শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

রাবারড্যামে ফুটো হওয়ায় বোরোর আবাদ নিয়ে দুশ্চিন্তায় কৃষক

চিরিরবন্দর (দিনাজপুর) প্রতিনিধি
  ০৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৩, ০০:০০
দিনাজপুরের চিরিরবন্দরে ফুটো হয়ে যাওয়া রাবারড্যাম -যাযাদি

দেশের অন্যতম দিনাজপুরের মোহনপুর রাবারড্যামটি ফুটো হওয়ায় সেচ মৌসুমে ইরি-বোরোর আবাদ নিয়ে দুশ্চিন্তায় পড়েছেন শতাধিক কৃষক। এতে দিনাজপুরের সদর ও চিরিরবন্দর উপজেলার ৯টি ইউনিয়নের অন্তত ৬ হাজার হেক্টর জমি সেচ সংকটে পড়বে। শুকনো মৌসুমে রাবারড্যামটি ফুলিয়ে আত্রাই নদীর ৪৪ কিলোমিটার এলাকায় পানি ধরে রাখা হয়। সেই পানি দিয়ে দুই উপজেলার অন্তত ৬ হাজার হেক্টর জমিতে সেচ দিয়ে সুবিধাভোগীরা ইরি-বোরোসহ বিভিন্ন ফসল চাষাবাদ করে থাকেন। রাবারড্যামটি ফুটো হওয়ায় পানি ধরে রাখা যাচ্ছে না। ফলে শুকিয়ে যাচ্ছে আত্রাই নদীর পানি।

জানা যায়, নদীটির কোনো স্থানে ধু-ধু বালুচরে পরিণত হয়েছে। ভরা মৌসুমে এ অবস্থার কারণে বিপাকে পড়েছেন শতাধিক কৃষক। গত মৌসুমেও এমন অবস্থার সৃষ্টি হয়েছিল। রাবারড্যামটি বারবার ফুটো হয়ে সমস্যার সৃষ্টি হচ্ছে। রাবারটি সম্পূর্ণরূপে পরিবর্তন করা হলে এর স্থায়ী সমাধান হতে পারে বলে সংশ্লিষ্টরা মনে করছেন।

শুকনো মৌসুমে সেচ কাজে কৃষকের সুবিধার্থে চিরিরবন্দরের সাঁইতাড়া ইউনিয়নে কাঁকড়া নদীতে সরকার ২০০১ সালে একটি রাবারড্যাম নির্মাণ করে। শুকনো মৌসুমে বেশি পরিমাণে পানি ধরে রেখে সেচ সুবিধার জন্য ২০১৩ সালে দিনাজপুরের সদর উপজেলার মোহনপুর গ্রামে আরেকটি রাবারড্যাম নির্মাণ হয়। গত কয়েক বছর ধরে শুকনো মৌসুমে রাবারড্যাম দুইটি চালু রেখে পানি ধরে রাখার মাধ্যমে কাঁকড়া ও আত্রাই নদীর দুই পাড়ের বিস্তীর্ণ মাঠ সেচের আওতায় এনে বিভিন্ন ফসল ফলানো হচ্ছে। তবে গত দুই বছর ধরে কৃষকরা মোহনপুর রাবারড্যামের সুবিধা ঠিকমতো পাচ্ছেন না। কখনো বিদু্যতের বিল বকেয়া থাকায়, আবার কখনো রাবারড্যামের বেলুনের পাইপ ফুটো হওয়ায় পানি আটকানো সম্ভব হচ্ছে না। ফলে চলতি মৌসুমে ফসলি জমি নিয়ে দুশ্চিন্তায় পড়েছেন কৃষকরা। তারা এ সমস্যার স্থায়ী সমাধান চান।

উপজেলার ভাবকী গ্রামের কৃষক মোকছেদুল ইসলাম জানান, এবার তিনি আড়াই বিঘা জমিতে বোরো চাষের জন্য প্রস্তুতি নিয়েছেন। প্রতি বছর আত্রাইর রাবারড্যামেরর আটকানো পানি দিয়েই চাষ করেন। কিন্তু এবারো রাবারড্যামটি নষ্ট হওয়ায় পানির অভাবে জমি প্রস্তুত ও বোরো রোপণে সমস্যায় পড়েন। একই কথা ব্যক্ত করলেন কৃষক এমদাদ হোসেনসহ আরও বেশ কয়েকজন কৃষক।

মোহনপুর রাবারড্যামেরর পানি ব্যবস্থাপনা সমবায় সমিতির সাধারণ সম্পাদক রেজাউল ইসলাম বলেন, কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করে গত মৌসুমের শেষের দিকে তা ঠিক করেন। আবারও পাইপ ফুটো হয়ে গেছে। গত এক মাস ধরে আলোচনা চলছে, তারা দ্রম্নত ঠিক করে দেবে বলে জানিয়েছে।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ জোহরা সুলতানা জানান, গত বছর রবি মৌসুমে একই অবস্থা হয়েছিল। সেটি মেরামত করে কৃষকরা সুবিধা পেলেও আবারও পূর্বের মতো মোহনপুর রাবারড্যামের বেলুনের পাইপ নষ্ট থাকায় পানি আটকানো যাচ্ছে না। এ বিষয়ে এলজিইডিসহ ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা করেছেন। শিগগিরই সমাধান হবে বলে তারা জানান।

এ ব্যাপারে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর দিনাজপুরের নির্বাহী প্রকৌশলী এফ এম খায়রুল ইসলাম জানান, রাবারড্যামের দুই ধারে মেরামত করতে হবে। পানি বেশি থাকলে এটি সংস্কার করা যায় না। তাই পানি কমে আসায় এখন কয়েক দিনের মধ্যে সংস্কার কাজ শুরু করা হবে।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে