টাঙ্গাইলের ধনবাড়ী উপজেলার বানিয়াজান ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের নেতা বেলাল আকন্দকে আটক করার প্রতিবাদে মহাসড়ক অবরোধ কর্মসূচি পালন করেছেন বিক্ষুব্ধ নেতাকর্মীরা।
সোমবার রাতে উপজেলার সাত্তারকান্দি বাসস্ট্যান্ড এলাকার টাঙ্গাইল-জামালপুর মহাসড়কে গাছের গুঁড়ি ও টায়ায়ে আগুন জ্বালিয়ে মহাসড়ক অবরোধ করে রাখা হয়। এতে প্রায় দুই ঘণ্টা যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। পুলিশ এসে নেতাকর্মীদের আশ্বস্ত করলে তারা অবরোধ তুলে নেন।
সরেজমিন দেখা গেছে, আটকের ঘটনাকে কেন্দ্র করে অবরোধে উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও পুলিশের বিরুদ্ধে বিক্ষুব্ধরা প্রতিবাদ মুখর সেস্নাগান দিলে উত্তেজিত হয়ে পড়ে পুরো এলাকা।
বিক্ষুব্ধ নেতাকর্মীরা জানান, বেলাল আকন্দ উপজেলার বানিয়াজান ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের নেতা (সাবেক ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের আহ্বায়ক কমিটির সদস্য)। তিনি বানিয়াজানের নাথেরপাড়া গ্রামের আনোয়ার হোসেন নামের এক ছেলেকে শাসন করতে একটি চড় মারেন। এ ঘটনায় আনোয়ার থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করে। অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান হারুনার রশীদ হীরার নির্দেশে ধনবাড়ী থানা-পুলিশ সোমবার সকালে বেলালকে আটক করে। তার মুক্তির দাবিতে বিকালে থানার সামনে বিভিন্ন এলাকার নেতাকর্মীরা এক দফায় বিক্ষোভ ও সমাবেশ করে। এ নিয়ে দলীয় নেতাকর্মীদের দফায়-দফায় আলোচনাও হয়। কোনো সুরাহা না পাওয়ায় সন্ধ্যার পর সাত্তারকান্দি বাসস্ট্যান্ডে এসে বিক্ষুব্ধ নেতাকর্মীরা গাছের গুঁড়ি ও আগুন জ্বালিয়ে মহাসড়ক দুই ঘণ্টা অবরোধ করে রাখেন। পরে থানা-পুলিশ এসে নেতাকর্মীদের সঙ্গে আলোচনা করে পরিস্থিতি স্বাভাবিক করে।
স্থানীয় ইউপি সদস্য আনোয়ার হোসেন আনু বলেন, 'বেলাল আকন্দ আওয়ামী লীগের একজন কর্মী। তাকে না ছাড়ায় আমরা অবরোধ করি। অবরোধে উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান হীরাকে নিয়ে আপত্তিকর সেস্নাগান দেওয়া হয়। এ কর্মসূচির নেতৃত্ব দেন আওয়ামী লীগ নেতা স্বপন ঘোষ।'
কর্মসূচির বিষয়ে স্বপন ঘোষের কাছে জানাতে চাইলে তিনি বলেন, 'সামান্য একটি বিষয় নিয়ে পুলিশ বেলাল আকন্দকে আটক করে। পরে নেতাকর্মীরা বিক্ষোভ করেন।'
উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান হারুনার রশীদ হীরা বলেন, 'বিবাদীর পক্ষের লোকজন সন্ত্রাসী প্রকৃতির। বেলাল তাকে মারধর করে আহত করায় থানায় অভিযোগ দেয় ভুক্তভোগী। সেই অভিযোগে পুলিশ তাকে আটক করে। ওই সন্ত্রাসীরা বেলালকে থানা থেকে জোর করে ছিনিয়ে নিতে থানার সামনে অবস্থান নেয়। আমি আইনের বাইরে যাব না বলে জানালে স্বপন ঘোষের নেতৃত্বে এ কান্ড চালায়। অযথা আমাকে দোষারোপ করা হচ্ছে। বিষয়টি মন্ত্রীও জানেন।'
ধনবাড়ী থানার ওসি এইচ এম জসিম উদ্দিন বলেন, 'অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে বেলালকে জিজ্ঞাসাবাদে থানায় নিয়ে আসা হয়েছিল। রাতে বানিয়াজানের ইউপি চেয়ারম্যানের জিম্মায় তাকে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে স্থানীয়রা সড়ক অবরোধ করেছিল।'