কুমিলস্নার তিতাসে গৌরীপুর-হোমনা সড়কের মৌটুপী-ইউসুফপুর-নলচর সড়কের প্রায় দুই কিলোমিটার রাস্তা সংস্কার ও কালর্ভাট নির্মাণ কাজ বন্ধ থাকায় ভোগান্তিতে পাঁচ গ্রামের মানুষ। বিশেষ করে মাধ্যমিক ও কলেজ পড়ুয়া শিক্ষার্থী ও অসুস্থ্য রোগীদের যাতায়াতে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে।
উপজেলা প্রকৌশলী অফিস সূত্রে জানা যায়, উপজেলার গৌরীপুর-হোমনা সড়কের মৌটুপী থেকে ইউসুফপুর-নলচর পর্যন্ত প্রায় দুই কিলোমিটার রাস্তা সংস্কারের টেন্ডার পায় মেসার্স তন্নী এন্টারপ্রাইজ। সড়ক সংস্কারে ব্যয় ধরা হয়েছে ১ কোটি ২৫ লাখ ২০ হাজার টাকা। ২০২৩ সালের ১০ এপ্রিল কার্যাদেশ প্রদান করে। যার এ বছরের ৯ ফেব্রম্নয়ারি পর্যন্ত মেয়াদ ছিল। অপরদিকে, সড়কের প্রথম অংশে টু-ব্যান্ডের একটি কালভার্ট নির্মাণের কাজ পায় মেসার্স এস রঞ্জন এন্ড কোম্পানি। যার ব্যয় ধরা হয়েছে ৪৪ লাখ টাকা।
সরেজমিনে গিয়ে জানা যায়, কাঁচা রাস্তা ব্যবহার করে উপজেলার কড়িকান্দি ইউনিয়নের ইউসুফপুর, নলচর, বন্দরামপুর এবং মজিদপুর ইউনিয়নের চাঁন্দনাগেরচর, মৌটুপী গ্রামের লোকজন যাতায়াত করে। গত ১০ বছর আগে গৌরীপুর-হোমনা সড়ক থেকে আধা কিলোমিটার রাস্তা সিসি ঢালাই দিলেও এবারের সংস্কার কাজের আওতায় সেই সিসি ঢালাই ঠিকাদার তুলে ফেলেছেন। দেড় বছর আগে ঠিকাদার সিসি ঢালাই তুলে ফেলার পর আর কোন কাজ হয়নি। বর্ষা মৌসুমে বৃষ্টির কারণে রাস্তাটি কাঁদাময় হয়ে উঠেছিল। বিকল্প কোন রাস্তা না থাকায় ওই গ্রামগুলোর মানুষকে কাঁদামাটি পেরিয়ে মৌটুপী বাস স্টেশনে আসতে হয়েছে। কালভার্ট নির্মাণের স্থানে বিকল্প সড়ক নির্মাণ না করায় বর্ষায় গ্রামবাসীর উদ্যোগে বাঁশের সাঁকো নির্মাণ করে যাতায়াত করতে হয়েছে।
ইউসুফপুর গ্রামের অটোরিকশা চালক আক্তার হোসেন বলেন, 'কালর্ভাট নির্মাণের আগে এখানে ছোট সেতু ছিল, তখন আমরা হাজার বারোশ' টাকা ইনকাম করতাম। সেতুটি ভেঙে ফেলায় এবং কালর্ভাট নির্মাণ না হওয়ায় এখন পাঁচশ' টাকা ইনকাম করতে পারি না। রাস্তা ভাঙ্গাচুড়া বিধায় মানুষ হেঁটে চলে যায়।'
নলচর ও ইউসুফপুর গ্রামের একাধিক ব্যক্তি জানান, ইউসুফপুর গ্রামের একটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়সহ ২টি ইবতেদায়ী মাদ্রাসা রয়েছে। মৌটুপীর অনেক শিক্ষার্থী সেখানে লেখাপড়া করে। বিশেষ করে এদিকের গ্রামগুলোর লোকদের উপজেলা সদর এবং ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে যেতে হলে এ সড়ক ব্যবহার করতে হচ্ছে। রাস্তাটি সংস্কার ও কালর্ভাট নির্মাণ আটকে থাকায় সর্বক্ষেত্রে এলাকার মানুষ চরম ভোগান্তি পোহাচ্ছে।
ইউসুফপুর গ্রামের ইউপি সদস্য রুবেল মিয়া বলেন, 'বিষয়টি নিয়ে ঠিকাদারকে বারবার তাগাদা দিয়েছি। কোন ফল পাইনি। বরং প্রতিদিন জনগণের কাছে কাজের জবাবদিহিতা করতে হয়। এটা শুধু ভোগান্তি না চরম ভোগান্তি হচ্ছে মানুষের।'
মেসার্স তন্নী এন্টারপ্রাইজের মালিক মোফাজ্জল হোসেন বলেন, 'কালর্ভাটের জায়গায় পানি থাকায়, রাস্তা না থাকায় আমি মালামাল নিতে পারছি না। তাই কাজ বন্ধ রয়েছে। পানি শুকালে কাজ ধরব।'
উপজেলা প্রকৌশলী শহিদুল ইসলাম বলেন, কালর্ভাটের ৫০ ভাগ কাজ সম্পন্ন হয়েছে। বর্ষার পানি আসায় কাজ বন্ধ ছিল। শিগগিরই শুরু করা হবে। রাস্তা সংস্কারের ১০ ভাগ হয়েছে। ঠিকাদার কিছু অংশে গাইড ওয়াল নির্মাণ করে। একাধিক চিঠি দেওয়ার পর সন্তোষকজন বক্তব্য না পাওয়ায় কাজ বাতিলের চূড়ান্ত নোটিশ দেওয়া হয়েছে।