লক্ষ্ণীপুরের রায়পুরে আধিপত্য বিস্তার নিয়ে বিএনপির বিবাদমান দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ হয়েছে। গত বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত থেকে শুক্রবার রাত পর্যন্ত থেমে থেমে উপজেলার উত্তর চরবংশী ইউনিয়নের খাসেরহাট ও বাবুরহাট এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। পরে পুলিশ ও সেনাবাহিনী গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
দফায় দফায় সংঘর্ষ, বাড়ি ঘরে হামলা, ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগ, লুটপাট ও মারধরের ঘটনায় এখন পর্যন্তত উভয় পক্ষের অন্তত:১৫ জন আহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। এদের মধ্যে গুরুতর জখম শফিক রাঢ়ি (৪৮) ও লিন রাঢ়ি (৪৫) কে ঢাকায় পাঠানো হয়েছে। আহত তাহমিনা বেগম, সানু বেগম, গণি রাঢ়ি, মিজান খাঁন, কবির হোসেন, বিলস্নাল হোসেন ও জিহাদকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
এখনো সেখানে উত্তেজনা বিরাজ করছে। আবারো যেকোন সময় উভয়পক্ষ রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষে জড়িত হওয়ার আশংকায় সাধারণ লোকজনের মধ্যে আতঙ্ক দেখা দিয়েছে।
এ ঘটনায় শনিবার উপজেলা বিএনপি সংবাদ সম্মেলন করে জানিয়েছেন উত্তর চরবংশী ইউনিয়ন বিএনপি ও এর অঙ্গ সংগঠনের সকল কমিটি স্থগিত ঘোষণা করে একটি তদন্ত কমিটি করা হয়েছে। আগামী তিন দিনের মধ্যে তদন্ত কমিটির প্রতিবেদন অনুযায়ী দোষীদের বিরুদ্ধে ব্যাবস্থা গ্রহণ করা হবে।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, বৃহস্পতিবার সকালে মেঘনার পাড়ের চান্দারখালের এলাকায় উপজেলা কৃষকদলের সদস্য সচিবের টেবিলের পাশের ব্যানার ছিড়ে ফেলেন খাসেরহাট এলাকার বিএনপির কর্মী ফারুক গাজি। এ নিয়ে শামিম গাজির নেতৃত্বে তার অনুসারীরা খাসেরহাট বাজারে ইউনিয়ন বিএনপির কার্যালয়ে ব্যাপক ভাংচুর চালায়।
এরপর ফারুক কবিরাজের নির্দেশে শামিম গাজীর অফিস ভাংচুর করা হয়। শুক্রবার সকালে বুল ও কবির হোসেনের নেতৃত্বে শামিমের শশুর শফিক রাঢ়ির বাড়িতে হামলা হয়। ওই সময় তারা শফিক রাঢ়িকে মারধর করে বাড়িঘর ভাংচুর, মিজানের বাড়ি ও দোকানে হামলা, দুটি মোটর সাইকেলে অগ্নি সংযোগ ও লুটপাট চালায়।
উপজেলা কৃষকদলের সদস্য সচিব শামিম গাজী বলেন, 'ফারুক কবিরাজের নির্দেশে আমাদের ওপর জঘন্য হামলা, ভাংচুর ও লুটপাট চালানো হয়েছে। তিনি ঢাকা থেকে এলাকায় এলেই নানা অঘটনের সৃষ্টি করেন।'
ইউনিয়ন বিএনপি নেতা ফারুক কবিরাজ বলেন, 'ব্যানার নিয়ে ঝামেলা হওয়ায় আমি মিমাংসা করে দেওয়ার আশ্বাস দেই। কিন্তু তারা না মেনে আমার নামে বাজারে অশালীন বক্তব্য দিয়ে মহড়া দিয়ে আমাদের অফিস ভাংচুর করা হয়। এরপর আমরাও তাদের উপর আক্রমন করি।'
রায়পুর থানার ওসি নিজাম উদ্দিন ভুঁইয়া বলেন, ঘটনাস্থলে সেনা সদস্যদের সঙ্গে পুলিশ পাঠিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনা হয়েছে। তদন্ত সাপেক্ষো এ বিষয়ে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এ ঘটনায় একজনকে আটক করা হয়েছে।