বৃহস্পতিবার, ১৬ মে ২০২৪, ২ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১
২ মে পর্যন্ত প্রাথমিক, ২৭ জেলার মাধ্যামিক-কলেজ বন্ধ আজ

দাবদাহ :হাইকোর্টের নির্দেশে ফের বন্ধ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান

সর্বোচ্চ ৪৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস চুয়াডাঙ্গায় ঢাকার তাপমাত্রা ৪০ দশমিক ৩ ডিগ্রি
যাযাদি ডেস্ক
  ৩০ এপ্রিল ২০২৪, ০০:০০
দাবদাহ :হাইকোর্টের নির্দেশে ফের বন্ধ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান

চলতি এপ্রিলের টানা দাবদাহ ৭৬ বছরের তাপপ্রবাহের রেকর্ড ভেঙেছে। তাপমাত্রার এ রেকর্ড ভেঙেছে চুয়াডাঙ্গা। পশ্চিমের এ জেলায় 'মরুভূমির লু হাওয়ার' মতো পরিস্থিতি বিরাজ করছে। সোমবারও দেশের ইতিহাসে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ৪৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড হয়েছে এ জেলায়। আর এ দিন ঢাকার পারদ ওঠে ৪০ দশমিক ৩ ডিগ্রিতে।

এদিকে তীব্র তাপ প্রবাহের মধ্যে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলার বিষয়টি সোমবার হাইকোর্টের নজরে আনা হলে হাইকোর্ট স্ব-প্রণোদিত হয়ে আগামী ২ মে বৃহস্পতিবার পর্যন্ত সারা দেশের প্রাথমিক, মাধ্যমিক স্কুল ও মাদ্রাসা বন্ধ রাখতে আদেশ দেন। পরে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় এবং শিক্ষা অধিদপ্তর পৃথক বিজ্ঞপ্তিতে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ফের বন্ধের ঘোষণা দেয়।

প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়. শিশু শিক্ষার্থীদের স্বাস্থ্য ও সুরক্ষা বিবেচনায় আগামী ২ মে পর্যন্ত দেশের সব সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, শিশু কল্যাণ ট্রাস্টের বিদ্যালয় ও উপানুষ্ঠানিক শিক্ষা বু্যরোর লার্নিং সেন্টার বন্ধ থাকবে। অন্যদিকে শিক্ষা মন্ত্রণালয় জানায়, আজ খুলনা ও রাজশাহী বিভাগের সব জেলা, ঢাকা বিভাগের ঢাকা, টাঙ্গাইল, নারায়ণগঞ্জ, মুন্সীগঞ্জ, গাজীপুর ও মানিকগঞ্জ, রংপুর বিভাগের কুড়িগ্রাম ও দিনাজপুর এবং বরিশাল বিভাগের পটুয়াখালী জেলার সব মাধ্যমিক স্কুল, কলেজ, মাদ্রাসা ও কারিগরি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকবে।

চুয়াডাঙ্গায় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৪৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড হয়েছে জানিয়ে আবহাওয়াবিদ শাহনাজ সুলতানা সোমবার বলেন, 'দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের সীমান্তবর্তী জেলা চুয়াডাঙ্গার ওপর দিয়ে টানা তীব্র তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে। বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে জনজীবন। রোদের তাপে জেলা শহরের বিভিন্ন সড়কের পিচ

\হগলে যেতে দেখা গেছে। এ তাপপ্রবাহ আরও কয়েক দিন অব্যাহত থাকতে পারে।'

তিনি জানান, রাজধানীতে গত ২০ এপ্রিল এ মৌসুমের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা উঠেছিল ৪০ দশমিক ৪ ডিগ্রি। আর ২০২৩ সালের ১৬ এপ্রিল ঢাকার তাপমাত্রা রেকর্ড হয়েছিল ৪০ দশমিক ৬ ডিগ্রি। এর আগে ১৯৬০ সালে ঢাকার তাপমাত্রার পারদ চড়েছিল ৪২ দশমিক ৩ ডিগ্রিতে। স্বাধীনতার পর ১৯৭২ সালের ১৮ মে রাজশাহীতে ৪৫ দশমিক ১ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা নথিবদ্ধ হয়েছিল, যা দেশে রেকর্ড হওয়া ইতিহাসের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা।

এদিকে টানা দাবদাহে পঞ্চমবারের মতো হিট অ্যালার্ট জারির মধ্যেও রোববার থেকে খুলে দেওয়া হয় শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। তীব্র তাপপ্রবাহের মধ্যে শ্রেণিকক্ষে এসে শিক্ষার্থীদের অনেকেই অসুস্থ হয়ে পড়ে। তাদের হাসপাতালেও ভর্তি হতে হয়। এছাড়া রোববার হিটস্ট্রোকে ১৭ জনের মৃতু্য হয়। এ বিষয়টি সোমবার হাইকোর্টের নজরে আনেন আইনজীবী মনির উদ্দিন।

পরে বিচারপতি কে এম কামরুল কাদের ও বিচারপতি খিজির হায়াতের হাইকোর্ট বেঞ্চ স্ব-প্রণোদিত হয়ে স্কুল-মাদ্রাসা বন্ধের এই আদেশ দেন। তবে সেসব স্কুলে এসির ব্যবস্থা আছে, পরীক্ষা চলমান আছে, ও লেভেল, এ লেভেল পরীক্ষা ও কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য এই আদেশ প্রযোজ্য হবে না।

ঈশ্বরদীতে ৪২ দশমিক ৫ ডিগ্রি

পাবনা প্রতিনিধি জানান, অসহনীয় গরমে অতিষ্ঠ পাবনার জনজীবন। গত কয়েক সপ্তাহ ধরে জেলার ওপর দিয়ে বয়ে যাচ্ছে তীব্র থেকে অতি তীব্র মাত্রার তাপদাহ। দুই দিনের ব্যবধানে সোমবার ছাড়িয়ে গেল চলতি মৌসুমের জেলার সর্বোচ্চ তাপমাত্রার রেকর্ড। এ দিন জেলার ঈশ্বরদীতে ৪২ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে। এর আগে ২৬ এপ্রিল শুক্রবার ঈশ্বরদীতে ৪২ দশমিক ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছিল।

এদিকে, অসহনীয় তাপদাহে জেলার জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। বিশেষ করে খেটে খাওয়া দিনমজুরদের অবস্থা শোচনীয়। এছাড়াও আম, লিচু, ধানসহ কৃষিক্ষেতেও ব্যাপক প্রভাব পড়ছে তাপদাহের। হাসপাতালগুলোতে সর্দিজনিত রোগীর সংখ্যা বাড়ছে। বিশেষ করে শিশুদের রোগ বাড়ছে।

ঢাকায় যে কারণে গরমের তীব্রতা

আবহাওয়া বিজ্ঞানীরা বলছেন, জনসংখ্যার আধিক্যের কারণে রাজধানী তাপমাত্রার বেশি ঝুঁকিতে রয়েছে। ঢাকায় তাপমাত্রা অনুভূত হয় অনেক বেশি। তাদের মতে, ঢাকার যেখানে গাছপালা ও জলাভূমি কম; সেখানে বৃক্ষ ও জলাভূমি আছে এমন এলাকার চেয়ে তাপমাত্রা ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস বেশি।

চলতি মাসে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ইনস্টিটিউট অব রিমোট সেন্সিং অ্যান্ড জিআইএসের এক গবেষণা সমীক্ষায় বলা হয়েছে, ঢাকার ২০ শতাংশ স্থানে গাছপালা থাকা উচিত হলেও আছে মাত্র ২ শতাংশে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ও রমনা পার্ক এলাকার তুলনায় ঢাকার বাণিজ্যিক এলাকায় তাপমাত্রার থাকে ২ ডিগ্রি বেশি।

বায়ুমন্ডলীয় দূষণ অধ্যয়ন কেন্দ্রের (ক্যাপস) করা ২০১৭ ও ২০২৪ সালের ঢাকা শহরের বিভিন্ন এলাকার তাপমাত্রার তারতম্যের মূল্যায়ন সম্পর্কিত প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, রাজধানী ঢাকায় দিন দিন তাপমাত্রা বেড়েই চলেছে। এর মধ্যে এলাকাভিত্তিক সবচেয়ে বেশি গরম বেড়েছে মহাখালী ও গুলিস্তানে।

প্রতিবেদনে দেখা গেছে, ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন আওতাধীন এলাকায় ২০১৭ সালে গড় তাপমাত্রা ছিল ৩৩ দশমিক ৩৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস। ২০২৪ সালে সেটি হয়েছে ৩৭ দশমিক ৩৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস। অপরদিকে, ২০১৭ সালে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের বিভিন্ন এলাকায় গড় তাপমাত্রা ছিল ৩৩ দশমিক ৫০ ডিগ্রি সেলসিয়াস। ২০২৪ সালে এসে বেড়ে হয়েছে ৩৬ দশমিক ৫৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস।

রাজধানীর শাহবাগ, রমনা পার্ক, সোহরাওয়ার্দী উদ্যান, বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় (বুয়েট) ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় উষ্ণতার মাত্রা সবচেয়ে কম। এসব এলাকায় বসবাসকারীরা এই গ্রীষ্মে তুলনামূলক কম বিপদে আছেন। রাজধানীর সবচেয়ে উষ্ণ এলাকা এখন কামরাঙ্গীরচর ও আদাবর। এ ছাড়া ধানমন্ডি এলাকায়ও উষ্ণতার মাত্রা তীব্র হয়ে উঠেছে।

বাংলাদেশ রেডক্রিসেন্ট সোসাইটি থেকে ২৪ এপ্রিল প্রকাশ করা এক প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে, উষ্ণতার বিপদে থাকা এলাকাগুলো হচ্ছে কামরাঙ্গীরচর, মিরপুর, গাবতলী, গোড়ান, বাসাবো, টঙ্গী, শহীদনগর, বাবুবাজার, জুরাইন, হাজারীবাগ, পোস্তগোলা, যাত্রাবাড়ী, তেজকুনীপাড়া, নাখালপাড়া, সায়েদাবাদ, কুর্মিটোলা, আজমপুর, কামারপাড়া, মোহাম্মদপুর, আদাবর ও মহাখালী। গ্রীষ্মের পুরো সময়জুড়ে এসব এলাকা তাপপ্রবাহের বিপদে থাকছে।

তবে শাহবাগ, রমনা পার্ক, সোহরাওয়ার্দী উদ্যান ও আশপাশের এলাকায় উষ্ণতার বিপদ কম। এমনকি কম ঝুঁকির অন্য এলাকাগুলোর মধ্যে রয়েছে উত্তরখান, খিলক্ষেত ও ডেমরা।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, কামরাঙ্গীরচর ও আদাবরের তাপমাত্রা এতটাই বেশি যে, সেখানে ঘরের বাইরে বের হয়ে অল্প সময় অবস্থান করলেই নানা ধরনের স্বাস্থ্যঝুঁকি তৈরি হচ্ছে। এসব এলাকার রিকশাচালক, ভ্যানচালক, হকার, নির্মাণশ্রমিক ও নিম্নআয়ের মানুষেরা স্বাভাবিক সময়ের চেয়ে কম কাজ করতে পারছেন। দাবদাহের কারণে রোগবালাই বেড়ে দরিদ্র মানুষের চিকিৎসা ব্যয় বেড়ে যাচ্ছে।

রাজধানীর বাণিজ্যিক এলাকার মধ্যে মতিঝিল, ফার্মগেট, মহাখালী, কারওয়ান বাজার ও গুলশান এলাকায় উষ্ণতা মাত্রাতিরিক্ত অবস্থায় পৌঁছেছে। কিন্তু এসব এলাকার বাণিজ্যিক ভবনগুলোতে শীতাতপ নিয়ন্ত্রণ যন্ত্রের ব্যবহারের কারণে ভেতরে অবস্থান করা মানুষ কম ঝুঁকিতে আছেন। তবে ভবনগুলোর বাইরে বা সড়ক এবং উন্মুক্ত স্থানে উষ্ণতা আরও বেড়ে যাচ্ছে এসব ভবনের শীতাতপ নিয়ন্ত্রণ যন্ত্রের কারণে।

পরিবেশ বিশেষজ্ঞরা বলছেন, রাজধানীর ৯০ শতাংশ এলাকা গ্রীষ্মকালের প্রায় পুরোটা সময় উষ্ণ বা তাপীয় দ্বীপে পরিণত হচ্ছে। ঢাকার পরিকল্পিত আবাসিক এলাকা উত্তরা, মিরপুর ও ধানমন্ডিতেও একই ধরনের উষ্ণতার বিপদ তৈরি হয়েছে। অল্প জায়গায় বিপুল সংখ্যক মানুষের বসতি, অতিমাত্রায় শীতাতপ নিয়ন্ত্রণ যন্ত্রের ব্যবহার, গাছপালা ও জলাভূমি না থাকা এবং রাজধানী শহরের বেশির ভাগ জায়গা কংক্রিটের স্থাপনা দিয়ে আচ্ছাদিত হয়ে যাওয়ার কারণে অতি উষ্ণতার ঝুঁকি বছর বছর বাড়ছে।

বায়ুমন্ডলীয় দূষণ অধ্যয়ন কেন্দ্র ও স্টামফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগের চেয়ারম্যান ড. আহমদ কামরুজ্জামান মজুমদারের মতে, বৈশ্বিক জলবায়ু পরিবর্তনের পাশাপাশি অপরিকল্পিত নগরায়ণ, বাতাস সঞ্চালন না হওয়া, সবুজ নিধন হওয়ার ফলে প্রতিবছর ক্রমান্বয়ে তাপমাত্রা বেড়ে যাচ্ছে।

আবহাওয়াবিদ আবুল কালাম মলিস্নক জানান, সূর্যকিরণের সময় বেড়েছে। প্রায় ৮ থেকে ১০ ঘণ্টা আমরা সূর্যকিরণ পাচ্ছি। বায়ুপ্রবাহ কম। এ জন্য প্রায় সারা দেশেই তাপপ্রবাহ বিদ্যমান আছে। এর মধ্যে আবার বাতাসে জলীয়বাষ্পের পরিমাণ বেশি হওয়ার কারণে তাপমাত্রা অল্প কমলেও গরমের অনুভূতি একই রকম আছে।

চলমান তাপ প্রবাহের মধ্যে রোববার হিটস্ট্রোকে সারা দেশে ১৭ জনের মৃতু্য হয়েছে। আবহাওয়া অধিদপ্তর তথ্যমতে, দেশের ইতিহাসে এর আগে একদিনে হিটস্ট্রোকে এত মানুষের মৃতু্যর রেকর্ড নেই।

অন্যদিকে, ঢাকাসহ পাঁচ জেলায় তীব্র তাপপ্রবাহের কারণে বন্ধের নির্দেশনার পরও কোনো মাধ্যমিক বিদ্যালয় খোলা রাখা হয়েছে কিনা তা খতিয়ে দেখা হবে বলে জানিয়েছেন শিক্ষামন্ত্রী মহিবুল হাসান নওফেল।

সোমবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের নবাব নওয়াব আলী চৌধুরী সিনেট ভবনে 'ভাষা আন্দোলন এবং বিশ্বে বাংলাভাষী স্বাধীন-সার্বভৌম রাষ্ট্রের আবির্ভাব' শীর্ষক দু'দিনব্যাপী আন্তর্জাতিক সম্মেলন উদ্বোধনী অনুষ্ঠান শেষে সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন তিনি।

তিনি বলেন, কোনো শিক্ষা প্রতিষ্ঠান যদি বিরাজমান তাপমাত্রার পরও খোলা রাখে তাহলে সেটা দেখা হবে। তবে এ নিয়ে আমি কোনো মন্তব্য করতে চাই না।

নড়াইলে শ্রেণিকক্ষে অসুস্থ ১২ শিক্ষার্থী

লোহাগড়া উপজেলার ইতনা মাধ্যমিক বিদ্যালয় ও কলেজে প্রচন্ড তাপদাহের কারণে স্কুল শাখার ১২ শিক্ষার্থী অসুস্থ হয়ে পড়ে। তাদের মধ্য ছয়জন শিক্ষার্থী জ্ঞান হারায়। সোমবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে স্কুল চলাকালীন শিক্ষার্থীরা অসুস্থ হয়ে পড়ে। পরে জেলা শিক্ষা কর্মকর্তার নির্দেশে প্রতিষ্ঠানটি ছুটি ঘোষণা করা হয়।

বিষয়টি নিশ্চিত করে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ অনিদ্য সরকার বলেন, 'স্কুল চলাকালীন বেলা সাড়ে ১১টার দিকে ১২ জন শিক্ষার্থী প্রচন্ড তাপদাহের কারণে অসুস্থ হয়ে পড়ে। তাদের মধ্য ছয়জন শিক্ষার্থী জ্ঞান হারিয়ে ফেলে। ইতনা সরকারি স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কেন্দ্রের ডা. বজলুর রহমানকে খবর দেওয়া হলে তিনি দ্রম্নত স্কুলে চলে আসেন। তিনি অসুস্থ শিক্ষার্থীদের প্রাথমিক চিকিৎসা দেন। চিকিৎসা শেষে শিক্ষার্থীদের নিজ নিজ অভিভাবকের হাতে তুলে দেওয়া হয়। অসুস্থ সব শিক্ষার্থী এখন তাদের বাড়িতে আছে এবং সুস্থ আছে।'

এ বিষয়ে ইতনা সরকারি স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কেন্দ্রের কর্তব্যরত চিকিৎসক ডা. বজলুর রহমান বলেন, 'তীব্র তাপমাত্রার কারণে শিক্ষার্থীরা অসুস্থ হয়ে পড়েছে। সবার হার্টবিট বেশি ছিল, সবার প্রচুর পরিমাণে ঘাম বের হচ্ছিল। প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে তারা সবাই সুস্থ আছে। তবে তাদের উন্নত চিকিৎসার জন্য লোহাগড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপেস্নক্সে নেওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।'

খুলনায় বৃষ্টির জন্য ইসতিসকার নামাজ

খুলনায় ২৫ বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ

খুলনা অফিস জানায়, সোমবার খুলনায় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৪১ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড হয়েছে, যা গত ২৫ বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ। শুধু খুলনা শহর নয়, বিভাগের সব জেলার তাপমাত্রা ঊর্ধ্বমুখী। এ দিন দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের সীমান্তবর্তী জেলা চুয়াডাঙ্গায় দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৪৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করা হয়েছে। আর যশোরে রেকর্ড হয়েছে ৪২ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস।

আবহাওয়া বিভাগের তথ্য অনুযায়ী, গত বছরের এপ্রিলে খুলনা শহরে ৩৪ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হলেও চলতি বছরের ২৯ দিনে বৃষ্টিপাত হয়েছে মাত্র ৭ মিলিমিটার। গত বছর তাপদাহের স্থায়িত্বকাল ছিল এক সপ্তাহ। আর এবার ১২ দিন ধরে চলছে তীব্র তাপদাহ।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়
X
Nagad

উপরে