রোববার, ০৪ মে ২০২৫, ২০ বৈশাখ ১৪৩২

তিস্তার জেগে ওঠা চরে আমন ধানের বাম্পার ফলন

এসএ প্রিন্স, নীলফামারী
  ১৪ ডিসেম্বর ২০২৪, ০০:০০
তিস্তার জেগে ওঠা চরে আমন ধানের বাম্পার ফলন
তিস্তার জেগে ওঠা চরে আমন ধানের বাম্পার ফলন

চলতি বছর বন্যার প্রকোপ কম থাকায় তিস্তার বুকে জেগে ওঠা শতাধিক চরে আমন ধানের বাম্পার ফলন হয়েছে। এতে দারুণ খুশি চরাঞ্চলের হাজারো কৃষক পরিবার।

সরেজমিনে দেখা গেছে, চরের কৃষকরা ক্ষেত থেকে আমন ধান কেটে ঘরে তুলছে। অনেকে ধান কাটছে। আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে চরের আমন ধান কাটা শেষ হবে বলে জানিয়েছেন কৃষকরা।

নীলফামারীর ডিমলা উপজেলার খালিশা চাপানি ইউনিয়নের ছাতুনামা চরের কৃষক হাসানুর রহমান (৫০) বলেন, এ বছর ১৩ বিঘা জমিতে আমন ধান লাগিয়েছিলাম। ১০ বিঘা জমির ধান ঘরে তুলেছি। আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে বাকি জমির ধান কাটব।

তিনি জানান, প্রতি বিঘা জমিতে গড়ে ১৬ থেকে ১৭ মণ ধানের ফলন পেয়েছেন। গত বছরও ১২ বিঘা জমিতে আমনের চাষ করেছিলেন। বন্যার কারণে বেশিরভাগ জমির ধান নষ্ট হয়েছিল। এ বছর বন্যার প্রকোপ কম থাকায় চরের জমি থেকে আমন ধানের আশানুরূপ ফলন পেয়েছি।

চর কিসামতের কৃষক আরিফুল ইসলাম বলেন, এ বছর ১০ বিঘায় আমন চাষ করেছিলাম। নদীর তলদেশ উঁচু হওয়ায় সামান্য বন্যায় তার ১০ বিঘার মধ্যে ৪ বিঘা জমি ধানসহ নদীগর্ভে বিলীন হয়েছে।

এলাকার অন্য কৃষকরাও বলেন ঠিক একই কথা। কৃষকরা বলছেন, চরে এখন ধান, ভূট্টা, আলু, পেঁয়াজ, রসুন, মিষ্টি কুমড়া, শশা, মরিচ, বাদামসহ অন্তত ১৫ রকমের ফসল উৎপাদন হচ্ছে। মাটির উর্বরা শক্তি, ভালো বীজ নির্বাচন আর সরকারি-বেসরকারি নানা উদ্যোগে মূল ভূখন্ডের তুলনায় এখন চরে অনেক ভালো ফসল ফলছে। তাদের দাবি, তিস্তা নদী শাসন করা গেলে অনেক বেশি চরকে উৎপাদনের আওতায় আনা সম্ভব হবে।

কৃষি বিভাগ সূত্র জানিয়েছে, লালমনিরহাট, কুড়িগ্রাম, রংপুর, নীলফামারী ও গাইবান্ধায় ১১৫ কিলোমিটার তিস্তার বুকে ২৩৬টি চর আছে। এর প্রায় ৫০ হাজার হেক্টর জমি আবাদি।

লালমনিরহাটের হাতিবান্ধা উপজেলার চর ধুবনির কৃষক বাহাদুর ইসলাম (৪০) বলেন, এ বছর বন্যায় ফসলের ক্ষতি হয়নি। ৬ বিঘা জমিতে ধান লাগিয়েছি। ৯৫ মণ ফলন হয়েছে। গত বছর একই পরিমাণ জমি থেকে মাত্র ৫০ মণ ধান পেয়েছিলাম।

রংপুর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের অতিরিক্ত পরিচালক ওবায়দুর রহমান মন্ডল বলেন, আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় তিস্তার চরাঞ্চলে আমন ধানসহ নানা ধরনের ফসল ও সবজির বাম্পার ফলন হয়েছে। চরাঞ্চলে আমনের বাম্পার ফলন খাদ্য চাহিদা পূরণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। কৃষি বিভাগ চরাঞ্চলে কৃষকদের ধানসহ অন্য ফসল উৎপাদনে দিকনির্দেশনাসহ সার-বীজ দিয়ে সহায়তা করে থাকে।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে