রোববার, ১১ মে ২০২৫, ২৮ বৈশাখ ১৪৩২

সাঁওতাল হত্যার বিচার দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ

গাইবান্ধা প্রতিনিধি
  ০৭ নভেম্বর ২০২৪, ০০:০০
সাঁওতাল হত্যার বিচার দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ
সাঁওতাল হত্যা দিবসে গাইবান্ধা শহরে বিক্ষোভ মিছিল বের করা হয় -যাযাদি

গাইবান্ধায় আলোচিত তিন সাঁওতাল হত্যার বিচার ৯ বছরেও হয়নি। আদিবাসী সাঁওতালরা বর্তমানে মানবেতর জীবনযাপন করছেন। বুধবার দুপুরে গাইবান্ধা নাট্য ও সাংস্কৃতিক সংস্থার (গানাসাস) চত্বরে 'সাঁওতাল হত্যা দিবস' আয়োজিত সমাবেশে বক্তারা সাঁওতাল হত্যার বিচারের দাবিতে ক্ষোভ প্রকাশ করেন।

২০১৬ সালের ৬ নভেম্বরের ঘটনার উলেস্নখ করে বক্তারা বলেন, আহতরা উপযুক্ত চিকিৎসার অভাবে কেউ পঙ্গু, কেউ শরীরে গুলির স্প্রিন্টার নিয়ে অসহ্য যন্ত্রণায় কাতর হয়ে জীবন অতিবাহিত করছেন। আজও বাস্তবায়ন হয়নি হত্যাকারীদের বিচার।

সমাবেশে সাঁওতাল হত্যার বিচার, আসামিদের গ্রেপ্তার, বাড়িঘরে লুটপাট, অগ্নিসংযোগের কারণে ক্ষতিগ্রস্ত সাঁওতালদের ক্ষতিপূরণ ও সাঁওতালদের রক্তভেজা তিন ফসলি জমিতে ইপিজেড নির্মাণ বন্ধের দাবি জানান বক্তারা।

এর আগে সকাল থেকে নানা আয়োজনে গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জে 'সাঁওতাল হত্যা দিবস' পালিত হয়। সকালে গোবিন্দগঞ্জ উপজেলার জয়পুর গ্রামে নির্মিত অস্থায়ী শহীদ বেদিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ ও মোমবাতি প্রজ্জ্বলন করা হয়। পরে মাদারপুর ও জয়পুর গ্রাম থেকে সাঁওতালরা জাতীয় ও কালো পতাকা, তীর-ধনুক, বাদ্যযন্ত্র, ব্যানার, বিভিন্ন দাবি সম্বলিত ফেস্টুনসহ একটি বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে গাইবান্ধা শহরে আসে। পরে স্থানীয় নাট্য ও সাংস্কৃতিক সংস্থা (গানাসাস) সামনে থেকে মিছিল বের হয়ে বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ শেষে সমাবেশে মিলিত হয়।

সাহেবগঞ্জ-বাগদাফার্ম ভূমি উদ্ধার সংগ্রাম কমিটি, জাতীয় আদিবাসী পরিষদ, অ্যাসোসিয়েশন ফর ল্যান্ড অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট (এএলআরডি), আদিবাসী-বাঙালি সংহতি পরিষদ ও জনউদ্যোগ গাইবান্ধা যৌথভাবে এসব কর্মসূচি পালন করে।

সাহেবগঞ্জ-বাগদাফার্ম ভূমি উদ্ধার সংগ্রাম কমিটির সভাপতি ফিলিমন বাস্কের সভাপতিত্বে সমাবেশে বক্তব্য দেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক রোবায়েত ফেরদৌস, সুপ্রিম কোর্টের অ্যাডভোকেট মিনহাজুল হক চৌধুরী, অ্যাডভোকেট রফিক আহমেদ সিরাজী, এলআরডির নির্বাহী পরিচালক শামসুল হুদা, পরিবেশ আন্দোলনের নেতা ওয়াজিউর রহমান রাফেল, আদিবাসী-বাঙালি সংহতি পরিষদের আহ্বায়ক সিরাজুল ইসলাম বাবু, বাসদ নওগাঁর জয়নাল আবেদীন মুকুল, জাতীয় আদিবাসী পরিষদের কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি বিচিত্রা তির্কি, আদিবাসী নেতা বিমল খালকো, মানবাধিকার কর্মী গোলাম রব্বানী মুসা, আদিবাসী নেতা প্রিসিলা মুরমু প্রমুখ। সমাবেশ পরিচালনা করেন জনউদ্যোগের সদস্য-সচিব প্রবীর চক্রবর্ত্তী।

উলেস্নখ্য, ২০১৬ সালের ৬ নভেম্বর মহিমাগঞ্জ সুগার মিল কর্তৃপক্ষ সাঁওতালদেরকে উচ্ছেদ করতে গেলে পুলিশ ও চিনিকল শ্রমিক-কর্মচারীদের সঙ্গে সাঁওতালদের দফায় দফায় সংঘর্ষে ৩০ জন সাঁওতাল আহত হন। তাদের মধ্যে তিন সাঁওতাল মঙ্গল মারডি, রমেশ টুডু ও শ্যামল হেমব্রম মারা যান। অগ্নিসংযোগে পুড়ে যায় সাঁওতালদের ঘরবাড়ি।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে