নতুন জঙ্গি সংগঠন জামাতুল আনসার ফিল হিন্দাল শারক্বীয়ার মিডিয়া অ্যান্ড আইটি বিভাগের প্রধান সাকিব বিন কামাল অবশেষে পুলিশের হাতে গ্রেপ্তার হয়েছেন। তিনি একজন বিএসসি ইঞ্জিনিয়ার। শীর্ষ এই জঙ্গি নেতা শিক্ষকতা পেশায় জড়িত। শিক্ষকতার আড়ালে তিনি জঙ্গি সংগঠনটির হয়ে কাজ করছিলেন। একই সঙ্গে তিনি অনলাইন ফ্রিল্যান্সিং কাজে জড়িত ছিলেন। গোপন অ্যাপস ব্যবহার করে ঢাকায় জঙ্গিদের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রাখতেন তিনি।
ঢাকা মহানগর পুলিশের কাউন্টার টেররিজম ইউনিট এমন তথ্যের সত্যতা নিশ্চিত করে। সূত্রটি বলেছে, গত ২৪ এপ্রিল রাতে ঢাকার সবুজবাগ থানাধীন কমলাপুর স্কুল অ্যান্ড কলেজ এলাকা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। গ্রেপ্তার সাকিব বিন কামাল একটি বেসরকারি ইঞ্জিনিয়ারিং ইউনিভার্সিটি থেকে বিএসসি ইঞ্জিনিয়ারিং পাস। তিনি শিক্ষকতা ও অনলাইন ফ্রিল্যান্সিং কাজে জড়িত। ২০১০ সাল থেকে তিনি জামায়াতুল মুসলিমিন ও নিষিদ্ধ জঙ্গি সংগঠন হিযবুত তাহরীরের সঙ্গে জড়িত। তিনি পুরোপুরি উগ্রবাদে বিশ্বাসী। উগ্র মতবাদে দীক্ষিত হয়ে সমমনাদের সঙ্গে যোগাযোগ করতে একটি গ্রম্নপ তৈরি করেন তিনি। গ্রম্নপটি ঢাকার বিভিন্ন স্থানে বৈঠক করে অর্থ সংগ্রহ ও নতুন জঙ্গি সংগঠনটির জন্য সদস্য সংগ্রহ করত। ২০১৩ সালে তিনি বৈশ্বিক উগ্রবাদের উত্থানে নব্য জেএমবি মতাদর্শের প্রতি অনুপ্রাণিত হয়ে তাদের মতাদর্শ প্রচার শুরু করেন। ২০১৫ সালে সন্ত্রাসবিরোধী আইনে গ্রেপ্তার হয়ে কারাগারে গিয়েছিলেন।
সূত্রটি জানিয়েছে, কারাগারে থাকার সময় সেখানে সাকিব বিন কামালের সঙ্গে পরিচয় হয় জামাতুল আনসার ফিল হিন্দাল শারক্বীয়ারর আধ্যাত্মিক নেতা শামিন মাহফুজের সঙ্গে। শামিন মাহফুজ তাকে নব্য জেএমবি থেকে নতুন জঙ্গি সংগঠন জামাতুল আনসার ফিল হিন্দাল শারক্বীয়ার মতাদর্শে অনুপ্রাণিত করতে সক্ষম হন। ২০১৭ সালে সাকিব কারাগার থেকে বেরিয়ে নতুন জঙ্গি সংগঠনটির হয়ে কাজ করতে থাকেন। শামিন মাহফুজের নেতৃত্বে সংগঠনের অন্য সদস্যদের সঙ্গে বৈঠক, কর্মপরিকল্পনা প্রণয়ন ও মিডিয়া-সিকিউরিটি বিষয়ে আলাপ-আলোচনা চলে তার। তারই ধারাবাহিকতায় পাহাড়ে সক্রিয় কুকি চিন ন্যাশনাল ফ্রন্টের (কেএনএফ) সঙ্গে সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরিত হয়। ওই সমঝোতা স্মারকের আওতায় সশস্ত্র প্রশিক্ষণ, অস্ত্র ক্রয়, রিক্রুটমেন্ট ও সংগঠনের নতুন নাম 'জামাতুল আনসার ফিল হিন্দাল শারক্বীয়া দেওয়া হয়।
জানা গেছে, প্রযুক্তি ও ইংরেজি ভাষায় দক্ষতা থাকায় শামিন মাহফুজ তাকে সংগঠনটির আইটি অ্যান্ড মিডিয়া বিভাগের প্রধানের দায়িত্ব দেন। শামিন মাহফুজের নির্দেশে সংগঠনের নিরাপত্তার স্বার্থে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর চোখ ফাঁকি দিয়ে নিরাপদে ইন্টারনেট ব্রাউজিং, গোপন যোগাযোগের অ্যাপ চালানো এবং পাহাড়ে ট্রেনিং ক্যাম্পে নাইট ভিশন সিকিউরিটি ক্যামেরা স্থাপনের বিষয়ে কাজ করেন সাকিব। সংগঠনের মানহাজ ও আক্বিদা ইংলিশে অনুবাদ করেন। তা একটি গেস্নাবাল পস্ন্যাটফর্মের মাধ্যমে সারাবিশ্বে ছড়িয়ে দিয়ে একটি গেস্নাবাল অডিয়েন্স তৈরির জন্য কাজ করেন। উগ্রবাদে জড়িত থাকার অভিযোগে তার বিরুদ্ধে ইতোপূর্বে সন্ত্রাসবিরোধী আইনে ঢাকার উত্তরা পশ্চিম ও রমনা থানায় দু'টি মামলা রয়েছে। ডিএমপির ডেমরা থানায় সন্ত্রাসবিরোধী আইনে দায়েরকৃত মামলায় তাকে গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে।