সোমবার, ০৬ মে ২০২৪, ২৩ বৈশাখ ১৪৩১
ইউনিসেফের সতর্কতা

গরমের 'উচ্চ ঝুঁকিতে' শিশুরা

তাপপ্রবাহসহ জলবায়ু পরিবর্তনের ক্ষতিকর প্রভাব থেকে শিশুদের রক্ষা করার জন্য জরুরি পদক্ষেপ নেওয়ার এখনই সময়
যাযাদি ডেস্ক
  ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ০০:০০
তীব্র তাপপ্রবাহের কারণে কয়েকদিন যাবৎ হাসপাতালগুলোয় বেড়েছে ডায়রিয়াসহ নানা রোগে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা। এর মধ্যে শিশু রোগীর সংখ্যা বেশি। ছবিটি বুধবার মুগদা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল থেকে তোলা -ফোকাস বাংলা

বাংলাদেশজুড়ে তাপপ্রবাহের মধ্যে উচ্চ স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে রয়েছে শিশুরা বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশের ইউনিসেফের প্রতিনিধি শেলডন ইয়েট। বুধবার ইউনিসেফ বাংলাদেশ অফিস থেকে পাঠানো এক বিবৃতিতে এ কথা জানানো হয়।

বিবৃতিতে বলা হয়, দেশজুড়ে দুঃসহ তাপপ্রবাহ বিরাজ করছে। সারাদেশে এ অসহনীয় তাপমাত্রায় শিশুদের স্বাস্থ্য ও নিরাপত্তা নিয়ে ইউনিসেফ গভীরভাবে উদ্বিগ্ন। ইউনিসেফের ২০২১ সালের শিশুদের জন্য জলবায়ু ঝুঁকি সূচক (সিসিআরআই) অনুযায়ী, বাংলাদেশে শিশুরা জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবে 'অতি উচ্চ ঝুঁকিতে' রয়েছে।

অস্বাভাবিক তাপমাত্রা বাড়ায় শিশুদের জন্য মারাত্মক ঝুঁকি মোকাবিলা করতে হচ্ছে, বিশেষ করে নবজাতক, সদ্যোজাত ও অল্পবয়সি শিশুদের জন্য। হিটস্ট্রোক ও পানিশূন্যতাজনিত ডায়রিয়ার মতো, উচ্চ তাপমাত্রার প্রভাবে সৃষ্ট অসুস্থতায় এ বয়সি শিশুরা বেশি আক্রান্ত হয়ে থাকে।

শিশুদের ওপর তাপমাত্রা বাড়ায় নেতিবাচক প্রভাব বিবেচনায় নিয়ে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় সারাদেশে ২৭ এপ্রিল পর্যন্ত সব সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় বন্ধ ঘোষণা করেছে। এ পরিস্থিতিতে ইউনিসেফ বাবা-মায়েদের প্রতি তাদের সন্তানদের পানিশূন্যতা থেকে রক্ষা ও নিরাপদ রাখার জন্য বাড়তি সতর্কতা অবলম্বনের আহ্বান জানাচ্ছে।

চলমান এ তাপপ্রবাহসহ জলবায়ু পরিবর্তনের আরও ক্ষতিকর প্রভাব থেকে শিশুদের রক্ষা করার জন্য জরুরি পদক্ষেপ নেওয়ার এখনই সময়। অস্বাভাবিকভাবে তাপমাত্রা বাড়তে থাকায়, আমাদের আগে শিশু ও সবচেয়ে অসহায় জনগোষ্ঠীকে নিরাপদে রাখার প্রতি নজর দিতে হবে।

চলমান এ তাপপ্রবাহ থেকে শিশু ও অন্তঃসত্ত্বা নারীদের সুরক্ষার জন্য ইউনিসেফ সম্মুখসারির কর্মী, বাবা-মা, পরিবার, পরিচর্যাকারী ও স্থানীয় কর্তৃপক্ষের প্রতি নিম্নোক্ত পদক্ষেপগুলো গ্রহণ করার আহ্বান জানাচ্ছে।

প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা : শিশুরা যেখানেই থাকুক না কেন তাদের বসা ও খেলার জন্য ঠান্ডা জায়গার ব্যবস্থা করুন। তপ্ত দুপুর ও বিকালের কয়েক ঘণ্টা তাদের বাড়ির বাইরে বেরোনো থেকে বিরত রাখুন। শিশুরা যেন হালকা ও বাতাস চলাচলের উপযোগী পোশাক পরে, তা নিশ্চিত করতে হবে। সেই সঙ্গে সারাদিন তারা যেন

প্রচুর পানি পান করে, সেটাও নিশ্চিত করতে হবে।

প্রাথমিক চিকিৎসা: যদি কোনো শিশু বা অন্তঃসত্ত্বা নারীর মধ্যে 'হিট স্ট্রেস' বা তাপমাত্রাজনিত সমস্যার উপসর্গ দেখা দেয় (যেমন, মাথা ঘোরা, অতিরিক্ত ঘাম হওয়া, বমি বমি ভাব, হালকা জ্বর, নাক দিয়ে রক্তপড়া, মাংসপেশিতে টান, ডায়াপার পরার জায়গাগুলোতে ফুসকুড়ি) তাহলে তাকে একটি ঠান্ডা জায়গায় নিয়ে যান যেখানে ছায়া এবং পর্যাপ্ত বাতাস চলাচলের সুযোগ আছে। এরপর ভেজা তোয়ালে দিয়ে তার শরীর মুছিয়ে দিন বা গায়ে ঠান্ডা পানি দিন। তাকে পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি বা খাবার স্যালাইন (ওআরএস) পান করতে দিন। তবে হিট স্ট্রেসের (তাপমাত্রাজনিত অসুস্থতার) উপসর্গ তীব্র হলে (যেমন কোনোকিছুতে সাড়া না দিলে, অচেতন হয়ে পড়লে, তীব্র জ্বর, হৃদস্পন্দন বেড়ে গেলে, খিঁচুনি দেখা দিলে এবং অচেতন হয়ে পড়লে) সঙ্গে সঙ্গে হাসপাতালে নিতে হবে।

আপনার প্রতিবেশীদের খেয়াল রাখুন: তাপপ্রবাহ চলাকালে অসহায় পরিবার, প্রতিবন্ধী শিশু, অন্তঃসত্ত্বা নারী ও প্রবীণ ব্যক্তিরাই সবার আগে অসুস্থ হয়ে পড়েন, এমনকি মৃতু্যর উচ্চ ঝুঁকিতেও তারাই বেশি থাকেন। আপনার প্রতিবেশী, বিশেষ করে যারা একা থাকেন, তাদের খোঁজ নিন ও খেয়াল রাখুন।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে