সোমবার, ২৯ এপ্রিল ২০২৪, ১৬ বৈশাখ ১৪৩১
দুই লাখ মানুষের দুর্ভোগ

মির্জাপুরের চার ইউনিয়নে ৬৪টি কাঁচা সড়ক

স্টাফ রিপোর্টার, টাঙ্গাইল
  ২১ অক্টোবর ২০২৩, ০০:০০

টাঙ্গাইলের মির্জাপুর উপজেলার অবহেলিত পাহাড়ি অঞ্চলের চার ইউনিয়নের অধিকাংশ রাস্তা কাঁচা ও কর্দমাক্ত হওয়ায় যোগাযোগের ক্ষেত্রে দুই লক্ষাধিক মানুষের দুর্ভোগ চরমে পৌঁছেছে। উপজেলার লতিফপুর, তরফপুর, আজগানা ও বাঁশতৈল ইউনিয়নের অন্তত ৬৪টি গ্রামীণ রাস্তা গত ৫৩ বছরেও পাকাকরণ করা হয়নি। ফলে স্থানীয়রা যোগাযোগের ক্ষেত্রে সীমাহীন দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন ও কৃষিপণ্য বিপণনে অধিক ব্যয় বহন করতে বাধ্য হচ্ছে।

জানা গেছে, মির্জাপুর উপজেলার লতিফপুর, তরফপুর, আজগানা এবং বাঁশতৈল ইউনিয়ন চারটি মূলত পাহাড়ি এলাকায় অবস্থিত। ইউনিয়ন চারটি জেলা শহর টাঙ্গাইল ও উপজেলা সদর মির্জাপুর থেকে দুর্গম এলাকা হওয়ায় উন্নয়নের তেমন ছোঁয়া লাগেনি। ইউনিয়নগুলোর মধ্যে লতিফপুর ইউনিয়নের ১২টি, তরফপুর ইউনিয়নে ১৫টি, আজগানা ইউনিয়নে ১৭টি এবং বাঁশতৈল ইউনিয়নে ২০টি রাস্তার অবস্থা খুবই করুণ।

এলাকাবাসী জানান, ইউনিয়ন চারটি দুর্গম পাহাড়ি অঞ্চল বেষ্ঠিত। এ এলাকার প্রতিটি গ্রামের মানুষ কৃষির ওপর নির্ভরশীল। রাস্তাঘাট পাকা না হওয়ায় যোগাযোগের অভাবে তারা উৎপাদিত ফসলের ন্যায্য মূল্য থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন।

তারা আরও জানান, টাঙ্গাইল জেলা শহর ও মির্জাপুর উপজেলা সদরে যেতে তাদের ২০ থেকে ২৫ কিলোমিটার ঘুরে যোগাযোগ করতে হয়। এর মধ্যে সর্ববৃহৎ আজগানা ইউনিয়নের জনসাধারণকে গাজীপুর জেলার কালিয়াকৈর উপজেলার ওপর দিয়ে ৩০ থেকে ৫০ কিলোমিটার ঘুরে জেলা ও উপজেলার সঙ্গে যোগাযোগ করতে হয়। এতে একদিকে যেমন সময় অপচয় হচ্ছে অন্যদিকে দ্বিগুণ অর্থ খরচ হচ্ছে।

এলাকাবাসীর অভিযোগ, 'স্থানীয় নির্বাচন এলে জনপ্রতিনিধিরা এলাকার উন্নয়ন ও রাস্তাঘাট পাকাকরণের প্রতিশ্রম্নতি দিয়ে তাদের ভোটে নির্বাচিত হন। বিজয়ী হওয়ার পর তারা এলাকায় তেমন আসেন না এবং রাস্তাঘাটের উন্নয়নেরও খোঁজখবর নেন না। এভাবেই প্রতিশ্রম্নতি আর আশ্বাসের পর আশ্বাসে কেটে গেছে ৫৩ বছর। তাদের যাতায়াতের জন্য রাস্তাগুলোর উন্নয়ন হয়নি- ভাগ্যেরও কোনো পরিবর্তন হয়নি।

মির্জাপুর উপজেলার পাহাড়ি অঞ্চলের অবহেলিত চারটি ইউনিয়নের মধ্যে মধ্যে বাঁশতৈল ইউনিয়নের ছয় থেকে সাতটি গ্রামে ক্ষুদ্র-নৃগোষ্ঠীর বসবাস রয়েছে। এ ইউনিয়নের অধিকাংশ রাস্তার অবস্থা খুবই বেহাল ও করুণ। একটু বৃষ্টি হলেই প্রতিটি রাস্তার ওপর পানি জমে কর্দমাক্ত হয়ে যায়। তখন যানবাহন চলাচল তো দূরের কথা পায়ে হেঁটে চলাচলও কষ্টসাধ্য। এ ইউনিয়নের অন্তত ২০টি রাস্তা পাকাকরণ না হওয়ায় তারা রাস্তার ওপর বাঁশের চালি ফেলে পায়ে হাঁটার চেষ্টা করেন।

উপজেলা প্রকৌশলী (এলজিইডি) আরিফুর রহমান জানান, 'প্রতিটি এলাকার ক্ষতিগ্রস্ত ও গ্রামীণ কাঁচা রাস্তার তালিকা করে স্থানীয় সংসদ সদস্যের মাধ্যমে অর্থ বরাদ্দ চেয়ে সংশ্লিষ্ট দপ্তরে পাঠানো হয়েছে। ইতোমধ্যে কয়েকটি রাস্তার কাজ শুরু করা হয়েছে।'

স্থানীয় সংসদ সদস্য খান আহমেদ শুভ জানান, প্রায় দেড় বছর হলো তিনি উপ-নির্বাচনে এমপি নির্বাচিত হয়েছেন। তিনি জনগণের আশা-আকাঙ্ক্ষা পূরণে দিনরাত চেষ্টা করে যাচ্ছেন। প্রতিটি এলাকার রাস্তাঘাট, ব্রিজ-কালভার্ট, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে উন্নয়ন করেছেন। ইতোমধ্যে অনেক গ্রামীণ রাস্তা পাকাকরণ করা হয়েছে। যেগুলো কাঁচা রয়েছে সেগুলোর তালিকা তৈরি করে সংশ্লষ্ট মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে