বুধবার, ০৪ ডিসেম্বর ২০২৪, ১৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১
ফেরত পেতে তৎপরতা শুরু

তেঁতুলিয়ায় গণসাহায্য সংস্থার ১০ একর জমি বেদখল

তেঁতুলিয়া (পঞ্চগড়) প্রতিনিধি
  ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ০০:০০
তেঁতুলিয়ায় গণসাহায্য সংস্থার ১০ একর জমি বেদখল

পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়া উপজেলায় একসময়ে শিক্ষা বিস্তারে অনন্য ভূমিকা পালন করে গণসাহায্য সংস্থা নামের একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠান। বছরখানেক আগে অভ্যন্তরীণ বিশৃঙ্খলায় স্থমিত হয়ে যায় সংগঠনটির সব ধরনের কার্যক্রম। এই সময়ে তেঁতুলিয়া উপজেলার শালবাহান ইউনিয়নের মাঝিপাড়া ডাহুক গুচ্ছগ্রাম এলাকায় সামাজিক বনায়নকৃত প্রায় ১০ একর সাড়ে ১৪ শতক জমি বর্তমানে দখল হয়ে যায়। স্থানীয় কয়েকজন ব্যক্তি জমিগুলো দখল করে বর্তমানে চা বাগান করেছে বলে অভিযোগ উঠেছে।

তাদের দাবি বনায়নের হাজার হাজার গাছ কেটে ফেলা হয়েছে। গণসংগঠনের সদস্যদের বঞ্চিত করা হয়েছে। সম্প্রতি এনজিও প্রতিষ্ঠানটি আবারো ঘুরে দাঁড়ানোর চেষ্টা করছে। এরই মধ্যে নানা কর্মসূচি হাতে নিয়েছে তারা। একইসঙ্গে বেদখল হওয়া জমি উদ্ধারে জোর তৎপরতা শুরু করেছে তারা। গণসাহায্য সংস্থার ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে জমিগুলো যারা ভোগদখল করে চা বাগান করেছেন তাদের সঙ্গে মতবিনিময় করেন এবং জমি দখল ছেড়ে দেওয়ার দাবি জানান।

গণসংগঠনের সদস্য হাসিনা বেগম বলেন, আমরা শিশু, কাঁঠাল, আমসহ প্রায় ৪০ হাজারেরও বেশি গাছের চারা লাগিয়েছি এখানে। কিন্তু আমাদের কষ্টে রোপিত গাছগুলো কেটে ফেলা হয়েছে। আমরা বাধা দিতে গেলে আমাদের বিভিন্নভাবে হয়রানি করা হয়েছে। আরেক সদস্য মিজানুর রহমান বলেন, ডাহুকের পাড়ে এখানে গণসাহায্য সংস্থা ছাড়া অন্য কারো জমি ছিল না। এখানে এখনো আমাদের সংগঠনের ঘর রয়েছে। আমরা বনায়ন করেছিলাম। সেটি কেটে ফেলে কয়েকজন দখল করে চা বাগান করেছে।

গণসাহায্য সংস্থার ম্যানেজার (ল্যান্ড) সাইফুল ইসলাম বলেন, আমাদের সংগঠনের মূল উদ্দেশ্য হতদরিদ্র শিক্ষাবঞ্চিত শিশুদের শিক্ষা সুবিধা নিশ্চিত করা। শিক্ষার পাশাপাশি ডাহুক বনায়ন নামে একটি প্রকল্প হাতে নেওয়া হয়। ১৯৯০ সালে ডাহুক নদীর পাশের প্রায় ১০ একর সাড়ে ১৪ শতক পতিত জমি কিনে নেয় আমাদের সংগঠন। পরে সেখানে গণসংগঠনের সদস্যরা বিভিন্ন গাছের হাজার হাজার চারা রোপণ করে।

২০১৪ থেকে ২০১৫ সালের মধ্যে আমাদের এই জমিগুলো স্থানীয় অধিবাসী রহুল আমিন হাওলাদারসহ তার ছেলে আশরাফ হোসেন রুবেল, মনোয়ার হোসেন হানিফ, আবুল কালাম ও কাজী অ্যান্ড কাজী নামের প্রতিষ্ঠান আমাদের জমিগুলো দখল করে চা বাগান করেছে। জমির সব কাগজপত্র আমাদের রয়েছে। ১৪২৯ বঙ্গাব্দ পর্যন্ত খাজনা পরিশোধ করা আছে। আমাদের সংগঠনের নামে নামজারিও আছে। তাই আমরা দাবি জানাই যেন আমাদের সংগঠনের জমি সংগঠনকে ফিরিয়ে দেওয়া হয়।

গণসাহায্য সংস্থার ম্যানেজার (এডমিন) মশিউর রহমান বলেন, ডাহুক বনায়ন নামে আমাদের ১০ একরেরও বেশি জায়গা ছিল। কিন্তু বেদখল হয়ে যাচ্ছে জমিগুলো।

রুহুল আমিন হাওলাদারের ছেলে আশরাফ হোসেন রুবেল বলেন, জমিটি আমরা ১৯৭৮ সালে কিনে নিয়েছি। মোট ১১ একর কেনা জমির মধ্যে আমরা প্রায় ৬ একর জমি বুঝে পেয়েছি। গণসাহায্য সংস্থা যে জমির কথা বলছে, সেগুলো এই দাগে নেই। গণসংগঠন যদি কাগজে-কলমে প্রমাণ দিতে পারে তাহলে আমরা জমি দিয়ে দিব। তেঁতুলিয়া স্যাটেলমেন্ট অফিসের উপ-সহকারী সেটেলমেন্ট অফিসার আলমগীর হোসেন বলেন, আমরা ওই সংগঠনের মৌখিক আবেদনের প্রেক্ষিতে মাঠে এসে জমিগুলো কার দখলে রয়েছে তা দেখতে এসেছি। এখন কাগজপত্র পর্যালোচনা করে এই সমস্যার সমাধানের চেষ্টা করব।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে