সোমবার, ২৯ এপ্রিল ২০২৪, ১৬ বৈশাখ ১৪৩১

বালু তোলায় ঝুঁকির মুখে মনু নদীর চাতলাপুর সেতু

কুলাউড়া (মৌলভীবাজার) প্রতিনিধি
  ২৯ জানুয়ারি ২০২৪, ০০:০০
মৌলভীবাজারের মনু নদীর কুলাউড়া অংশে বালু তোলার কারণে ঝুঁকির মুখে থাকা চাতলাপুর সেতু -যাযাদি

মৌলভীবাজারের মনু নদীর কুলাউড়া উপজেলা অংশে নীতিমালা তোয়াক্কা না করে ইজারাদারের বিরুদ্ধে অবৈধভাবে বালু উত্তোলনের অভিযোগ পাওয়া গেছে। ফলে সীমান্তবর্তী শরীফপুর ইউনিয়নে সড়ক ও জনপথ বিভাগের চাতলাপুর চেকপোস্ট-শমসেরনগর সড়কে মনু নদীর ওপর নির্মিত ৬০ মিটার দৈর্ঘ্যের চাতলাপুর সেতুটি ঝুঁকির মুখে পড়েছে।

এই সেতু দিয়ে ভারতের সঙ্গে আমদানি রপ্তানিকারী যানবাহন চলাচল করে। সেতুটি ক্ষতিগ্রস্ত হলে চাতলাপুর চেকপোস্ট হয়ে ভারতের সঙ্গে দেশের আমদানি-রপ্তানি বন্ধ হয়ে যেতে পারে। মনু নদীর বেড়িবাঁধ ও মনু সেতুটি রক্ষার দাবিতে স্থানীয় ভুক্তভোগী মানুষ একাধিকবার মানববন্ধনও করেছেন।

স্থানীয়রা জানান, মনু নদীর বালুমহাল প্রতি বছর মৌলভীবাজারের জেলা প্রশাসকের কার্যালয় থেকে ইজারা দেওয়া হয়। বর্তমানে একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান জেলা প্রশাসকের কার্যালয় থেকে শরীফপুর ইউনিয়নে অবস্থিত মনু নদীর চাতলা ঘাটটি এক বছরের জন্য শর্ত সাপেক্ষে এক কোটি ৮ লাখ টাকা দিয়ে ইজারা নেয়।

কিন্তু ইজারাদার সেতুর এক কিলোমিটারের অনেক ভেতর থেকে ৪-৫টি ড্রেজার মেশিন দিয়ে বালু উত্তোলন করছেন। অথচ মনু নদীর বালু উত্তোলনের জন্য নীতিমালায় উলেস্নখ ছিল, নদীর ওপর নির্মিত ব্রিজের উভয় পাশে প্রায় এক কিলোমিটারের মধ্যে কোনো বালু উত্তোলন করা যাবে না। এতে নদীর প্রতিরক্ষা বাঁধসহ সড়ক বিভাগের জনগুরুত্বপূর্ণ সড়ক ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।

বালু ইজারাদার প্রতিষ্ঠানের সহযোগী জুয়েল মিয়া জানান, 'নিয়ম মেনেই বালু উত্তোলন করছি। জেলা প্রশাসক কার্যালয় থেকে চাতলাঘাটে মোট ৩৭ একর জায়গায় বালু উত্তোলনের অনুমতি দেওয়া হয়েছে। ওই ব্রিজটিও এই জায়গার মধ্যে পড়েছে। কিন্তু আমরা ব্রিজের ৫০০ মিটার দূর থেকে বালু তুলছি।'

শরিফপুর ইউপি চেয়ারম্যান খলিলুর রহমান জানান, গত জুলাই মাসে ব্রিজের নিচ থেকে বালু উত্তোলন বন্ধের দাবিতে জেলা প্রশাসকসহ বিভিন্ন দপ্তরে এলাকাবাসীর পক্ষ থেকে অভিযোগ দিয়েছিলাম। পরবর্তীতে কুলাউড়া উপজেলা প্রশাসন সরেজমিনে এসে ইজারাদারদের ড্রেজার মেশিন সরানোর নির্দেশনা দেন। ঝুঁকিপূর্ণ ব্রিজ রক্ষায় ইজারাদারের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানাচ্ছি।

কুলাউড়া এসি ল্যান্ড মেহেদী হাসান জানান, অভিযোগ পাওয়ার পর দুইবার সরেজমিনে পরিদর্শন করে তদন্ত প্রতিবেদন জেলা প্রশাসক কার্যালয়ে দেই। তখন ওই ইজারাদারকে নির্দেশনা দেওয়ার পর অবৈধ ড্রেজার মেশিন তারা সরিয়েছিল। এখন যদি আবার বালু উত্তোলন করতে দেখা যায় তাহলে প্রশাসনিকভাবে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

সওজ বিভাগের মৌলভীবাজারের নির্বাহী প্রকৌশলী কায়ছার হামিদ জানান, আমাদের সড়ক বিভাগের ঝুঁকিপূর্ণ ব্রিজটি সরেজমিনে দেখে পদক্ষেপ নেওয়া হবে।

ইউএনও মাহমুদুর রহমান মামুন জানান, কমপক্ষে ব্রিজের ৫০০ মিটার দূর থেকে বালু উত্তোলন করতে হবে। যদি নিয়ম না মানে তাহলে ইজারাদারের বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা নেবেন।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে