রতিবেদক
  ২২ মার্চ ২০২৪, ০০:০০
টেস্ট সিরিজের আগে বৃহস্পতিবার ট্রফি উন্মোচন করেন বাংলাদেশ অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্ত ও শ্রীলংকা অধিনায়ক ধনঞ্জয় ডি সিলভা -বিসিবি

ঘরের মাঠে টি২০ সিরিজে না পারলেও শ্রীলংকাকে হারিয়ে ওয়ানডে সিরিজ ঘরে তুলেছে বাংলাদেশ দল। এখন টাইগারদের চোখ ক্রিকেটের রাজকীয় সংস্করণ টেস্ট সিরিজে। বড় ফরম্যাটে উন্নতির ধারা অব্যাহত রাখার লক্ষ্যে আজ শুক্রবার সিলেট আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে শ্রীলংকার বিপক্ষে দুই ম্যাচের টেস্ট সিরিজ শুরু করবে বাংলাদেশ। ম্যাচটি শুরু হবে সকাল ১০টায়। টেস্ট শুরুর আগে ইতোমধ্যে ওয়ানডে ও টি২০ সিরিজ খেলেছে বাংলাদেশ ও শ্রীলংকা। সফরকারীরা ২-১ ব্যবধানে টি২০ জিতলেও একই ব্যবধানে ওয়ানডে সিরিজ জিতে নেয় স্বাগতিক টাইগাররা।

২০২২ সালে ভারতের কাছে ২-০ ব্যবধানে

সিরিজ হারের পর ২০২৩ সালে কোন টেস্ট সিরিজ হারেনি বাংলাদেশ। ২০২৪ সালে নিজেদের প্রথম টেস্ট সিরিজে অপরাজিত থাকার রেকর্ড অক্ষুণ্ন্ন রাখতে চাইবে টাইগাররা।

গেল বছর ঘরের মাঠে খেলা তিন সিরিজের মধ্যে দু'টিতে জয় পায় বাংলাদেশ। আয়ারল্যান্ড ও আফগানিস্তানের বিপক্ষে এক ম্যাচ টেস্ট সিরিজে জয় পেলেও, শক্তিশালী নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে দুই ম্যাচের সিরিজ ১-১ সমতায় শেষ করে টাইগাররা।

সর্বশেষ সিরিজগুলোর ফল বিশ্লেষণে স্পষ্টতই টেস্টে বাংলাদেশের উন্নতির চিত্র ফুটে উঠেছে। শ্রীলংকার বিপক্ষে সিরিজটিই হবে নিয়মিত অধিনায়ক হিসেবে নতুন দায়িত্ব পাওয়া নাজমুল হোসেন শান্তর প্রথম অ্যাসাইনমেন্ট।

গেল বছর ঘরের মাঠে সাকিব আল হাসানের অনুপস্থিতিতে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে সিরিজের প্রথম টেস্টে ভারপ্রাপ্ত অধিনায়ক শান্তর অধীনে জয় পেয়েছিল বাংলাদেশ। নিয়মিত অধিনায়ক হিসেবে তিন ফরম্যাটে দায়িত্ব নেওয়ার পর টেস্ট ফরম্যাটে দেশের বাইরে প্রতিপক্ষের সঙ্গে সমানতালে লড়াই করা এবং ঘরের মাঠে যতটা সম্ভব ম্যাচ জয়ের লক্ষ্য স্থির করেন শান্ত।

ঘরের মাঠে লঙ্কানদের বিপক্ষে কখনো টেস্ট জিততে পারেনি টাইগাররা। তাই স্বাভাবিকভাবেই এবার শ্রীলংকার বিপক্ষে প্রথমবারের মতো টেস্ট জয়ের জন্য নিজেদের সেরাটা উজার করে দিবে বাংলাদেশ।

ঘরের মাঠে জয়ের ধারা অব্যাহত রাখতে পারলে বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপে নিজ দলের ভালো কিছুর সম্ভাবনা দেখছেন বাংলাদেশ দলের প্রধান কোচ চন্ডিকা হাথুরুসিংহে। নবম স্থানে থেকে বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের শেষ দুই চক্র শেষ করেছিল টাইগাররা। চলতি চক্রে গত বছর ঘরের মাঠে নিউজিল্যান্ডকে এক ম্যাচে পরাজিত করেছে বাংলাদেশ। এর আগে এক টেস্টের সিরিজে আফগানিস্তান ও আয়ারল্যান্ডকে পরাজিত করে টাইগাররা। অবশ্য এ দুটি বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের অংশ নয়। বাংলাদেশ এখন শ্রীলংকা চ্যালেঞ্জ নিতে মুখিয়ে আছে এবং হাথুরুর বিশ্বাস সফরকারী দলের বিপক্ষে আসন্ন দুই টেস্টের সিরিজ জয়ের সক্ষমতা তার শিষ্যদের রয়েছে। হাথুরু বলেন, 'বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের এই চক্রে আমাদের প্রত্যাশাটা বড়। ইতোমধ্যেই আমরা নিজ মাঠে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে সিরিজ খেলেছি। ঘরের মাঠে অধিকাংশ ম্যাচ জিততে পারলে শেষ পর্যন্ত চ্যাম্পিয়নশিপে আমাদের ভালো অবস্থানে যাওয়ার একটা প্রবল সম্ভাবনা আছে। আমাদের সামনে দেশের বাইরে উপরের সারির কিছু দলের কয়েকটি সিরিজ আছে, যা সত্যিই চ্যালেঞ্জিং হবে। শ্রীলংকা একটি শক্তিশালী, অভিজ্ঞ দল। এ সিরিজটি আমাদের জন্য বেশ চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দেবে। তবে আমরা প্রস্তুত।'

এখন পর্যন্ত সব মিলিয়ে শ্রীলংকার বিপক্ষে ২৪টি টেস্ট খেলেছে বাংলাদেশ। এর মধ্যে মাত্র একটিতে জয় পেয়েছে টাইগাররা। ২০১৭ সালে কলম্বোতে নিজেদের শততম টেস্টে লংকানদের বিপক্ষে প্রথম ও শেষ জয় পেয়েছিল বাংলাদেশ। অবিস্মরণীয় ওই টেস্ট জয়ের দুই নায়ক সাকিব আল হাসান এবং তামিম ইকবালকে আজকের ম্যাচে পাচ্ছে না বাংলাদেশ। চোখের সমস্যার কারণে আগেই সিরিজ থেকে সরে গেছেন সাকিব। আর তামিমের আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ার প্রায় শেষের দিকে।

একমাত্র জয়ের সঙ্গে শ্রীলংকার বিপক্ষে ১৮টিতে হার এবং পাঁচটি টেস্ট ড্র করেছে বাংলাদেশ। ঘরের মাঠে লঙ্কানদের বিপক্ষে ১০ বার মুখোমুখি হয়েছে টাইগাররা। এর মধ্যে শ্রীলংকার জয় ৭টিতে এবং বাকি তিনটি ম্যাচ ড্র হয়। এজন্য ঘরের মাঠে শ্রীলংকার বিপক্ষে জয় খরা ঘোচানোর পালা বাংলাদেশের। স্বাভাবিকভাবেই বাংলাদেশের তারুণ্য নির্ভর দলটির জন্য কাজটি বেশ কঠিনই হবে। বুড়ো আঙ্গুলের ইনজুরিতে সিনিয়র খেলোয়াড় মুশফিকুর রহিমকে শেষ মুর্হূতে হারিয়েছে বাংলাদেশ।

সাকিব-তামিমের অনুপস্থিতি এবং টেস্ট থেকে আগেই অবসর নেওয়া মাহমুদউলস্নাহ রিয়াদ না থাকায় বাংলাদেশের ব্যাটিংয়ে প্রধান বড় ভরসা ছিলেন মুশফিক। ওয়ানডেতে বিপর্যয়ের মুখ থেকে বাংলাদেশকে উদ্ধার করে নিজের সেরা পারফরমেন্স দিয়ে ২-১ ব্যবধানে সিরিজ জয়ে বড় অবদান রেখেছিলেন মুশফিক। তার অভিজ্ঞতা টেস্ট সিরিজেও বড় ভূমিকা রাখতে পারত।

মুশফিকের জায়গায় টেস্ট দলে নেওয়া হয়েছে সাদা বলের ক্রিকেটে নিজের যোগ্যতার প্রমাণ দেওয়া তাওহিদ হৃদয়কে। কিন্তু টেস্ট ক্রিকেটে তরুণদের চেয়ে অভিজ্ঞতা অনেক বেশি প্রয়োজন। মুশফিকের শূন্যস্থান হৃদয় কিভাবে পূরণ করতে পারেন, সেটিই দেখার বিষয়।

বাংলাদেশ টেস্ট দলে নতুন মুখ হিসেবে আছেন এই মুহূর্তে দেশের দ্রম্নততম পেসার হিসেবে পরিচিত পাওয়া নাহিদ রানা। তিনি বাংলাদেশের প্রথম বোলার হিসেবে ঘণ্টায় ১৫০ কিলোমিটারের গতির বোলিং করতে পারেন বলে ধারণা করা হচ্ছে। চারজন পেসার নিয়ে বাংলাদেশ দল সাজানোয় ধারণা করা হচ্ছে সিলেটের উইকেট পেস সহায়ক হবে। অন্যদিকে দলে সেরামানের স্পিনারদেরই রেখেছে শ্রীলংকা। কিন্তু সফরকারীদের শক্তির জায়গাকে কাজে লাগাতে দিবে না বাংলাদেশ। গত দুই সফরে বাংলাদেশকে বেকায়দায় ফেলেছিল শ্রীলংকার স্পিনাররা।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে