সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুরের বিস্তীর্ণ মাঠজুড়ে পাকা ধানের ম-ম গন্ধ। আর কৃষক পরিবারগুলো ব্যস্ত স্বপ্নের সোনালি ধান ঘরে তুলতে। প্রতিটি পাকা ধানের শিষে ক্লান্তিমাখা কৃষকের স্বপ্ন জড়িয়ে আছে।
শাহজাদপুর পৌর এলাকাসহ ১৩টি ইউনিয়নের মাঠে মাঠে শুরু হয়েছে ধান কাটার উৎসব। এ বছর আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় এবং রোগবালাই তেমন না থাকায় আমন ধানের বাম্পার ফলন হয়েছে, যা দেখে কৃষকরা বেজায় খুশি। এ উপজেলায় ধান কাটা শুরু হয়েছে পুরোদমে। লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে বেশি ধান উৎপাদনের আশা করছে স্থানীয় কৃষি অধিদপ্তর।
উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, এ বছর শাহজাদপুর উপজেলায় ২২ হাজার ৬৮০ হেক্টর জমিতে ইরি-বোরো ধানের চাষ হয়েছে। এ থেকে প্রায় ১ লাখ মে. টন ধান উৎপাদনের সম্ভাবনা রয়েছে। উপজেলার বিভিন্ন ফসলের মাঠ ঘুরে সোনালি পাকা ধান লক্ষ করা গেছে। কৃষকদের কেউ ধান কেটে আঁটি বেঁধে মাথায় করে, আবার কেউ বিভিন্ন পরিবহণে করে বাড়িতে নিয়ে যাচ্ছেন। কারো কারো বাড়ির উঠানে চলছে ধান মাড়াইয়ের কাজ। কেউ আবার ধানের আঁটি স্তূপ করে রাখছেন বাড়ি ও উঠানের আঙ্গিনায়। তবে প্রচন্ড দাবদাহের কারণে ধানকাটা শ্রমিকের মূল্য বেশি হওয়ায় কোনো কোনো চাষি নিজেই নিজের ধান কাটছেন। আবার কেউ শ্রমিক দিয়ে ধান কাটাচ্ছেন। এক্ষেত্রে ধান কাটতে প্রতিদিন প্রতিটি শ্রমিককে দিতে হয় ৮শ' থেকে এক হাজার টাকা।
উপজেলার ডায়া গ্রামের ধান চাষি শহিদুল ইসলাম জানান, তিনি ৩ বিঘা জমিতে উন্নতজাতের ধান চাষ করেছেন। আবহাওয়া অনকূলে থাকায় ফলন ভালো হয়েছে। তিনি আশা করছেন ৯০ মণ ধান পাবেন।
শাহজাদপুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা জেরিন আহমেদ জানান, উপজেলা কৃষি অফিস থেকে উপজেলার ১৩টি ইউনিয়নের ধান চাষিদের সার্বক্ষণিক পরামর্শ প্রদান করা হয়েছে। আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় এবং কৃষি অফিস নিয়মিত তদারকি করার ফলে আশানুরূপ ফলন আশা করছেন তারা। বর্তমানে ধানকাটার জন্য আবহাওয়া অনুকূলে রয়েছে। ফলে শাহজাদপুর উপজেলায় ইরি-বোরো ধানের বাম্পার ফলনে বাঁধভাঙা আনন্দ-উলস্নাসে মেতে উঠেছেন কৃষকরা।
দিগন্তজোড়া সোনালি ফসলের মনোরম দৃশ্য যেন পেতে রাখা গালিচা। আগামী এক সপ্তাহ পরে শুরু হবে ধান কাটার মহোৎসব। প্রচন্ড দাবদাহেও খুব সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত সোনালি স্বপ্ন ঘরে তোলার কাজে ব্যস্ত থাকবেন কৃষক-কৃষাণিরা।