মঙ্গলবার, ০৭ মে ২০২৪, ২৪ বৈশাখ ১৪৩১
শেরপুর-১ আসন

ভোটগ্রহণে 'ফ্রিস্টাইল অনিয়মের' অভিযোগ সাবেক হুইপ আতিকের

শেরপুর প্রতিনিধি
  ২২ জানুয়ারি ২০২৪, ০০:০০
শেরপুরে নির্বাচন পরবর্তী মূল্যায়ন সভায় বক্তব্য রাখেন বিদায়ী সংসদ সদস্য ও জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. আতিউর রহমান আতিক -যাযাদি

নির্বাচনের দুই সপ্তাহের মাথায় শেরপুর-১ (সদর) আসনে প্রশাসনের 'পক্ষপাতিত্ব' ও 'ফ্রিস্টাইল অনিয়মের' বিষয়ে অভিযোগ করেছেন বিদায়ী সংসদ সদস্য ও জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. আতিউর রহমান আতিক।

গত শনিবার দুপুরে শহরের উৎসব কমিউনিটি সেন্টারে আয়োজিত নির্বাচন পরবর্তী মূল্যায়ন সভায় সভাপতির বক্তব্যে সদ্য সমাপ্ত নির্বাচনের বিষয়ে অভিযোগ তুলে ধরেন তিনি।

এ সময় তিনি বলেন, 'এ আসন নৌকার ঘাঁটি। ১৯৯৬ থেকে ২০০৮-এর নির্বাচন পর্যন্ত প্রতিবারই নৌকা বিপুল ভোটে বিজয়ী হয়েছে। এবার সরকার এবং নির্বাচন কমিশনের নির্দেশনা উপেক্ষা করে স্থানীয় জেলা প্রশাসন ও পুলিশ প্রশাসন সরাসরি স্বতন্ত্র প্রার্থীর পক্ষ অবলম্বন করেছে। পশ্চিমাঞ্চলে ফ্রিস্টাইলে ভোট কাস্টের সুযোগ দিয়ে বিশেষ মিশন নিয়ে পূর্বাঞ্চলে ঝাঁপিয়ে পড়েছিল। তারা নৌকার নেতা-কর্মীদের চাপে রেখে তাদের সঙ্গে রূঢ় আচরণ করেছে। নৌকার কোনো অভিযোগে পাত্তা দেয়নি।'

তিনি আরও বলেন, 'নৌকা হারেনি, স্থানীয় প্রশাসন ব্যক্তিস্বার্থ চরিতার্থ করতে নৌকাকে পরিকল্পিতভাবে হারিয়েছে। এখন স্বতন্ত্র প্রার্থীর কাঁধে ভর করা বিএনপি-জামায়াতের সন্ত্রাসীরা প্রায় প্রতিটি এলাকায় তান্ডব শুরু করলেও তারা নীরব রয়েছে।'

তাই তিনি শেরপুরকে রক্ষায় জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপারের দ্রম্নত প্রত্যাহার দাবি করেন।

তিনি সদর উপজেলার ১৪টি ইউনিয়ন ও একটি পৌরসভার ১৪৪টি কেন্দ্রের মধ্যে একটি স্থগিত কেন্দ্রের ফলাফল ব্যতীত ১৪৩ কেন্দ্রের ফলাফল উদ্বৃত করে বলেন, ১১৫ কেন্দ্রে সুষ্ঠুভাবে ভোট প্রদানের হার দাঁড়িয়েছে ৪৮ ভাগ। এর মধ্যে নৌকা পেয়েছে ৯২ হাজার ৩৪৫ ভোট। আর স্বতন্ত্র প্রার্থীর ট্রাক প্রতীক পেয়েছে ৬৩ হাজার ৯৩৮ ভোট। অন্যদিকে অনিয়ন্ত্রিত ২৮টি কেন্দ্রে ভোট প্রদানের হার ৮৬ ভাগ। যার মধ্যে ট্রাক পেয়েছে ৭২ হাজার ৫৪৮ ভোট। আর নৌকা পেয়েছে এক হাজার ২৭ ভোট। এছাড়া একাধিক কেন্দ্রে ০ ভোট ও একাধিক কেন্দ্রে এক ও দুই ভোট দেখানো হয়েছে। তিনি বলেন, প্রশাসনের ছত্রছায়ায় ওই কাজটি হয়েছে। সরকারের নির্দেশনা বাস্তবায়নে তারা ব্যর্থ হয়েছে। তাদের শাস্তি হওয়া উচিত।

তিনি তৃণমূলের নেতাদের হামলা-মামলা ও হুমকির অভিযোগ প্রসঙ্গে বলেন, নির্বাচনোত্তর সহিংসতা শেরপুরে কখনো হয়নি। ২০০১-এর নির্বাচনেও না। এবার হচ্ছে। সেইসঙ্গে চলছে চাঁদাবাজি। এটাই তাদের বিজয় লাভের শিষ্টাচার।

তিনি বলেন, 'দায়িত্বের ২৫ বছর কখনো ঘুষ খাইনি। তাই ঘুষ না দেওয়ায় বিচারের বাণী নিভৃতে কাঁদছে। শেরপুরের মানুষ প্রশাসনের বিচার চাচ্ছে।' তিনি নেতা-কর্মীদের ধৈর্য ধারণ করার পরামর্শ দিয়ে বলেন, আজ থেকে অত্যাচার-নির্যাতন, চাঁদাবাজি বন্ধ না হলে প্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে। প্রয়োজনে রাস্তাঘাট অচল করে দিতে হবে।

মূল্যায়ন সভায় বক্তব্য রাখেন নৌকা প্রতীকের নির্বাচন পরিচালনা কমিটির আহ্বায়ক ও জেলা আওয়ামী লীগের সিনিয়র সহ-সভাপতি চন্দন কুমার পাল, সাবেক সহ-সভাপতি ও নৌকা প্রতীকের প্রধান নির্বাচনী এজেন্ট মিনহাজ উদ্দিন মিনাল, সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক আতিকুর রহমান বাচ্চু, সাবেক তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক রফিকুল ইসলাম আধার, সাবেক ধর্ম সম্পাদক দুলাল উদ্দিন, শহর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আনোয়ারুল হাসান উৎপল, সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আওলাদুল ইসলাম, জেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক নজরুল ইসলাম, জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি শোয়েব হাসান শাকিলসহ ১৪ ইউনিয়নের প্রতিনিধিরা।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে