বৃহস্পতিবার, ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৪ আশ্বিন ১৪৩১

ভাড়া বাড়লেও সেবার মান বাড়েনি

সারিয়াকান্দির কালিতলা মাদারগঞ্জ নৌ-ঘাটে
সারিয়াকান্দি (বগুড়া) প্রতিনিধি
  ০১ অক্টোবর ২০২৩, ০০:০০
বগুড়ার সারিয়াকান্দির কালিতলা নৌ ঘাট -যাযাদি

বগুড়ার সারিয়াকান্দিতে কালিতলা নৌ-ঘাটে ভাড়া বাড়লেও সেবার মান বাড়েনি। বগুড়া জেলা পরিষদ নিয়ন্ত্রিত এই নৌ-ঘাটে মান্ধাতার আমলের মতোই চলছে সেবা। ভাড়া নিয়েও রয়েছে বিস্তর অভিযোগ। এ নিয়ে কাউন্টারে টিকিট মাস্টারের সঙ্গে বাঁধছে হর হামেশাই বাকবিতন্ডা।

প্রত্যক্ষদর্শী ও যাত্রী সূত্রে জানা গেছে, বগুড়ার সারিয়াকান্দি উপজেলার কালিতলা-মাদারগঞ্জ নৌ-ঘাট আদিকালের। এই ঘাটে বেলা ১১টায়, দুপুর ২টায় ও বিকাল ৪ টায় যাত্রীবোঝাই নৌকা ছাড়ে যমুনা নদীর ওপাড়ে।

অপরদিকে সারিয়াকান্দির কাজলা ইউনিয়নের জামথল মাদারগঞ্জ ঘাটে থেকে আসে সকাল ৯টা দুপুর ২টা এবং বিকাল ৪টায় নিয়মিতভাবে যাতায়াত করে প্রতিদিন। রোদ-বৃষ্টি যাই হোক না কেন, বড় রকমের কারণ ছাড়া যাতায়াতে তেমন কোনো হের ফের হয় না এই নিয়মের। তবে যাতায়াতে প্রতিনিয়ত এই নৌ-পথে শত শত যাত্রীর দুর্ভোগের শেষ নেই। যাত্রীদের জন্য কোনো পাড়েই নেই যাত্রী ছাউনি। কালিতলা ঘাটে যাত্রীদের জন্য নামমাত্র টয়লেট থাকলেও জামথল মাদারগঞ্জ ঘাটে তাও নেই। বিশেষ করে মহিলা যাত্রীদের এ ক্ষেত্রে কষ্টের শেষ থাকে না।

এ ছাড়াও খোলা নৌকায় যাত্রী পারাপার চলছে বহু আ আগে থেকেই। রোদ, ঝড়, বৃষ্টি মাথায় নিয়ে চলতে যাত্রীদের দুর্ভোগ পোহাতে হয়। বিশেষ করে নারী ও শিশুদের ক্ষেত্রে এই সমস্যা একটু ভিন্ন রকমের।

মোটর সাইকেলসহ অন্যান্য যানবাহন তোলার কোনো ব্যবস্থা নেই এই ঘাটে। কয়েক কেজি ওজনের হাতে থাকা মালামালের জন্য ভাড়া গুণতে হয় যাত্রীদের। যাত্রীদের এক পাড়ের জন্য ৮০ টাকা দিতে হয় মাথাপিছু। কোনো যাত্রী জরুরি ভিত্তিতে যমুনা নদী পাড় হতে চাইলে মাথাপিছু ৮০ টাকা ভাড়া ইজারদারকে পরিশোধ করার পর অন্য নৌকায় যেতে হয়।

শনিবার সকালে কালিতলা ঘাটে নদী পারের সময় মাদারগঞ্জের গফরগাঁও গ্রামের মোয়াজ্জেম হোসেন বলেন, 'আমি ৭-৮ কেজি ওজনের মরিচের চারার কার্টুন নিয়েছি। হাতে থাকা এই কার্টুনের জন্য আমাকে অতিরিক্ত ৫০ টাকা ভাড়া গুণতে হয়েছে।'

সারিয়াকান্দির কাজলা ইউনিয়নের ফজল মিয়া বলেন, 'এ ঘাটে যাতায়াত করা খুবিই মুশকিল হয়েছে আমাদের। ৩০ কেজি ওজনের আটার বস্তা নিতে আমাকে বাড়তি ভাড়া দিতে হয়েছে ৫০ টাকা।'

মাদারগঞ্জের বালিজুড়ি এলাকার সুমনা আক্তার বলেন, 'এই ঘাটে আমরাতো আগেও ৪০ টাকায় পার হয়েছি। ভাড়া এখন এত বেশি কেন এই গলাকাটা ভাড়ার তো কেউ প্রতিবাদ করেন না।'

এ ব্যাপারে ঘাটের ইজারাদার শফিকুল ইসলাম বলেন, 'ঘাটের ইজারা মূল্য ২০২১ সালে ছিল প্রায় ৭৩ লাখ টাকা, ২০২২ সালে ৯৭ লাখ, তবে চলতি বছর সে ঘাটের ডাক হয়েছে এক কোটি ৫৪ লাখ টাকা। তবুও আমরা ভাড়া বেশি নিচ্ছি না। নিয়ম মেনেই ভাড়া নিচ্ছি।'

বগুড়া জেলা পরিষদের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা গোলাম শাহ নেওয়াজ বলেন, 'আমরা ওই ঘাটের মান্ধাতা আমলের সেবা রাখব না। সেবার মান উন্নত করতে এরই মধ্যে আমরা প্রকল্প গ্রহণ করেছি। বেশি ভাড়া নেওয়ার বিষয় আমার জানা নেই।'

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে