সোমবার, ২০ মে ২০২৪, ৬ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১
উপজেলা নির্বাচন-২০২৪

বিচ্ছিন্ন ঘটনায় উপজেলা নির্বাচনে ভোটগ্রহণ সম্পন্ন

স্বদেশ ডেস্ক
  ০৯ মে ২০২৪, ০০:০০
বিচ্ছিন্ন ঘটনায় উপজেলা নির্বাচনে ভোটগ্রহণ সম্পন্ন

ষষ্ঠ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে প্রথম ধাপে বুধবার সকাল ৮টা থেকে ভোটগ্রহণ শুরু হয়েছে। তবে কেন্দ্রগুলোতে সরেজমিন গিয়ে দেখা গেছে ভোটার উপস্থিতি খুবই কম। কেন্দ্রের বাইরে নেতাকর্মীদের ভিড় ছিল লক্ষণীয়। বুধবার ভোট শুরুর প্রথম থেকেই কোনো কেন্দ্রই ভোটারদের দীর্ঘ লাইন চোখে পড়েনি। আঞ্চলিক স্টাফ রিপোর্টার ও প্রতিনিধিদের পাঠানো খবরে বিস্তারিত-

স্টাফ রিপোর্টার, যশোর জানিয়েছেন, প্রথম ধাপে যশোরের কেশবপুরে ভোটগ্রহণ শুরুর প্রথম চার ঘণ্টায় ভোট পড়েছে ১৫ শতাংশ। বুধবার সকাল ৮টায় ভোট শুরু হয়। প্রথম থেকেই উপজেলার কোনো কেন্দ্রই ভোটারদের তেমন উপস্থিতি ছিল না।

বিভিন্ন ভোট কেন্দ্র ঘুরে প্রিজাইডিং কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, দুপুর ১২টা পর্যন্ত গড়ে ১৫ শতাংশ ভোট পড়েছে। ভোটাররা এসে ভোট দিয়ে চলে যান। এ নির্বাচনে তিনটি পদে ১৪ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন। এর মধ্যে উপজেলার চেয়ারম্যান পদে সাতজন, ভাইস চেয়ারম্যান পদে পাঁচজন ও মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে দুইজন। কেশবপুরের নির্বাচনের ভোটগ্রহণ ইভিএমএ হওয়ায় উপজেলার ১১টি ইউনিয়নের ভোটাররা এবারই প্রথম ভোটিং মেশিনে ভোট প্রদান করেন। এর আগে ২০২১ সালের ২৮ ফেব্রম্নয়ারি কেশবপুর পৌরসভা নির্বাচনে প্রথমবার ইভিএমে ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়।

বুধবার সকালে কেশবপুর পাইলট মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয় কেন্দ্রে দেখা যায়, ভোটার উপস্থিতি ছিল খুবই কম। সকাল ৮টা থেকে ১০টা পর্যন্ত দুই ঘন্টায় ৭১ জন ভোটার ভোটাধিকার প্রয়োগ করেন। এই কেন্দ্রে মোট ভোটার সংখ্যা দুই হাজার ৪৯৪ জন। বিষয়টি জানান এ কেন্দ্রে দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রিজাইডিং অফিসার ও উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা শেখ আব্দুর রব।

এই কেন্দ্রে ভোট দিতে আসা উপজেলার ভোগতী এলাকার শফিউদ্দিন মোড়ল (৭০) বলেন, ইভিএমে ভোট দেওয়ার সময় বুঝতে অসুবিধা হওয়ায় ওখানকার স্যাররা (দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা) বুঝিয়ে দেন। পরে কোনো অসুবিধা হয়নি।

কেশবপুর সাহাপাড়ার অলোক সাহা (৫৮) বলেন, ভোট দিতে কোনো অসুবিধা হয়নি। ভালোভাবেই পছন্দের প্রার্থীকে ভোট দিয়েছি।

ভোট দিতে আসা কেশবপুর পৌর মেয়র রফিকুল ইসলাম বলেন, নির্বাচনের ক্ষেত্রে ইভিএম হলো সময়োপযোগী পদ্ধতি। খুবই অল্প সময়ের ভেতর ভোট দেওয়া যায়। এই ভোটে কোনো এদিক-ওদিক করার সুযোগ নেই। এর আগে উপজেলার মধ্যকুল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, কেশবপুর মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্র পরিদর্শন করে ভোটার উপস্থিতি খুবই কম লক্ষ্য করা গেছে।

উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা ও সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা রবিউল ইসলাম বলেন, নির্বাচনকে অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষভাবে সম্পন্ন করার জন্য মাঠে কাজ করছে নির্বাচন কমিশন। মাঠে রয়েছে, ১২ জন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও একজন জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট। প্রতিটি ভোটকেন্দ্রে নিয়োগ করা হয়েছে প্রয়োজনীয় সংখ্যক আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। এ ছাড়া মোবাইল ও স্ট্রাইকিং ফোর্স হিসেবে পুলিশ, আনসার,র্ যাব এবং বিজিবি মোতায়েন করা হয়েছে।

পঞ্চগড় প্রতিনিধি জানান, পঞ্চগড়ে উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে প্রথম ধাপে সদর, তেঁতুলিয়া ও আটোয়ারী উপজেলায় শান্তিপূর্ণভাবে ভোটগ্রহণ করা হয়েছে। কোনো কেন্দ্র থেকে অপ্রীতিকর কোনো ঘটনার খবর পাওয়া যায়নি। তবে ভোটার উপস্থিতি ছিল অনেক কম। বুধবার বেলা দুইটায় সদর উপজেলার খোলাপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে দেখা গেছে সেখানো কোনো ভোটার নাই।

প্রিজাইডিং অফিসার জানান, দুইটা পর্যন্ত দুই হাজার ৯৬২ জন ভোটারের মধ্যে ভোট প্রদান করেছেন ৩৩২ জন। ভোট প্রদানের হার শতকরা ১১.২০ ভাগ। পঞ্চগড় পৌর এলাকার বিপি সরাকরি উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্রে বেলা ১২টা পর্যন্ত ভোট পড়েছে ৮.৯৯ ভাগ। তিন উপজেলার প্রায় সব কেন্দ্রের চিত্র ছিল প্রায় একই। তিন উপজেলার ১৫৬টি ভোট কেন্দ্রে মোট ভোটার ছিল ৪ লাখ ৪২ হাজার ৮৭৩ জন। তিন উপজেলায় তিনটি পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন ৩৩ জন প্রার্থী।

ঠাকুরগাঁও প্রতিনিধি জানান, ঠাকুরগাঁওয়ের দুইটি উপজেলায় প্রথম ধাপের ভোটগ্রহণ হয়েছে। জেলার বালিয়াডাঙ্গী ও হরিপুর উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে মোট ৯০ কেন্দ্রের ৮০৮টি কক্ষে ভোটগ্রহণ হয়।

বালিয়াডাঙ্গী ও হরিপুরের কয়েকটি ভোটকেন্দ্রে গিয়ে ভোটারশূন্য দেখা যায়। বালিয়াডাঙ্গীর গোয়ালকারি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রের প্রিজাইডিং অফিসার আজিজুল ইসলাম জানান, বেলা ৯-১৫ পর্যন্ত এই কেন্দ্রে ৩২০০ ভোটারের মধ্যে ৬ জন ভোটার ভোট দিয়েছেন। মেঘলা আবহাওয়ার কারণে ভোটার উপস্থিতির এই অবস্থা বলে তিনি মনে করেন।

বালিয়াডাঙ্গী উপজেলায় চেয়ারম্যান পদে ৪ জন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। এছাড়া ভাইস চেয়ারম্যান পদে তিনজন ও মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে শীমা আক্তার বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়েছেন। অন্যদিকে হরিপুর উপজেলায় চেয়ারম্যান পদে চারজন, ভাইস চেয়ারম্যান পদে দুইজন ও মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে দুই জন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।

ভোটকেন্দ্রে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি ঠিক রাখতে ৮ পস্নাটুন বিজিবি, এক উপজেলায় ১৬ জন করে দুই উপজেলায় ৩২ জনর্ যাব, প্রতি উপজেলায় তিনটি দুই উপজেলায় মোট ৬টি গাড়িতে আনছার টহলে থাকছেন। এছাড়াও বালিয়াডাঙ্গীতে ৮ জন ম্যাজিস্ট্রেট ও হরিপুরে ৫ জন। মোট ১৩ জন ম্যাজিস্ট্রেট দায়িত্বে থাকবেন এবং দুই উপজেলায় মোট ৫৮৭ জন পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। এর মধ্যে বালিয়াডাঙ্গীতে ৩৫৭ জন ও হরিপুরের কেন্দ্রে ২৩০ জন পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।

বাগেরহাট প্রতিনিধি জানান, প্রথম ধাপের উপজেলা পরিষদ নির্বাচন বাগেরহাটের দুই উপজেলায় কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থায় শান্তিপূর্ণভাবে চলেছে। নির্বাচন সংক্রান্ত বিষয়ে কোথাও কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি বলে জানা গেছে। রামপাল ও কচুয়া উপজেলার ১৭টি ইউনিয়নের ৭৯ ভোট কেন্দ্রে ৫৬৯টি বুথে ভোটগ্রহণ হয়। এ দুই উপজেলার মোট ভোটার ২ লাখ ২৭ হাজার ৯৯৪ জন। বাগেরহাট পুলিশ অফিসের ডিআইও-১ সৈয়দ বাবুল আক্তার রামপাল ও কচুয়া উপজেলার নির্বাচন বিষয়ে জানান, অবাধ, সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণভাবে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষার দায়িত্বরতরা সঠিকভাবে দায়িত্ব পালন করেছেন।

বাগেরহাট জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা শেখ মুহাম্মদ জালাল উদ্দিন জানান, শান্তিপূর্ণভাবে ভোট অনুষ্ঠিত হয়েছে। কোথাও কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি।

আজমিরীগঞ্জ (হবিগঞ্জ) প্রতিনিধি জানান, হবিগঞ্জের আজমিরীগঞ্জে বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে ভোট কেন্দ্রে উপস্থিতি কমছে ভোটারদের। শেষ পর্যন্ত নিরুত্তাপ ভোটের মাধ্যমেই শেষ হলো ভোটগ্রহণ।

হাওড়াঞ্চলের মানুষ ধান তোলায় ব্যস্ত থাকায় এ উপজেলায় ভোট প্রয়োগের হার তুলনামূলক কম বলে নির্বাচনে দায়িত্বরতরা জানান।

\হবুধবার সকাল ৮টায় ২ হাজার ৩৭৬ ভোটারের এবিসি উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্রে ব্যালটে ভোট গ্রহণ শুরু হয়। বেলা ১২টা পর্যন্ত ভোট পড়ে ৮০০টি; এর পরের দুই ঘণ্টায় অর্থাৎ দুপুর ২টা পর্যন্ত আর মাত্র একশ' ভোট পড়ে। বদলপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে মোট ভোট ২ হাজার ৫২২। বেলা ১২টা পর্যন্ত সেখানে ভোট পড়ে ৮০০টি। পরের দুই ঘণ্টায় আর মাত্র ১০০ জন এসে ভোট দিয়েছেন।

দুপুর সোয়া ২টায় বদলপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রিসাইডিং কর্মকর্তা মাসউদ রানা বলেন, 'এখন একজন, দুইজন করে ভোটার আসছেন। তবে বেলা ১০টা থেকে ১২টা পর্যন্ত ভোটারদের ভিড় ছিল।'

তখন পর্যন্ত ৩৫ শতাংশ ভোট পড়েছে উলেস্নখ করে এ কর্মকর্তা বলেন, 'হাওড়াঞ্চলের লোকজন ধান তোলায় ব্যস্ত থাকায় অনেকে ভোট কেন্দ্রে আসছেন না। অন্যান্য অঞ্চলের তুলনায় এ অঞ্চলে ভোট প্রয়োগের হার কম।'

এবিসি উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রিসাইডিং অফিসার মহিবুর রহমান জানান, বেলা ১২টা পর্যন্ত ৩৩.৭ শতাংশ ভোট প্রয়োগ হয়। এরপর থেকে ভোটার আসার গতি কমে গেছে।

বদলপুর ইউনিয়নের বাসিন্দা আবু মিয়া জানান, তিনি দুই বিঘা জমির ধান কাটায় ব্যস্ত থাকায় ভোট কেন্দ্রে যেতে পারছেন না। ধান তোলা শেষ হওয়ার পর সময় থাকলে কেন্দ্রে গিয়ে পছন্দের প্রার্থীকে ভোট দেবেন।

\হএদিকে দুপুর ২টায় মিজাজিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে গিয়ে দেখা যায় একজনও ভোটার নেই। দুপুর ২টা পর্যন্ত সেখানে ৩ হাজার ১০০ ভোটারের মধ্যে ১ হাজার ১৬ জন ভোট দিয়েছেন। এ সময় কেন্দ্রে উপস্থিত ছিলেন ৩ জন নারী ভোটার।

আজমিরীগঞ্জ উপজেলায় ভোটার সংখ্যা ৯৪ হাজার ৪৮২ জন। এখানে চেয়ারম্যান পদে ৬ জন প্রার্থী, ভাইস চেয়ারম্যান পদে ৭ ও মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে তিনজন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন।

\হউপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) জুয়েল ভৌমিক জানান, দুপুর ১টা পর্যন্ত ৩০ শতাংশ ভোট প্রয়োগ হয়েছে। ধান কাটার মৌসুম হওয়ায় পুরুষ ভোটারের উপস্থিতি কম। তবে নারী ভোটাররা কেন্দ্রে আসছেন।

নরসিংদী প্রতিনিধি জানান, প্রার্থীর কর্মীদের মধ্যে কিছু বিচ্ছিন্ন হট্টগোল, হাতাহাতি, ধাওয়া-পাল্টাধাওয়া এবং সর্বপোরি ভোটার সংকটের মধ্য দিয়ে শেষ হয়েছে নরসিংদীর দুই উপজেলার প্রথম ধাপের ভোট। নরসিংদীর ৬ উপজেলার মধ্যে বুধবার প্রথম ধাপে ভোটার সংকটের মধ্য দিয়ে সদর উপজেলা এবং পলাশ উপজেলায় ভোটগ্রহণ সম্পন্ন হয়েছে। নরসিংদী সদর উপজেলায় মোট ভোটার ৫ লাখ ৩৭ হাজার ৫৫৯ জন। কেন্দ্র সংখ্যা ১৭৫টি। অথচ এখানে বিপুল পরিমাণ ভোটারের সংখ্যা থাকলেও সকাল থেকে বিকাল পর্যন্ত প্রায় সবগুলো কেন্দ্রের দৃশ্যই ছিল ফাঁকা। নির্বাচনের দায়িত্বে নিয়োজিত কর্মকর্তা, কর্মী ছাড়া ভোটারের উপস্থিতি নেই বললেই চলে।

বিভিন্ন কেন্দ্র ঘুরে দেখা গেছে, দুপুর ২টা পর্যন্তও কোনো কেন্দ্রেই ১০ ভাগ ভোটও পড়েনি। যে কজন চোখে পড়েছে তারা হলেন মূলত প্রার্থীর নির্দিষ্ট কর্মিসমর্থক। সাধারণ কোনো ভোটারের উপস্থিত তেমন একটা দেখা যায়নি।

এমন ভোটার সংকটের মধ্যেই কয়েকটি কেন্দ্রে গোলমাল, হট্টগোল, হাতাহাতি এবং ধাওয়া-পাল্টাধাওয়ার মতো ঘটনা ঘটেছে। সকাল সাড়ে ৯টার দিকে সদর উপজেলার কাকশিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে কাপ-পিরিচ প্রতীকের প্রার্থী মো. আনোয়ার হোসেনের কর্মীদের সঙ্গে আনারস প্রতীকের প্রার্থী আব্দুল বাকীরের কর্মীদের হাতাহাতির ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় কাপ-পিরিচ প্রার্থীর একজন কর্মী আহত হন। ফলে অন্তত পৌনে এক ঘণ্টা ওই কেন্দ্রে ভোটগ্রহণ স্থগিত থাকে। পরে পুলিশ এবং নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনলে কেন্দ্রের পরিবেশ স্বাভাবিক হয়।

মানিকছড়ি (খাগড়াছড়ি) প্রতিনিধি জানান, খাগড়াছড়ির মানিকছড়ি উপজেলায় উৎসবমুখর পরিবেশে ভোটগ্রহণ শুরু হয়। সকালে কেন্দ্রে নারী ও পুরুষ ভোটারের ভিড় দেখা গেলেও দুপুরের পর কেন্দ্র অনেকটা ফাঁকা। বিকাল ২টা নাগাদ কাস্টিং হয়েছে ৪৫.৪৬ শতাংশ।

এদিকে জাল ভোট প্রদানে সহায়তা ও জাল ভোট দেওয়ার অপরাধ ৩ জনকে ১৫ হাজার টাকা জরিমানা এবং নগদ ১৫ হাজার অর্থ জব্দ করেছেন চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট।

উপজেলার ২১ কেন্দ্রের ১৪১ বুথে সকাল থেকে শান্তিপূর্ণ পরিবেশে ভোট গ্রহণ শুরু হয়। সকালের দিকে নারী ভোটারের উপস্থিতি বেশি হলেও বেলা বাড়ার সঙ্গে পুরুষ ভোটারও বাড়তে থাকে। তবে দুপুরের পর প্রতিটি কেন্দ্রে ভোটার উপস্থিতি কমে যায়।

এদিকে জাল ভোট প্রদান ও জাল ভোটে সহায়তার অভিযোগে ৩ জনকে ৫ হাজার টাকা করে ১৫ হাজার টাকা জরিমানা ও নগদ ১৫ হাজার টাকা জব্দ করেছেন চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট গোলাম মোস্তফা। অভিযুক্তরা হলেন- উপজেলার গভামারা এলাকার মো. সম্রাট (১৮), ইউসুফ আলী (৩৩) ও তিনটহরী মাস্টার পাড়ার মো. রানা (২২)। এদিকে দুপুর ২টা নাগাদ ভোট কাস্টিং হয়েছে ৪৫.৪৬ শতাংশ।

উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা ও সহকারী নির্বাচন কর্মকর্তা শওকত আলী চৌধুরী বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

কালীগঞ্জ (গাজীপুর) প্রতিনিধি জানান, গাজীপুরের কালীগঞ্জে উপজেলার মসলিন কটন মিলস উচ্চ বিদ্যালয়, কালীগঞ্জ আরআরএন পাইলট সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়, বালীগাঁও উচ্চ বিদ্যালয় ও বালীগাঁও মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ভোটকেন্দ্র। ওই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে নারী ও পুরুষের আলাদা আলাদা কেন্দ্র। বুধবার সকাল ৮টা থেকে ১০টা পর্যন্ত ভোটকেন্দ্রে প্রবেশের আগে সেখানকার সড়ক, অলি-গলিতে দেখা যায় মানুষের ভিড়। তাদের সবাই নিজেদের পছন্দের প্রতীকের অনুসারী কর্মী-সমর্থক।

ভোটার কেন্দ্রে প্রবেশের আগে সেখানে দাঁড়ানো চেয়ারম্যান, ভাইস চেয়ারম্যান ও মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান মনোনীত প্রার্থীর কর্মীদের ভোটার আসছে দেখলেই এগিয়ে গিয়ে তাদের কানে কানে কিছু বলতে দেখা যাচ্ছে।

এরপর ভোটকেন্দ্রে প্রবেশ করে দেখা যায়, দুই কেন্দ্রে ভোটারের কোনো লাইন নেই। মাঝে মধ্যে দুয়েকজন আসছেন। তবে কেন্দ্রের ভেতরেও ভোটার এবং নির্বাচনে ভোট গ্রহণের দায়িত্বপ্রাপ্ত ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী-সংস্থার বাইরে বহিরাগত লোকজন দেখা গেছে। ওই সময় দুয়েকজনের পরিচয় জানতে চাইলেই সেখান থেকে সরে পড়েন।

১০টার দিকে কেন্দ্রের প্রিসাইডিং অফিসার ইঞ্জিনিয়ার সাইফুর রহমান শাকিল বলেন, 'আমাদের ৮টি বুথে মোট ভোটার ৩ হাজার ৬১৭ জন। এরমধ্যে নারী ১ হাজার ৮৮৬ ও পুরুষ ১ হাজার ৭৩১ ভোটার। সকাল ১০টা পর্যন্ত কাস্ট হয়েছে ২৭৩ ভোট।'

বালীগাঁও উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রিসাইডিং অফিসার আক্তারুজ্জামান বলেন, 'নারীদের ৭টি বুথে মোট ভোটার ৩ হাজার ০৯৩ জন। সকাল ১০টার মধ্যে কাস্ট রয়েছে ৩১৭ ভোট।

কালিগঞ্জ আর আর এন পাইলট সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্রে ভোট দিয়ে কেন্দ্র থেকে বের হওয়ার সময় আইয়ুব সাবের টিপু নামে এক প্রবাসী ভোটার বলেন, আমি স্কটল্যান্ড থেকে এসেছি। জীবনের এই প্রথম ভোট দিয়েছি। মনে করেছিলাম সময় লাগবে। লোকজন খুব বেশি ছিল না, আসা মাত্র ভোট দিতে পেরেছি। ৩ মিনিটও সময়ও লাগেনি।

২৫নং মূলগাঁও সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়। সকাল সাড়ে ১০টা। ওই কেন্দ্রে প্রবেশ করার আগে দেখা যায়, প্রার্থীদের কর্মী-সমর্থকদের ভিড়। কেন্দ্রে প্রবেশ করলে দেখা যায়, সেখানে আইনশৃঙ্খলা রক্ষার দায়িত্বপ্রাপ্তদের মধ্যে কেউ দাঁড়িয়ে আবার অনেকে বসে আছেন।

ওই কেন্দ্রে পরিদর্শনকালে কালীগঞ্জ থানার ওসি মাহাতাব উদ্দিন বলেন, কোন কেন্দ্রে অপ্রীতিকর কোনো ঘটনা ঘটেনি।

সহকারী রিটার্নিং ও কালীগঞ্জ উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা নাজমুল ইসলাম জানান, কালীগঞ্জ উপজেলার একটি পৌরসভা ও ৭টি ইউনিয়নের ৯০ ভোট কেন্দ্রের ৫৪৫টি কক্ষে ভোট গ্রহণ হয়। উপজেলার ভোট ভোটার ২ লাখ ৪৭ হাজার ২০৪ জন।

সরাইল (ব্রাহ্মণবাড়িয়া) প্রতিনিধি জানান, ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সরাইল উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে সকাল থেকেই কেন্দ্রগুলোতে নারী, পুরুষসহ তরুণ ভোটাররা থেমে থেমে এসে ভোট প্রদান করেন। এছাড়াও ভোটকে ঘিরে সর্বত্র উৎসব আমেজ বিরাজ করছে। সরাইল উপজেলার নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে ৫জন, ভাইস চেয়ারম্যান পদে ৬ ও ৪ মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে ৮ জন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন।

এদিকে নির্বাচনকে নির্বিঘ্ন ও শান্তিপূর্ণ করতে প্রশাসনের পক্ষ থেকে ব্যাপক প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। সকাল থেকেই আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা প্রতিটি কেন্দ্রের নিরপত্তায় দায়িত্ব পালন করছেন।

সরাইল থানার ওসি একরামুল ইসলাম জানান, নির্বাচনে আইন শৃঙ্খলা রক্ষায় ৫৪৫ জন পুলিশ, ৩ পস্নাটুন বিজিবি,র্ যাব ও আনসার বাহিনীর পাশাপাশি ১০ জন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট এবং ১ জন জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট দায়িত্ব পালন করছেন।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়
X
Nagad

উপরে