জন গুরুত্বপূর্ণ ঘাট হিসেবে পরিচিত রূপসা ঘাট। যে ঘাট দিয়ে খুলনা বিভাগীয় শহরে জেলা ও উপজেলার লোক যাতায়াত করে প্রতিনিয়ত। সেই ঘাটের অনিয়ম দূর করার জন্য সরেজমিনে পরিদর্শন করলেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আকাশ কুমার কুন্ডু।
এখান থেকে প্রতিদিন প্রায় অর্ধলক্ষ লোক পারাপার হয়। তাই এসব অঞ্চলের যাত্রীদের কাছে ঘাটের গুরুত্ব অপরিসীম। যেমনি এই ঘাট অনেক গুরুত্বের তেমনি এই ঘাটের অনিয়ম ও দুর্নীতি বেড়েই চলছে।
ভুক্তভোগীদের তথ্য অনুযায়ী, ইদানীং ঘাটের যে পল্টুন ও গ্যাংওয়ে রয়েছে তা দীর্ঘদিন ধরে সংস্কারের অভাবে খুবই জরাজীর্ণ এবং ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে। এভাবে ঝুঁকি নিয়ে এই পল্টুন ও গ্যাংয়ের দিয়ে যাত্রীরা চলাচল করছে। আর এ কারণেই প্রায়ই দুর্ঘটনা ঘটে। ঘাটে পল্টুনে যাত্রী ওঠা-নামার জন্য নির্দিষ্ট জায়গা থাকলেও মাঝিরা খামখেয়ালি করে অনেক উঁচু জায়গায় ট্রলার ভিড়িয়ে দেয়। যেখান দিয়ে বৃদ্ধ, মহিলা ও অসুস্থ রোগীদের উঠানামা করতে অনেক ভোগান্তি পোহাতে হয়।
হাফিজ নামের এক যাত্রী বলেন, অতীতে টোল আদায়ে চরম অন্যায়, অনিয়ম এবং বাড়তি টাকা আদায় করত এই ঘাটে পারাপার হওয়া যাত্রীদের কাছ থেকে। সামান্য কিছু মাল আনলেও মালের টোলের যে তালিকা রয়েছে সেটি তোয়াক্কা না করে আদায়কারীরা তাদের ইচ্ছামতো টোল আদায় করত। এ ব্যাপারে প্রতিদিনই অনেক যাত্রীদের সঙ্গে বাকবিতন্ডা হতো টোল আদায়কারীদের সঙ্গে। এসব মাঝি ও ঘাট ইজারাদারের অনিয়মের সঙ্গে তাল মিলিয়ে পারাপার হতে হয় যাত্রীদের।
পারাপারের জন্য বড় নৌকায় ৩০ জন ও ছোট নৌকায় ২৫ জন যাত্রী নির্ধারণ করা থাকলেও অনেক সময় তা না মেনে বেশি যাত্রী নিয়ে ঝুঁকির মধ্যে দিয়ে মাঝিরা অধিক অর্থ আয় করে থাকেন। এতে যাত্রীদের নিরাপত্তা বিঘ্নিত হয়। রাতে নৌকা চলাচলে আলোর ব্যবস্থা রাখে না এবং অপ্রাপ্ত বয়সি মাঝি দিয়ে ট্রলার চালানো হয়। নিয়মের বাইরে গিয়ে অধিক পরিমাণ যাত্রী নেয়। আর এ সব অনিয়মের বিরুদ্ধে যদি কখনো যাত্রীরা প্রতিবাদ করে তখন সঙ্ঘবদ্ধ হয়ে মাঝিরা ওই যাত্রীকে হেনস্থা করে। এ ধরনের অভিযোগ অনেক রয়েছে মাঝিদের বিরুদ্ধে।
পারাপার হওয়া আজগার আলী নামের এক ব্যক্তি বলেন, এদের এ ধরনের জুলুমের সঙ্গে আমরা মানিয়ে নিতে অভ্যস্ত হয়েছি। কারণ কখনোই এরা শুধরাবে না। ছাত্র- জনতার গণঅভু্যত্থানের পর কিছুদিন ছাত্ররা এই ঘাটের শৃঙ্খলা ফেরাতে কাজ করে। যতদিন ছাত্রদের অবস্থান ছিল ততদিন ঘাটে নিয়ম-শৃঙ্খলা বজায় ছিল।
অভিযোগের পর রূপসা উপজেলা প্রশাসনের নবাগত নির্বাহী কর্মকর্তা আকাশ কুমার কুন্ডু গত ৯ ডিসেম্বর সকাল ১০টায় সরেজমিন পরিদর্শনে আসেন। তিনি এসে সার্বিক পরিস্থিতি দেখেন এবং ঘাটে অনিয়ম ও অব্যবস্থাপনা নিরসন করে একটি শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনার জন্য ট্রলার মাঝিদের নেতৃবৃন্দ এবং ইজারাদারদের সঙ্গে কথা বলেন। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বলেন, পল্টুন এবং গ্যাংওয়ের অবস্থা খুবই খারাপ। বিআইডবিস্নউটিএ ও ইজারাদারদের সঙ্গে নিয়ে অচিরেই মেরামত করা হবে।