দেশে স্বৈরাচারী আওয়ামী শাসনের অবসান ঘটলেও গাজীপুর সিটি কর্পোরেশনে এখনো চলছে হিসাব রক্ষণ কর্মকর্তা আওয়ামী লীগ সরকারের দোসর এস.এম গোলাম কিবরিয়ার ফ্যাসিবাদী রাম রাজত্ব। প্রশ্ন উঠেছে, গাজীপুর সিটিতে গোলাম কিবরিয়ার রাজত্ব কবে হবে শেষ।

গাজীপুর সিটি কর্পোরেশনের ইতিহাসে দুর্নীতির এক স্থায়ী প্রতি ছবি হয়ে উঠেছেন এস.এম গোলাম কিবরিয়া। ভূয়া বিল-ভাওচার তৈরি করে তহবিল আত্মসাৎ ও ক্ষমতার অপব্যবহারসহ সহকর্মীদের নির্যাতনের মতো একাধিক অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে। দেশে আওয়ামী লীগ সরকারের পতন হলেও তিনি একই ধাচে চালাচ্ছেন তার কার্যক্রম। গাজীপুর সিটির দুইবারের ভারপ্রাপ্ত মেয়র আসাদুর রহমান কিরনের সঙ্গে যোগসাজশ করে তিনি কামিয়েছেন দেদার অর্থ।

সম্প্রতি কয়েকটি পত্রিকায় প্রতিবেদনে উঠে এসেছে কিবরিয়ার দুর্নীতির এসব চিত্র। তারপরেও তিনি রয়েছেন বহাল তবিয়তে। চালিয়ে যাচ্ছেন মোড়লিয়ানা।

গোলাম কিবরিয়ার বিরুদ্ধে নানা অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে ঢাকা বিভাগীয় কমিশনার শরফ উদ্দিন আহমেদ চৌধুরী সংবাদ মাধ্যমকে বলেন- অভিযোগ থাকলে আপনারা লিখিত দেন। তদন্ত করে অবশ্যই ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

তথ্যানুসন্ধানে জানা যায়, গাজীপুর পৌরসভার সহকারি হিসাব সংরক্ষণ কর্মকর্তা হিসেবে গোলাম কিবরিয়ার পথ চলা শুরু ১৯৯৯ সালে। ২০১৩ সালে গাজীপুর সিটি কর্পোরেশনের আনুষ্ঠানিক যাত্রা শুরু হলে, রাজনৈতিক প্রভাবকে কাজে লাগিয়ে তিনি হয়ে ওঠেন সিটির অঘোষিত একচ্ছত্র নিয়ন্ত্রক। পরবর্তীতে তার নিয়ন্ত্রণমূলক দাপট শুধু হিসাব রক্ষণ শাখায় সীমাবদ্ধ থাকেনি। গাজীপুর সিটির প্রতিটি শাখায় বিস্তৃত হয়েছে তার হস্তক্ষেপ।

অভিযোগ আছে, তিনি ৯৯৯টি ভূয়া ভাউচার তৈরি করে অর্থ আত্মসাৎ করেছেন। তার দুর্নীতি এতটাই তীব্র যে, কর্মকর্তাদের দাবি অনুযায়ী, তার ভূয়া বিলের যোগফল প্রায় অর্ধ কোটি টাকায় ঠেকেছে। ২০১৬ সালে দুর্নীতি দমন কমিশনের তদন্তে এসব অভিযোগ প্রমাণিত হয় এবং তার বিরুদ্ধে মামলা রুজু হয়।

আরও জানা যায়, গাজীপুর সিটি কর্পোরেশনের একাধিক কর্মকর্তার অভিযোগ, গোলাম কিবরিয়া তার ক্ষমতা অপব্যবহার করে অন্য কর্মকর্তাদের বদলি, বরখাস্ত ও চাকরিচু্যতির মতো গুরুতর পদক্ষেপ নিয়ে তাদের কে নিজ শাসনাধীন রাখতে চেষ্টা করেন।

এই ক্ষমতা চর্চার মধ্য দিয়ে তিনি সিটি কর্পোরেশনে আতঙ্কের পরিবেশ তৈরি করে রেখেছেন।