জলবায়ু ন্যায্যতা, টেকসই উন্নয়ন, নবায়নযোগ্য জ্বালানি উৎপাদন এবং জীবাশ্ম জ্বালানির প্রতিবাদে বলেশ্বর নদে ব্যতিক্রমধর্মী অর্ধশত নৌকায় বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করা হয়েছে। 'জীবাশ্ম গ্যাস পৃথিবীর জন্য ক্ষতিকর, জীবাশ্ম গ্যাস মানুষের জন্য বিষাক্ত, জীবাশ্ম গ্যাস একটি ব্যয়বহুল জ্বালানি, গ্যাসের বিকল্প আছে'-সহ নানা স্স্নোগান নিয়ে এ বিক্ষোভ কর্মসূচি পালিত হয়।
বৃহস্পতিবার বরগুনার পাথরঘাটা উপজেলার সুন্দরবন সংলগ্ন বলেশ্বর নদের পদ্মা এলাকায় এ কর্মসূচি পালন করেন দুই শতাধিক মৎস্যজীবী ও স্থানীয়রা।
বাংলাদেশে গ্যাস সম্প্রসারণের বিরুদ্ধে 'এশিয়া ডে অফ অ্যাকশন' উপলক্ষে পরিবেশ ও জলবায়ু বিষয়ক সংগঠন ধরিত্রী রক্ষায় আমরা (ধরা), ওয়াটারকিপার্স বাংলাদেশ'র সহযোগিতায় এবং পাথরঘাটা উপকূল সুরক্ষা আন্দোলনের বাস্তবায়নে এ সময় উপস্থিত ছিলেন উপজেলা পরিষদের সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান ইঞ্জিনিয়ার মো. নয়ন, সমাজকর্মী মেহেদী শিকদার, মাইনুল ইসলাম রেজা, যুব ফোরামের সভাপতি সিফাত খান, সোহেল মলিস্নক, জেলে জামাল হোসেন, আব্বাস উদ্দিন প্রমুখ।
এ সময় বক্তারা বলেন, বাংলাদেশে জীবাশ্ম জ্বালানির উপর নির্ভরতা বৃদ্ধি পাচ্ছে, যা পরিবেশের ক্ষতি ও জলবায়ু পরিবর্তনের সঙ্গে সম্পর্কিত। দেশের উপকূলীয় অঞ্চল, যেগুলো জলবায়ু পরিবর্তনের ক্ষতিকর প্রভাবের জন্য অতি ঝুঁকিপূর্ণ, ইতোমধ্যে সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা বৃদ্ধি, চরম আবহাওয়া এবং জীববৈচিত্র্য ক্ষতির মুখোমুখি হচ্ছে। এই আন্দোলনের মাধ্যমে দেশকে একটি ন্যায্য, টেকসই, এবং নবায়নযোগ্য জ্বালানির ভিত্তিতে উন্নতির দিকে ধাবিত করার দাবি জানিয়েছেন তারা।
উপকূল অনুসন্ধানী সাংবাদিক ও গবেষক শফিকুল ইসলাম খোকন বলেন, 'যে কোনো কাজ করতে আগে মানসিকভাবে ঠিক করতে হবে। এরপর স্থানীয়দের সম্পৃক্ত করতে হবে। মানুষের মধ্যে আন্তরিকতা আর সচেতনতা না থাকলে কখনই কাজ সফল হবে না। পরিবেশ, স্বাস্থ্য, জলবায়ু এবং অর্থনীতির ওপর গ্যাস ও এলএনজির ক্ষতিকর প্রভাব সম্পর্কে স্থানীয় জনগোষ্ঠী, অংশীজনদের এগিয়ে আসতে হবে। প্রচার-প্রচারণা বাড়াতে হবে।
তিনি আরও বলেন, একটি সময় ছিল জলবায়ু পরিবর্তন বা পরিবেশ সম্পর্কে মানুষ জানতো না, পর্যায়ক্রমে উপকূলের মানুষ এখন? জানতে পেরেছে। আজ দেখুন অন্তত শতাধিক ট্রলারে কয়েকশ' মৎস্যজীবী ও স্থানীয়রা উপকূল রক্ষার আন্দোলনে সোচ্চার হয়েছে। এ দাবিগুলো এখন সরকারসহ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের দেখার সময় এসেছে।